• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেকেআর কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ সাকিব ভক্তরা


ক্রীড়া ডেস্ক এপ্রিল ১৬, ২০১৭, ০১:৫৪ পিএম
কেকেআর কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ সাকিব ভক্তরা

ঢাকা : শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ফিরে আসার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা নেই আপাতত। তবু শনিবার সকাল থেকে উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিকেলে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচ তো আসলে দুই বাংলাদেশি তারকার ব্যক্তিগত লড়াইও। অন্তত এ দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তো বটেই। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের আকর্ষণীয়, রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের সম্ভাবনা টসের সঙ্গে-সঙ্গেই শেষ। কলকাতা আর হায়দরাবাদের একাদশে বাংলাদেশের দুই তারকার কেউ নেই!

বাংলাদেশ দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ায় আইপিএলের শুরু থেকে কলকাতা সঙ্গে ছিলেন না সাকিব। ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ছিল শ্রীলঙ্কায়। সফর শেষে সাকিব আর দেশে ফেরেননি, পরদিনই তড়িঘড়ি যোগ দেন দলের সঙ্গে। তবে সেদিন, অর্থাৎ ৭ এপ্রিল কলকাতার ম্যাচ থাকলেও তার মাঠে নামার সম্ভাবনা তেমন ছিল না। হয়েছেও তা-ও, সাকিবকে ছাড়াই রাজকোটে গুজরাট লায়ন্সের মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা। কিন্তু এরপরের তিন ম্যাচেও বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার কেন উপেক্ষিত, তা সত্যিই রহস্যময়।

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ক্রিকেটার বাংলাদেশের তারকা সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন অপরিহার্য ক্রিকেটার। বল ও ব্যাট হাতে দলের বহু জয়ের নায়ক। আর এই নায়ককেই আইপিএলে একের পর এক মাঠের বাইরে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রাখছে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ।

এবারের আসরে অংশ নিতে শ্রীলংকা থেকে সরাসরি ভারত যান সাকিব। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলেছে গৌতম গম্ভীরের দল। সব ম্যাচেই দলের বাইরে রাখা হয় সাকিবকে। আইপিএলের নিয়মানুযায়ী, প্রত্যেক ফ্রাঞ্চাইজি চারজন বিদেশী খেলোয়াড় দলে রাখতে পারবে। কলকাতার প্রথম দুই ম্যাচে মাঠে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস লিনকে। তবে ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন লিন। তার বদলে একাদশে নিয়মিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার কলিন ডি গ্রান্ডহোম।

এদিকে টানা চার ম্যাচে (শনিবারের ম্যাচসহ) একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস, নিউজিল্যান্ড পেসার ট্রেন্ট বোল্ট ও ক্যারিবীয় স্পিনার সুনিল নারিন। পরপর দুই ম্যাচে নারিনকে ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রমাণ করতে ওপেনিংয়েও নামায় নাইট কর্তৃপক্ষ। তবে প্রথম ম্যাচে সফল হলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই গম্ভীরদের পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে গেছে। প্রথম ম্যাচে ৩৭ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ৬ রান।

৪ ম্যাচে ৩ ইনিংসে নারিনের রান সংখ্যা ৪৪। উইকেট পেয়েছেন মাত্র ২টি।

এবার আসা যাক ক্রিস ওকসের পরিসংখ্যানে। ওকস তিন ম্যাচে ১০ ওভার বল করে দিয়েছেন ৯৯ রান। উইকেট পেয়েছেন ৩টি। ট্রেন্ট বোল্টের অবস্থা আরও ভয়াবহ। তিন ম্যাচে ১১.৫ ওভারে ১২৭ রান দিয়ে উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১টি।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাফল্যেও সাকিবের অবদান অনস্বীকার্য। ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো আইপিএল জিতেছিল কলকাতা। সেবার আট ম্যাচে মাত্র ৬.৫০ ইকোনমি রেটে ১২ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। ব্যাট হাতে অবশ্য জ্বলে উঠতে পারেননি, সব মিলিয়ে ৯১ রান করেছিলেন। তবে দুই বছর পর কলকাতার শিরোপা জয়ে ব্যাটসম্যান-বোলার দুই ভূমিকাতেই ঔজ্জ্বল্য ছড়ান বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার। পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার। ১৩ ম্যাচে প্রায় ১৫০ স্ট্রাইক রেট ও ৩২.৪২ গড়ে ২২৭ রান করার পাশাপাশি ৬.৬৮ ইকোনমি রেটে তুলে নেন ১১ উইকেট।

কলকাতার বিদেশী কোটায় যারা খেলছেন তারা যে আহামরি পারফর্ম করছেন তা কিন্তু নয়। তবুও নাইটদের নজরে পড়ছেন না সাকিব। তাই তো একের পর এক সাইড বেঞ্চে বসে দর্শক হয়ে খেলা দেখতে হচ্ছে সাকিবকে।

দলের নাম কলকাতা হলেও মাত্র একজনই বাঙালি ক্রিকেটার রয়েছে দলে। সেই বাঙালি ক্রিকেটার সাকিবকেই ম্যাচের পর ম্যাচ একাদশের বাইরে রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে যার পরনাই ক্ষুব্ধ সাকিব ভক্তরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেকেই সাকিবকে দেশে ফিরে আসার অনুরোধও করেছেন।

জামশেদ আলী নামের একজন লেখেন, ‘সাকিবের উচিত দেশে ফিরে আসা। কারণ তাকে দলে না নেয়া মানে বাংলাদেশকে অপমান করা।’

মনিরুল মুন্না লেখেন, ‘ভাই সাকিব, আইপিএল তো বাংলাদেশে বসেই দেখতে পারতি।’

নাসির মিয়া নামের একজন লেখেন, যেখানে মাঠে খেলোয়াড়দের উঠতে দেয় হয় না, সেখানে খেলতে যাওয়া আর নিজেকে ছোট করা একই। বলতে গেলে তাকে অসম্মান করা, খেলার জন্য নিবে, আর ম্যাচে উঠাবে না, এটা খুবই অসম্মানের।

ফয়েজ উল্লাহ লেখেন, ‘সাকিব দেশে ফিরে আসুক।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!