• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কমছে কৃষি জমি, বাড়ছে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকি


ফরহাদুজ্জামান ফারুক রংপুর মে ১৫, ২০১৭, ০৬:১৭ পিএম
কমছে কৃষি জমি, বাড়ছে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকি

কৃষি জমিতে ইটভাটা

রংপুর: কৃষি ও আবাদি জমিতে ঘরবাড়ি, প্লট, ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। এমনকি বাদ পড়ছে না খাল-বিল, পুকুর ও জলাশয়। এতে একদিকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় গ্রামীণ জনজীবনে আধুনিতার ছোঁয়া লাগছে। অন্যদিকে আশঙ্কাজনকহারে কমতে শুরু করেছে কৃষি জমির পরিমাণ। ফলে এই উপজেলায় খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা চরম হুমকির দিকে এগোচ্ছে।

সূত্র জানায়, গত ১০ বছরে পীরগঞ্জ উপজেলায় শুধু বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এসেছে। এছাড়া অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে কৃষি জমি, পুকুর, খাল-জলাশয় ভরাট করে বাড়িঘর, ইটভাটা, প্লট, শিল্প-কারখানাসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে অবাধে।

অথচ গ্রামাঞ্চলে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন নেয়ার কথা। ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

শুধু তাই নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমিতে অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। এ উপজেলায় ৭ বছর আগে মোট কৃষি আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার হেক্টর জমি। এখন তা কমে ২৮ হাজার হেক্টরে নেমেছে।

পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়ন দেখা গেছে, ভূমি দস্যুদের নিরব তাণ্ডব। ২৯ দশমিক ৮৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ ইউনিয়নে গত ছয় বছরে গড়ে উঠেছে ছোট বড় মোট ৬২টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। যার অধিকাংশই আবাদি ও কৃষি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে মাত্র ৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই রয়েছে ১০টি ইটভাটা। এ ছাড়া রাইদা অ্যান্ড রাবেয়া এগ্রো কমপ্লেক্স লিমিটেড ২‘শ একর, নারিশ পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি ৬০ একর, তামিম এগ্রো লিমিটেড ১৫ একর, কাজী ফার্ম ২০ একর কৃষি জমির ওপর শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে।

এভাবে অবাধে আবাদি জমিতে স্থাপনাসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সবুজ বলেন, গত ৫ বছরে আমার এ ইউনিয়নে মোট কৃষি জমির পরিমাণ যা ছিলো, তা এখন  অর্ধেকে নেমে এসেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সমীর কুমার ঘোষ জানান, পীরগঞ্জে যে হারে কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, তাতে আগামী প্রজন্মেও সময় আবাদি জমি থাকবে কিনা সন্দেহ। এতে খাদ্য নিরাপত্তা চরম হুমকির মধ্যে পড়বে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।

অ্যাডভোকেট মোস্তফা জামান দোলন বলেন, এ সংক্রান্ত আইন থাকলেও যথাযথভাবে প্রয়োগ নেই। তবে ‘নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন ২০১৭’ নামের আইনের খসড়া ইতিমধ্যে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইনে উল্লেখ করা হয়েছে- শুধু গ্রামেই নয়, উন্নয়নকাজে দেশের যেকোন জায়গায় ভূমি ব্যবহার করতে হলে সরকারি কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র লাগবে। আইন লঙ্ঘনকারীকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!