• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কমিটি নিয়ে বিএনপিতে দ্বিধাবিভক্তি, তৃণমূলে ক্ষোভ


দিনাজপুর প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৩, ২০১৭, ০৪:৪৭ পিএম
কমিটি নিয়ে বিএনপিতে দ্বিধাবিভক্তি, তৃণমূলে ক্ষোভ

দিনাজপুর: দিনাজপুরে চার মাস আগে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হলেও পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। এছাড়া আহ্বায়ক কমিটির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকায় বাগবিতন্ডা নিরসনে এবং কমিটিতে সদস্য বাড়ানোতেই বেশি সময় পার হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানায় নেতাকর্মীরা। এরফলে কমিটি নিয়ে দলের মধ্যে একদিকে যেমন দেখা দিয়েছে দ্বিধাবিভক্তি, পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ।

এদিকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করেন, কেন্দ্র থেকে জেলা কমিটি চাপিয়ে দিলে দলের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারন করতে পারে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, জেলা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য একটি নির্বাচিত কমিটি হোক। এরই মধ্যে অনেক নেতা তাদের নিজ নিজ পদের সমর্থনে তদবির-গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে পূর্নাঙ্গ জেলা কমিটি না থাকায় অনেক নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ে যান না বা দলীয় কর্মসুচীতেও অংশ নেন না। বর্তমানে বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলোয় মতবিরোধ তীব্রতর হয়ে উঠেছে। বিএনপি কার্যালয়েও আগের মতো নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা যায় না।

এছাড়া হামলা-মামলার জালে আটকে পড়া জেলা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে গেল বছরের আগস্টে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হলেও এখনো আশার আলো জ্বলে উঠেনি। অপরদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায় কমিটি গঠনের পর থেকে শুরু হয় গ্রুপিং-লবিং। নেতাকর্মীর চাপে কয়েক ধাপে শুধু আহ্বায়ক কমিটির পরিধি বাড়লেও দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যায়নি বলে জানায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ১২৯ সদস্যে-এ দাঁড়িয়েছে। আগামী কয়েকদিন পরে আহ্বায়ক কমিটিতে আরও সদস্য বাড়বে জানান  কয়েক নেতা। তবে পূর্বের মূল কমিটির সদস্যের চেয়ে আহ্বায়ক কমিটির আকার বড় হওয়াটা কামনা করেন না অনেক নেতাকর্মী। আবার অনেকে এই আহ্বায়ক কমিটিকে ছোট করতে বলছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নেতা জানান, এখনো জেলা বিএনপির ১৩টি উপজেলা ও ৯টি পৌর ইউনিটের একটিরও কমিটি এখনো গঠন হয়নি। তার আগে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে চলছে নানামুখী গ্রুপিং-লবিং।

এদিকে, তৃণমূল নেতাকর্মীরা চায়, ত্যাগী, যোগ্য ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব। তাদের মতে, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ত্যাগী নেতা নির্বাচন করা হলে দল সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

সাবেক যুবদল নেতা আমিনুল ইসলাম মুন্না জানান, বর্তমানে দলের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দলকে সুসংগঠিত করতে তৃণমুলের মতামতে সাহসী, নিষ্ঠাবান ও গ্রহণযোগ্য নেতা নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

এ অবস্থাতেও আগামী জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি পদে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছেন তারা হলেন, বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি এজেডএম রেজওয়ানুল হক, বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মিয়া, বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি মো. লুৎফর রহমান মিন্টু।

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম বেশি আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন, বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন, বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান উজ্জল, বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও তরুণ স্বেচ্ছাসেবক দলের দিনাজপুর শহর কমিটির আহ্বায়ক বখতিয়ার আহম্মেদ কচি প্রমুখ। আর সাংগঠনিক পদে আলোচিত হচ্ছে সাবেক যুবদল নেতা আমিনুল ইসলাম মুন্না প্রমুখ।

সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন জানান, জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেই বিএনপি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান উজ্জল জানায়, মতভেদ দূর করে দৃঢ়ঐক্য তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে চলমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একমাত্র সাহসী ও গ্রহযোগ্য নেতৃত্ব বিএনপিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারে।

দলের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান মিয়া জানান, আগামী ২৫ জানুয়ারি আহ্বায়ক কমিটির সভা আছে। সভায় বর্তমান ১২৯ কমিটির স্থলে ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে যোগ্যতার ভিত্তিতে আরও সদস্য সংযুক্ত করে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হবে। অনুমোদন হয়ে এলে বিভিন্ন উপজেলাসহ বিভিন্ন  কমিটি গঠন ও জেলা সম্মেলনের ব্যাপারে কাজ শুরু হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম 

Wordbridge School
Link copied!