• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘কী করেছি, কী করতে চাই’


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৩, ২০১৮, ০৫:৪৯ পিএম
‘কী করেছি, কী করতে চাই’

ঢাকা: একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে দশম সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এর অংশ হিসেবে নব্বই পরবর্তী ভোটারদের কাছে দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সংবলিত একটি পুস্তিকা ইতোমধ্যে ছাপানো হয়েছে। নির্বাচনী এই পুস্তিকায় জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এই তিন দলের শাসনামলে দেশের উন্নয়নের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় সারা দেশের ভোটারদের মধ্যে বিলি করা হবে। এদিকে দলটির নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নেরও কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি’- স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী নির্বাচনে জনসমর্থন আদায়ে মাঠে নামছে জাতীয় পার্টি। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা বলেন, এইচএম এরশাদের নয় বছরের শাসনামলে উপজেলা ব্যবস্থার প্রবর্তন, রাস্তা-ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। তারপর প্রায় তিন দশক ক্ষমতার বাইরে রয়েছে জাতীয় পার্টি। এ কারণে নব্বই পরবর্তী ভোটারসহ নতুন প্রজর অধিকাংশের কাছে দলের এসব সাফল্যের তথ্য নেই। তাই তাদের কাছে ওই উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘কী করেছি, কী করতে চাই’- নামের ওই পুস্তিকায় এইচএম এরশাদের শাসনামলের উন্নয়নমূলক ৬০০ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সরকার গঠন করতে পারলে জাতীয় পার্টি কী করবে, তা তুলে ধরা আছে। এ ছাড়া নয় বছরের উন্নয়নচিত্র নিয়ে একাধিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের কাজ চলছে, যেগুলো নির্বাচনের সময় সারা দেশে দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। ‘জাতীয় পার্টির শাসনামলে কেমন ছিল বাংলাদেশ, এখন কেমন আছে বাংলাদেশ’- এই শিরোনামেও আরেকটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের কাজ চলছে। এতে নব্বই-পরবর্তী সরকারগুলোর শাসনামলের খুন-গুম-অপহরণ, দ্রব্যমূল্য, অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থাসহ উল্লেখযোগ্য নানা দিক তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া সাধারণ লোকদের জাতীয় পার্টিতে টানতে ইতোমধ্যে ‘কেন জাতীয় পার্টি করবেন?’ নামে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার লেখা বইটি সারা দেশে বিলি করাও শুরু হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জাতীয় পার্টি। এর মধ্যে ৩০টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে তাদের নিজ নিজ এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে জোটভিত্তিক নির্বাচন হলে ১০০ আসনও চেয়ে রেখেছেন জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদ। 

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি জানান, তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের কাজ চলছে। ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ জনগণের কল্যাণে যা যা করা প্রায়েজন সেসব বিষয় মাথায় রেখেই ইশতেহার প্রণয়নের কাজ চলছে। 

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য। তা হচ্ছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নেওয়া। সে লক্ষ্যেই নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরি করেছি। সে অনুযায়ী এগিয়ে চলছি।

দলের কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি শান্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের স্লোগান শান্তির জন্য পরিবর্তন- পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি। এই স্লোগান সামনে রেখেই সারা দেশে জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নয় বছরের শাসনামলের উন্নয়নের চিত্র মানুষের মাঝে তুলে ধরতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশবাসী পরিবর্তন চায়, হিংসা বা প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখতে চায় না। তারা উন্নয়ন ও সহনশীল রাষ্ট্র কামনা করে। এ জন্য এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়া বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনেই তার প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন এইচএম এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের। 

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!