• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কাফনের কাপড় পরে আন্দোলন নিয়ে যা বললেন শাকিব


বিনোদন প্রতিবেদক জুন ১৯, ২০১৭, ০৩:০৭ পিএম
কাফনের কাপড় পরে আন্দোলন নিয়ে যা বললেন শাকিব

ঢাকা : যৌথপ্রযোজনার ছবি নিয়ে মুখোমুখি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং চলচ্চিত্রের ১৪ সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলা চলচ্চিত্র ঐক্যজোট। আর এই সমস্যাটি মূলত তৈরি হয়েছে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত আসছে ঈদে মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা আলোচিত ছবি ‘নবাব’ ও ‘বস ২’ নিয়ে। চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের দাবি, ভারতের সঙ্গে যে সিনেমাগুলো ইদানিং হচ্ছে, সেগুলো মোটেও যৌথ নীতিমালা মেনে তৈরি হচ্ছে না। তাই যৌথপ্রযোজনার নামে চলছে যৌথপ্রতারণা।

যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘শিকারি’ ছবির মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান এখন দুপার বাংলাতেই জনপ্রিয়। আসছে ঈদুল ফিতরে মুক্তি প্রতীক্ষিত চার ছবির তিনটিরই নায়ক তিনি। কিন্তু চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের নেতাকর্মীরা হঠাৎ করেই ‘বস টু’ ও ‘নবাব’ ঠেকাও আন্দোলনের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার এফডিসির সামনে বিক্ষোভ ধর্মঘট ও সেন্সর বোর্ড ঘেরাও করে। ওই দুই ছবির অনিয়ম নিয়ে তারা তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন। তবে অতীতে এসব আন্দোলনে শাকিব খানকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। দু’বছর আগে বিদেশি ছবি ঠেকাতে কাফনের কাপড় পরেও রাজপথে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তো তিনি নিজেই এসব ছবির নায়ক। তাই চলমান আন্দোলনে শাকিবই বেশি সালোচিত হচ্ছেন। 

বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন শাকিব খান নিজেই। রোববার বিকেলে চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট, প্রদর্শক সমিতি ও হল মালিকদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হয়, আগে কাফনের কাপড় পরে আন্দোলন করেছি, কিন্তু এখন করছি না কেন। সেই আন্দোলনটা কী নিয়ে ছিল তার সব রেকর্ড রয়েছে। সেখানে তো যৌথ প্রযোজনা নিয়ে কোনো কথা ছিল না। আমাদের জন্মের আগে থেকে যৌথ প্রযোজনার ছবি হচ্ছে। ‘দূরদেশ’, ‘অন্যায়’, ‘অবিচার’ এসবই তো যৌথ প্রযোজনার ছবি। আগে যৌথভাবে ছবি হলে এখন সমস্যা কোথায়? 

শাকিব খান বলেন, সবাইকে আরও একবার মনে করিয়ে দিতে চাই। আমি কাফনের কাপড় পরে আন্দোলন করেছি ঠিকই। সেই আন্দোলনের ব্যানারে স্পষ্ট করে লেখা ছিল, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় হিন্দি, উর্দু ছবি চলবে না’। আমাদের সেই আন্দোলন ছিল সরাসরি ভারতীয় ছবি আমদানি করে এদেশের প্রেক্ষাগৃহে যাতে প্রদর্শন না হয় তা নিয়ে। আজ রাজপথে নেমে যারা নৈরাজ্য তৈরি করছেন তাদের অনেকেই তো যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাহলে এখন সমস্যা কোথায়? আপনারা আন্দোলন না করে কাজে মনোযোগ দিন, তাতেই সবার ভালো। 

তিনি আরও বলেন, আমি যেসব যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছি তার অনেকগুলোতেই এদেশের শিল্পীদের নিয়েছি। প্রযোজককে বলেছি আমার দেশের শিল্পীদের ছবিতে কাস্ট করার জন্য। কিন্তু আমি তো আর সবাইকে কাজ দিতে পারবো না।

যৌথপ্রযোজনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে যারা আন্দোলন করছে, সে আন্দোলনকে ভিত্তিহীন দাবি করে শাকিব খান আরও বলেন, এই আন্দোলনের কোনো ভিত্তিই নেই। আমার কথা হচ্ছে, যদি যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথপ্রতারণা হয়, ঠিকাছে তাহলে আটকে রাখুন সিনেমা। যদি আইনের মধ্যে না পড়ে, তাইলে এক কথা। কিন্তু আপনি পায়ে পায়ে আইন ধরবেন যে, বাংলাদেশের মানুষ এভাবে তাকায় কিন্তু উনি এইভাবে কেনো ঘুরে তাকালো? এতোকিছু তো দেখলে হবে না। দেখতে হবে এটা অশ্লীল সিনেমা কি না? যৌথ প্রযোজনার এই সিনেমাগুলো তো আর অশ্লীল সিনেমা না। ‘নবাব’ কি এমন একটা সিনেমা যেটা সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়বে? আমি বলছি, নবাব হচ্ছে এমন একটা সিনেমা যা বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনকে ইন্টারন্যাশনালি হাইলি তুলে ধরা হয়েছে। সম্মানের সাথে প্রেজেন্ট করা হয়েছে। নবাব ইন্টারন্যাশনালিই চলবে এবং বাংলাদেশের প্রশাসনের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরবে। 

‘নবাব’ আটকে রাখা প্রসঙ্গে ছবির নায়ক বলেন, নবাব সম্পর্কে খোঁজ দিতে আমাকে যখন এখান থেকে ফোন করেছিলেন আজিজ সাহেব। তখন আমি ভেবেছি আমাকে হয়তো সেন্সর বোর্ড বা প্রিভিউ কমিটি ডেকেছে। কারণ ‘নবাব’ ছবির হিরো হিসেবে আমি ভেবেছি এই ছবি দেখে বাংলাদেশের সেন্সর বোর্ড বা প্রিভিউ কমিটি ‘আনকাট সেন্সর’ তো দেবেই, সেই সাথে এতো অসাধারণ একটা সিনেমার জন্য প্রশংসাপত্রও দিবে। হয়তো সেন্সর ছাড়পত্রসহ প্রশংসাপত্রটা আজিজ সাহেবকে দিয়েছেন, যা তিনি বাংলাদেশ থেকে আমাকে ফোনে বলতে চাইছেন! কিন্তু কিসের কোথায় ‘আনকাট সেন্সর’! প্রশংসাপত্র তো দূরের কথা, নবাবকে কীভাবে আটকানো যায় সেই চেষ্টায় সবাই ব্যস্ত হয়ে আছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আরেফিন শুভ, অমিত হাসান, চিত্রপরিচালক কাজী হায়াৎ, বিপাশা কবির, মিষ্টি জান্নান, জলি, নওশেদ খানসহ অনেকেই। আর সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন শাকিব খান। 

সোনালীনিউজ/ এসও

Wordbridge School
Link copied!