• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কি ঘটতে যাচ্ছে প্রধান বিচারপতির ভাগ্যে?


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২২, ২০১৭, ০৫:০৯ পিএম
কি ঘটতে যাচ্ছে প্রধান বিচারপতির ভাগ্যে?

ঢাকা: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের ইস্যুতে বিচার বিভাগ ও নির্বহী বিভাগ মারমুখী অবস্থান নিয়েছে। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির সাথে সমঝোতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু  রোববার আদালতে শুনানিকালে প্রধান বিচারপতির কিছু মন্তব্য সরকারকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

সোমবার (২১ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এক নয়। যে পাকিস্তানকে আমরা হারিয়েছি তার সাথে আমাকে তুলনা করা হয়েছে। সব সহ্য করতে পারি কিন্তু পাকিস্তানের সাথে তুলনা সহ্য করব না। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করা উচ্চ আদালতের কাজ নয়। সংসদ নিয়ে প্রধান বিচারপতি কথা বলতে পারেন না। ষোড়শ সংশোধনী বিষয়ে প্রধান বিচরপতির সরে যাওয়া উচিত ছিল। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে বহু অবাঞ্চিত কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে জাতি বিভ্রান্ত হতে পারে।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন আপনি দয়া করে পদত্যাগ করুন। দেশের জনগণ অনেক ধৈর্য ধরেছে। দেশের জনগণ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধৈর্য ধরবে না।

এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি  সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে পদত্যাগ করতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট বারের সামনে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়। 

আগামী ২৪ আগস্টের মধ্যে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে দেয়া পর্যবেক্ষণ ও রায় প্রত্যাহার করে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তা না হলে এক দফা আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এসময় পাকিস্তানের সাথে তুলনা দেয়ায় প্রধান বিচারপতি শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল রায় ও পর্যবেক্ষণে উঠে আসা আদালতের ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যগুলো প্রত্যাহারের জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করেছে সরকার। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সাথে বৈঠকও করেন সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু ওই বৈঠকে কোনো ধরনের সমঝোতা না হওয়ায় পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের দিকে মনোযোগ দেন তারা। 

এমন প্রেক্ষাপটে গত রোববার আদালতে শুনানিকালে ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে’ প্রধান বিচারপতির এমন মন্তব্য কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। 

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, নানামুখী চাপের মুখে প্রধান বিচারপতি নিজ অবস্থান বদলাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু রোববার (২০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির দেয়া বক্তব্যে উল্টো সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্য রায় ও পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারে কোনো ধরনের সংলাপ, সমঝোতার দিকে না গিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার দিকেই যেতে চান সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস প্রধান বিচারপতিকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। 

এ অবস্থায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। কি ঘটতে যাচ্ছে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার ভাগ্যে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেএ

Wordbridge School
Link copied!