• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলারোয়া উপ-নির্বাচনে ফ্যাক্টর বিএনপি-জামায়াত


এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা মার্চ ৫, ২০১৭, ১০:৩৪ এএম
কলারোয়া উপ-নির্বাচনে ফ্যাক্টর বিএনপি-জামায়াত

শেষ মুহূর্তে ভোটের ইমেজে টানটান উত্তেজনা আর নেতাদের পাল্টাপাল্টি আক্রমনাত্মক বক্তব্যে জমে উঠেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন। ৬ মার্চ সোমবার এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নানা হিসাব-নিকাষ, তোড়জোর আর বিরামহীন গণসংযোগ প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন দুই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদের এ উপ-নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দলটির জেলা শাখার ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত হোসেন। উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাজী আসাদুজ্জামান সাহাজাদা।

শেষ মুহূর্তের চুলচেরা হিসাব-নিকাষে দুই প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতার চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে উপজেলা আ.লীগের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি। অনেকে বলছেন, ‘মূলত: ভোট হবে স্বপন বনাম লাল্টুর মধ্যে’। কেননা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের আরাফাত হোসেন এবং উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পদত্যাগকারী সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কাজী সাহাজাদা প্রার্থী হয়েছেন। দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনই উঠেপড়ে লেগেছেন তাদের গ্রুপের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে। গণসংযোগ, পথসভা, শো-ডাউনসহ নির্বাচনী সকল প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে নেই দুই প্রার্থীই। সেখানে ‘এন্টি স্বপন’ ও ‘এন্টি লাল্টু’র বিষয়টিও অনেকের মুখে চলে আসছে। বিভিন্ন সূত্র ও বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের ভাষ্য থেকে এমনটা-ই উঠে এসেছে।

বিএনপি-জামায়াতের কোন প্রার্থী না থাকায় হিসাব-নিকেষটা ভেবে দেখতে হচ্ছে সূক্ষ্মভাবে। ফ্যাক্টর মূলত: তারাই। তারা ‘ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে’ বা ‘ভোট দিতে গেলে’ ভোটের ফলাফলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না। বিএনপি সমর্থকদের সিংহভাগ ভোট ও জামায়াতের প্রায় পুরো ভোট ‘নৌকা ব্যতীত’ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হয়তো লাভবান হবে উড়োজাহাজ প্রতীক। সেইসাথে যোগ হতে পারে আ.লীগের লাল্টু গ্রুপের ভোট। উপজেলার সাধারণ ভোটার ও নির্বাচন-রাজনীতি বিষয়ক সচেতন মহলরা এমনটাই মনে করছেন।

তবে আরাফাত হোসেন ব্যক্তিগত ইমেজে আ.লীগ ঘরানার ভোট ছাড়াও ভাসমান ভোট পেতে পারেন। এছাড়া পৌরসভা এলাকাসহ উপজেলার অন্যান্য এলাকার ‘কট্টরপন্থি নয়’ অর্থাৎ ‘উদার মানসিকতা’র বিএনপি-জামায়াতের অনেক ভোট পেতে পারেন তিনি। তবে জামায়াতের চেয়ে বিএনপি সমর্থকরদের ভোট এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এমনটা হলে আরাফাত হোসেন অনেকটা এগিয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভোটের হিসেব-নিকাষের সাথে যোগ হচ্ছে উপজেলা আ.লীগের দুই গ্রুপের কর্ণধারদের পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক বক্তব্য। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত পথসভাতে সরাসরি আক্রমণাত্মক ও বিষোদগারমূলক বক্তব্য রাখতে পিছু ছাড়েননি কতিপয় নেতৃবৃন্দ। তাদের বক্তব্যে ‘প্ররোচিত হয়ে’ কিংবা ‘অনুপ্রাণিত হয়ে’ ভোটের ক্যালকুলেশনও পাল্টে যেতে পারে।

নানা দিক থেকে টানটান উত্তেজনা, উৎকণ্ঠা আর আশঙ্কাও বিরাজ করছে অনেকের মনে। অনেক সাধারণ ভোটাররা ‘যেকোন ঝামেলা এড়াতে’ ‘গা বাচিঁয়ে’ চলছেন বলে উঠে এসেছে তাদের ভাষ্য থেকে।

এদিকে, পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের স্থানীয় বর্তমান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বিগত পরাজিত জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের পক্ষ-বিপক্ষের জনমতও ভোটের ক্যালকুলেশনে প্রভাব ফেলতে পারে। সেই মতধারায় দুই প্রার্থী সমানতালে এগিয়ে রয়েছেন। সবমিলিয়ে জমে উঠেছে এ নির্বাচন। তবে ভোটার ও ভোটগ্রহণের পাশাপাশি নির্বাচনের পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর অনেককিছু নির্ভর করছে।

এ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান- সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ ভোটগ্রহণে বদ্ধপরিকর নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। ১টি পৌরসভা ও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৬৭টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৮২ হাজার ২২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৯ হাজার ৭৯৬জন। আর মহিলা ভোটার ৯২ হাজার ৪৩৩জন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!