• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুমারী পূজার প্রচলন যেভাবে


ফিচার ডেস্ক অক্টোবর ১১, ২০১৬, ০৬:৩৫ পিএম
কুমারী পূজার প্রচলন যেভাবে

সনাতন ধর্ম মতে, কুমারী পূজা হলো ষোলো বছরের কম বয়সী অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশে সুপ্রাচীন কাল থেকেই কুমারী পূজার প্রচলন চলে আসছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। 

বর্তমানে বাংলাদেশে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, সিলেট, হবিগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলা শহরে প্রতিষ্ঠিত রামকৃ্ষ্ণ মিশনে কুমারী পূজার প্রচলন রয়েছে।

প্রতিবছর দুর্গাপূজার মহাষ্টমী পূজার শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নবমী পূজার দিনও এ পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পুরাণ মতে, দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়।

যোগিনীতন্য, কুলার্ণবতন্য, দেবীপুরাণ, স্তোত্র, কবচ, সহস্রনাম, তন্যসার, প্রাণতোষিণী, পুরোহিতদর্পণ প্রভৃতি ধর্মীয় গ্রন্থে কুমারী পূজার পদ্ধতি এবং মাহাত্ম্য বিশদভাবে বর্ণিত হযে়ছে। বর্ণনানুসারে কুমারী পূজায় কোন জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। দেবীজ্ঞানে যে-কোন কুমারীই পূজনীয়, এমনকি বেশ্যাকুলজাত কুমারীও। 

তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যার পূজাই সর্বত্র প্রচলিত। এক্ষেত্রে এক থেকে ষোলো বছর বয়সী যে কোনো কুমারী মেযে়র পূজা করা যায়। বয়সের ক্রমানুসারে পূজাকালে এই সকল কুমারীদের বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।

এক বছরের কন্যা — সন্ধ্যা

দুই বছরের কন্যা — সরস্বতী

তিন বছরের কন্যা — ত্রিধামূর্তি

চার বছরের কন্যা — কালিকা

পাঁচ বছরের কন্যা — সুভগা

ছয় বছরের কন্যা — উমা

সাত বছরের কন্যা — মালিনী

আট বছরের কন্যা — কুষ্ঠিকা

নয় বছরের কন্যা — কালসন্দর্ভা

দশ বছরের কন্যা — অপরাজিতা

এগারো বছরের কন্যা — রূদ্রাণী

বারো বছরের কন্যা — ভৈরবী

তেরো বছরের কন্যা — মহালপ্তী

চৌদ্দ বছরের কন্যা — পীঠনায়িকা

পনেরো বছরের কন্যা — ক্ষেত্রজ্ঞা

ষোলো বছরের কন্যা — অন্নদা বা অম্বিকা

এ দিন নির্বাচিত কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। হাতে দেয়া হয় ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক ও পায়ে আলতা। ঠিক সময়ে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে পূজা করা হয়। চারদিক মুখরিত হয় শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তব-স্তুতিতে।

কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ত্ব সম্পর্কে উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যে ত্রিশক্তির বলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় ক্রিয়া সাধিত হচ্ছে, সেই ত্রিবিধ শক্তিই বীজাকারে কুমারীতে নিহিত। 

কুমারী প্রকৃতি বা নারী জাতির প্রতীক ও বীজাবস্থা। তাই কুমারী বা নারীতে দেবীভাব আরোপ করে তার সাধনা করা হয়। এ সাধনপদ্ধতিতে সাধকের নিকট বিশ্বজননী কুমারী নারীমূর্তির রূপ ধারণ করে; তাই তার নিকট নারী ভোগ্যা নয়, পূজ্যা।

বাংলাদেশে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে অষ্টমী পূজার পর কুমারী  পূজা অনুষ্ঠিত হয়।কুমারী বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপ চিন্তা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা। সূত্র : উইকিপিডিয়া

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!