• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কশ্মিরে সৈন্য পাঠানোর কথা ভাবছে চীন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ১০, ২০১৭, ০৭:১৭ পিএম
কশ্মিরে সৈন্য পাঠানোর কথা ভাবছে চীন

ঢাকা: চীন, ভারত ও ভূটানের সীমান্ত পয়েন্ট দোকলাম এলাকায় গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চীন ও ভারতের সেনাবাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আছে। গত ৮ জুলাই থেকে ভারতের সৈন্যরা সীমান্ত এলাকায় স্থায়ীভাবে থাকতে তাঁবু গাড়তে শুরু করেছে। এরকম পরিস্থিতিতে বিতর্কিত এলাকা কাশ্মিরে প্রবেশ করতে পারে চীন বলে মতামত দিয়েছেন চীনের সরকার সমর্থক প্রভাবশালী এক বিশ্লেষক।

কাশ্মিরের দুটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ভারত ও পাকিস্তান। ১৯৬২ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময়ে চীনের দখলে চলে যায় কাশ্মিরের কিছু অংশ। চীনের কাছে থাকা অংশটুকু কাশ্মির নাম হারিয়ে চীনের প্রদেশে যুক্ত হয়েছে। সেই থেকে চীনকে এড়িয়ে চলে ভারত। সাধারণ সবাই জানে কাশ্মিরকে ভেঙে ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ করছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সংঘর্ষে এখন নিত্য ঘটনা। রাজ্যর নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বেশি ভারতীয় সেনা কাশ্মিরে মোতায়েন করা থাকে সব সময়। সর্বশেষ গত ৮ জুলাই স্বাধীন কাশ্মির আন্দোলনের নেতা বুরহানির প্রথম মৃত্যু বাষির্কির দিনেও ভারতীয় সেনার গুলিতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের উপ-রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে পাকিস্তান। 

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের নিরাপত্তা ও সামরিক চুক্তি রয়েছে। কোনো কারণে পাকিস্তান আক্রান্ত হলে বা বিশেষ প্রয়োজনে চীন তার সামরিক শক্তি কাজে লাগাতে পারবে মিত্রতা রক্ষার জন্য। সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। পাকিস্তানকে ভারত দেখে রাষ্ট্রীয় শত্রু হিসেবে। সিকিম সীমান্তে কোনো ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এরকম পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকেই ইঙ্গিত দেয়।

সার্বিক দিকে বিবেচনা ও সরকারের সমর্থক ওই চীনা বিশ্লেষক বলেছেন, ‘যে যুক্তি ব্যবহার করে ভুটানের হয়ে ভারতীয় বাহিনী সিকিম সেক্টরের দোকলাম এলাকায় চীনা সামরিক বাহিনীর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে, সেই ‘একই যুক্তি’ ব্যবহার করে পাকিস্তানের অনুরোধে ‘তৃতীয় কোনো দেশের’ সেনাবাহিনী কাশ্মীরে প্রবেশ করতে পারবে’। শুধু চীনেই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিও এ খবর প্রকাশ করেছে।

গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে চায়না ওয়েস্ট নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান স্টাডিজের পরিচালক লং চীনের প্রভাবশিংচুন বলেছেন, ‘যদি ভুটান তার এলাকা রক্ষার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেই থাকে, সেক্ষেত্রে তা তার স্বীকৃত সীমার জন্যই প্রযোজ্য হবে, বিরোধপূর্ণ কোনো এলাকার জন্য নয়। তা না হলে, ভারতীয় যুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকার যদি অনুরোধ করে, তাহলে তৃতীয় কোনো দেশের সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে মালিকানা নিয়ে চলা বিরোধপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে।’

এনডিটিভির প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দোকলামের ঘটনা নিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটিতে ভারতের সমালোচনা করে অনেকগুলো নিবন্ধ প্রকাশিত হলেও এই প্রথম কোনো নিবন্ধে পাকিস্তান ও কাশ্মীরকে টেনে আনা হলো। নিজের নিবন্ধে বিশ্লেষক শিংচুন আরো বলেছেন, ‘ভুটানকে সাহায্য করার নাম করে ভারতীয় সেনারা চীনের দোকলাম এলাকা দখল করে নিয়েছে, কিন্তু কার্যত ভুটানকে ব্যবহার করে ভারত নিজের প্রয়োজনেই এলাকাটির দখল নিয়েছে।’ দোকলামের ঘটনা নিয়ে ৩০ জুন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া এক বিবৃতির বরাত দিয়ে একথা বলেন শিংচুন। 

সিকিম সীমান্তের বিরোধপূর্ণ ওই এলাকাটির ভারতীয় নাম দোকা লা, আর ভুটান এলাকাটিকে বলে দোকলাম; অপরদিকে এলাকাটিকে নিজেদের দোংলাং অঞ্চলের অংশ বলে দাবি করে চীন।  জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত ভারত ও চীনের মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এরমধ্যে ২২০ কিলোমিটার সীমান্ত সিকিম এলাকায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!