কিশোরীকে ধর্ষণ করলো যুবলীগ নেতারা!

সিরাজগঞ্জ: জেলার তাড়াশ উপজেলার এক কিশোরী (১৬) গণধর্ষণ করেছে স্থানীয় দুই যুবলীগ নেতা। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহিষলুটি-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের বিদ্যাধর গ্রামের একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়।

বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মহিষলুটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহির ও আনিছকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষিত কিশোরী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রামের বাসিন্দা।

গ্রেপ্তার দুই যুবলীগ নেতা হলো- উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. মহির উদ্দিন ও একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ। এর মধ্যে মহির উদ্দিন সাকুয়াদিগি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে ও আনিছ একই এলাকার আবু তালেবের ছেলে।

এদিকে, ঘটনার দিন রাতেই স্থানীয়রা ভিকটিমকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে দিলেও ঘটনার সময় তার সঙ্গে থাকা ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে থানায় হেফাজতে থাকা অবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরী গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, তিনদিন আগে ছোট ভাইকে নিয়ে তাড়াশের মান্নান নগর এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে আসে সে। মঙ্গলবার বিকেলে দু’ভাইবোন চলনবিল দেখতে মহিষলুটি আসে তারা। পথে আনিসুর রহমান নামে তার দুলা ভাইয়ের এক বন্ধু কৌশলে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় তাদের তুলে নিয়ে বিদ্যাধর এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।

সন্ধ্যার পর পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে ছোট ভাইকে তারা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আনিসুর ও তার বন্ধু মহির মিলে আমাকে ধর্ষণ করে। এসময় আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন আসতে শুরু করলে ওই দুজন পালিয়ে যায়।

নওগাঁ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি কোরবান আলী জানান, খবর পেয়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে মহিষলুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মেয়েটিকে নিয়ে যায়। তবে তার ছোটকে আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি।

তাড়াশ থানার পরিদর্শক তদন্ত ফজলে আশিক জানান, ভিকটিমকে উদ্ধারের পর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। রাতেই নির্যাতিতা মেয়েটি বাদি হয়ে মহির ও আনিছের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। ধর্ষিতা কিশোরী ঘটনার সময় তার ছোট ভাই নিখোঁজ হয়েছে দাবি করলেও আমরা তাকে এখনো খুঁজে পাইনি। ভিকটিমকে বুধবার (২৩ আগস্ট) মেডিকেল পরীক্ষার জন্য তাকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।

নঁওগা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং মহিষলুটি হাটের টোল উত্তোলনকারী মহির উদ্দিন ও যুবলীগের ৬ নং ওয়ার্ডের সহ সভাপতি আনিস এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, তা আমি এখনো অবগত নই। ধর্ষণের বিষয়টি পরস্পর শুনেছি।

এদিকে, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, শিগগিরই দলের জরুরি সভা ডেকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মহির ও আনিছকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে। এজন্য ওই ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) সাচ্চু বিশ্বাস জানিয়েছেন, মেয়েটি তার বোন জামাইয়ের যে ঠিকানা দিয়েছে বুধবার সকালে সেই গ্রামে ঠিকানা মোতাবেক তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে বোন জামাইয়ের বিষয়ে নির্যাতিত কিশোরী ভুল তথ্য দিয়েছে।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর রহমান জানান, বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মহিষলুটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহির ও আনিছকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম