• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কথিত বন্দুকযুদ্ধে আসামি নিহত


যশোর প্রতিনিধি ডিসেম্বর ১, ২০১৬, ০৬:৪৪ পিএম
কথিত বন্দুকযুদ্ধে আসামি নিহত

যশোর : বেনাপোল বন্দরে কর্মরত অবস্থায় চোরচক্রের হামলায় গুরুতর আহত আনসার সদস্য ফিরোজ হাসান (২৫) বুধবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। আর ফিরোজের ওপর হামলায় নেতৃত্বদানকারী মনিরুজ্জামান রিপন (৩০) যশোরে নিহত হয়েছেন একই রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে।

পুলিশের দাবি যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকায় বুধবার মধ্যরাতে দু’দল সন্ত্রাসীর বন্দুকযুদ্ধে রিপন নিহত হয়েছেন। তবে রিপনের স্বজনদের দাবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বন্দুকযুদ্ধে নিহত রিপন হোসেন (৩০) আনসার সদস্যের উপর হামলা মামলার আসামি ও বেনাপোল এলাকার ছোটআঁচড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

আর রিপনের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের শিকার আনসার সদস্য ফিরোজ বেনাপোল বন্দরের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ ১৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বকশিপুর গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে।

বেনাপোল বন্দর থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানান, গত ২৬ অক্টোবর বেনাপোল বন্দরের শেড থেকে আমদানি পণ্য চুরির সময় খোকন ও তৌহিদুর নামে দু’জনকে চোরাইপণ্যসহ আটক করে পুলিশে দেয় ফিরোজ। এর ক’দিন পরেই ওই দু’জন জামিনে বের হয়ে আসে।

ওই আটকের জের ধরে বন্দরের পণ্য চোরচক্রের সদস্যরা গত ১৫ নভেম্বর রাতে বন্দরের ১৪ নম্বর শেডে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ফিরোজের ওপর হামলা চালায়। তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তার সহকর্মীরা উদ্ধার করে প্রথমে শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। একদিন পর যশোর থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বেনাপোল বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ফিরোজ হত্যা মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী রিপন হোসেন ‘দু’দল সন্ত্রাসীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এমন তথ্য জানিয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন জানান, যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাঁচবাড়িয়া স্কুলের সামনে দু’দল সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত-এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওসি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, এক রাউন্ড গুলি ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম আব্দুর রশিদ জানান, গুলিবিদ্ধ যুবককে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার মাথার ডানপাশে এক রাউন্ড গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে চিহ্নিত হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান নিহত রিপনের নাম পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত রিপনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন আইনে অন্তত ২১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে আনসার সদস্য ফিরোজ হত্যা মামলাও রয়েছে।

এদিকে, নিহতের চাচাতো ভাই কোরবান আলী ও মামা শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আনসার সদস্য ফিরোজের উপর হামলার ঘটনায় প্রথমে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। এ মামলায় রিপন বুধবার সকালে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এর পর পরই ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। অবশ্য পুলিশ এই তথ্য স্বীকার করেনি। পরে বৃহস্পতিবার  (১ ডিসেম্বর) সকালে যশোর হাসপাতালে এসে লাশ দেখতে পায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!