• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশুতে স্বপ্ন দেখছেন খামারিরা


মেহেরপুর প্রতিনিধি আগস্ট ২১, ২০১৭, ০২:৫৩ পিএম
কোরবানির পশুতে স্বপ্ন দেখছেন খামারিরা

মেহেরপুর: পরম মমতায় সারা বছর গরু পালন করেন মেহেরপুরের খামারি ও প্রান্তিক চাষীরা। কৃষি পরিবারের একেকটি পশু যেন তাদের সন্তানের মতই। মায়া-মমতা আর স্নেহে বড় করে তোলা পশুটি নিয়ে নানা স্বপ্নের বীজ বুনেছেন মালিকরা। সন্তান যেমনি দুরে চলে গেলে কষ্ট হয়, তেমনি লালিত-পালিত পশুটিও বিক্রি করতে বুকের কোণে ব্যথা জন্মে। তারপরেও সংসারের স্বচ্ছলতার স্বপ্ন পূরণে বিক্রি করতে হবে অতি আদরের পশুটি। আর তাইতো কোরবানির পশু হাটে ভালো দাম পাওয়ার আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কোরবানি উপযুক্ত পশু মালিকরা।

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের হিসেবে মতে, এবারে মেহেরপুর জেলায় প্রায় এক লাখ গবাদি পশু কোরবানি উপযুক্ত। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ৩০ হাজারের উপরে। স্থানীয় গো-খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে স্বপ্নের গরুগুলো। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা। নিয়মিত গোসল, পরিমিত খাবার ও গরুর বাসস্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েই সময় পার করছেন গরু পালনকারীরা। ক্ষুদ্র খামারগুলোতে কাজের মধ্য দিয়ে অনেকের বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে। এসব খাবার কিংবা ক্ষুদ্র চাষীদের পালিত গরু স্থানীয় পশু হাটসহ ঢাকা এবং চট্রগ্রামের কোরবানির পশু হাটে বিক্রির জন্য তোলা হবে। বেশিরভাগ খামারি ও কৃষকরা ধার-দেনা করেই পশু পালন করেন। কোরবানির পশু হাটে ভাল দরে বিক্রি করতে পারলেই হবে স্বপ্ন পূরণ। ধার-দেনা পরিশোধ করেই নতুন বছরের জন্য আবারো পশু পালন শুরু হবে।

বেড়েছে গো-খাদ্যের দর। ভূষি, খুদ, চাউল, ভুট্টার দর প্রতিবছর বাড়ন্ত। তাই গবাদিপশু পালনে হিমশিম খাচ্ছেন চাষীরা। এতে পশু পালন খরব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবছরই গরুর ভালো দর পাওয়া নিয়ে শংকা কাটছে না। গাংনীর পূর্ব মালসাদহ গ্রামের ইনামুল হকের ৪-৮ লাখ টাকা পর্যন্ত। ছোট গুরুর চেয়ে বড় গরু মালিকদের ঝুঁকি বেশি বলে জানালেন ইনামুল হক। তিনি বলেন, দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ও বর্তমানে কত পশু রয়েছে তার সঠিক হিসেব নিয়ে গরমিল রয়েছে। দেশে যে পরিমাণ পশু পালন হয় তা কোরবানির জন্য যথেষ্ট। কিন্তু ভারত থেকে দেদারসে গরু আনার ফলে পথে বসে যাচ্ছেন দেশের গরু পালনকারীরা। ক্ষতিকর কোনো ওষুধ ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়। কিন্তু মোটা গরু নিয়ে অপপ্রচার থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারীরা।

একই আশংকার কথা জানালেন পূর্বমালসাদহ গ্রামের খামার মালিক মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে আশার আলো দেখিয়েছে গবাদিপশু পালন। বেকার সমস্যারও সমাধান হচ্ছে। খামার ঘিরে শ্রমিকদের কাজের সুযোগও হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন এ পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন। কিন্তু গত তিন বছর ভারতীয় গরু আনার কারণে খামারিদের লোকসান হয়েছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার এসএম শরিফুল ইসলাম বলেন, জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পশু যাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাই কোরবানির বাজারে সুস্থ-সবল পশু তোলার জন্য খামারি ও পশু পালনকারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!