• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁচের উপকরণ তৈরি করে স্বাবলম্বী শহিদুল


গাইবান্ধা প্রতিনিধি মার্চ ২৪, ২০১৭, ০৪:১৭ পিএম
কাঁচের উপকরণ তৈরি করে স্বাবলম্বী শহিদুল

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় কাঁচ দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খেলনাসহ ঘরের সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন উপকরণ। আর এসব উপকরণের বেশ চাহিদা থাকায় সেসব তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন গাইবান্ধার সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গোপালপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম।

শহিদুল ইসলামের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ফেরি করে শিশুদের খেলনা ও ঘরের সৌন্দর্যবর্ধক জিনিস বিক্রি করতেন শহিদুল ইসলাম। এসব সামগ্রী তৈরি করতে পুঁজি কম লাগে এবং বেশি লাভ হওয়ায় তিনি মন স্থির করেন নিজেই তৈরি করবেন এসব উপকরণ। তারপর ২০১২ সালের দিকে নিজেই বাড়িতে তৈরি করা শুরু করেন কাঁচের তৈরি উপকরণগুলো। আবার সেগুলো বিক্রিও করেন। এভাবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তার সহযোগী হিসেবে ৪-৫ জনকে কাজে নেন শহিদুল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিত্যক্ত টিউব লাইট কাঁচের তৈরি এসব উপকরণ তৈরির প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর এসব পরিত্যক্ত টিউব লাইট স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলো কুপির আগুনে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাপ দেয়া হয়। এরপর মুখের মাধ্যমে বাতাসে ফুলিয়ে কখনো লম্বা, কখনো ছোট আবার কখনোবা বাঁকা করে তৈরি করা হয়। ফুলদানি, হাঁস, পাখি, ফটো অ্যালবাম, ঘর, শহীদ মিনার ও অ্যাকুরিয়ামসহ আরও বিভিন্ন খেলনা ও ঘরের সৌন্দর্যবর্ধক জিনিস তৈরি করা হয়। আর এসব উপকরণের বেশ চাহিদা রয়েছে বাজারে।

প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩ হাজার টাকার কাঁচের সামগ্রী উৎপাদন করা হয়। পরে সেগুলো প্যাকেটজাত করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। এ কারখানা ও সংসার চালিয়ে ইতোমধ্যে তিনি জমি ক্রয় করে একটি বসতবাড়িও নির্মাণ করেছেন। তার সাথে সহযোগী কারিগর হিসেবে যারা কাজ করছেন তারাও আর্থিকভাবে সচ্ছলতা পেয়েছেন। কারিগর জোব্বার মিয়া ও ইয়াসিন মিয়া জানান, প্র্রতিদিন এসব সৌন্দর্যবর্ধক ও খেলনা সামগ্রী তৈরির কাজ করি। সেই আয় দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলছে।

শহিদুলের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাঁচের তৈরি খেলনা ও ঘরের সৌন্দর্যবর্ধক জিনিসপত্র তৈরি করছেন একই এলাকার আইয়ুব আলীও। আর এ কাজে তাকে সহযোগীতা করছেন তার ছেলে ও স্ত্রী। নিজ বাড়িতেই ফুলদানি, হাঁস, পাখি, ফটো অ্যালবাম, ঘর, শহীদ মিনার ও অ্যাকুরিয়ামসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করছেন। ফলে আগের থেকে এখন তার সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানকার তৈরি করা খেলনা ও ঘরের সৌন্দর্যবর্ধক জিনিসপত্রগুলোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

শহিদুল ইসলাম বলেন, পুঁজি কম থাকায় বড় কারখানায় রূপান্তর করতে পারছি না। তাই সরকার সহজ শর্তে ঋণ দিলে একদিকে যেমন কারখানা বড় হবে তেমনি এলাকার বেকার যুবকদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

গাইবান্ধা বিসিক শিল্প নগরীর সহকারি মহাব্যবস্থাপক এ কে এম মুশফিকুল ইসলাম বলেন, জেলায় এসব ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। শহিদুলের উৎপাদন করা কাঁচের তৈরি জিনিসপত্রের অনেক চাহিদা রয়েছে। তবে সহিদুল চাইলে তাদেরকে প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!