• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্যান্টন ফেয়ারে প্রশংসিত ওয়ালটন পণ্য


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২০, ২০১৭, ০৪:০৬ পিএম
ক্যান্টন ফেয়ারে প্রশংসিত ওয়ালটন পণ্য

ঢাকা: ক্যান্টন ফেয়ারে বিশ্বক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে ওয়ালটন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতারা বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এছাড়া ওয়ালটনের কম্প্রেসার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ ক্রয়ের বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন উন্নত বিশ্বের ক্রেতারা।

চীনের গুয়াংজু শহরে চলছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় পণ্যমেলা হিসেবে পরিচিত ক্যান্টন ফেয়ার। ৫ দিনের মেলা শেষ হচ্ছে ১৯ এপ্রিল। মেলার ৬০ বছরের ইতিহাসে এবছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ।

ফেয়ারের আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের দৃষ্টিনন্দন মেগা প্যাভিলিয়ন। ফলে ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি কাড়ছে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য। প্রশংসিত হচ্ছে চীনসহ বিশ্বের দুশ’রও বেশি দেশের ক্রেতাদের কাছে। মিলছে রপ্তানি আদেশও।

জানা গেছে, ওয়ালটনের প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ গুণগতমান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রেতারা। বিশেষ করে পণ্যের নিখুঁত ফিনিশিং, সাশ্রয়ী মূল্য এবং ব্যতিক্রমী ডিজাইন তাদের মন কেড়েছে। লেবানন, ইন্দোনেশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কয়েকজন বড় বড় ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে ওয়ালটন পণ্য আমদানির প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনেকেই আবার বাংলাদেশে ওয়ালটন ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লেবাননের মোহাম্মদ এন্ড আলী মোবারক প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আলী মোবারক। মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে সাজানো রপ্তানি মানসম্পন্ন ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ দেখে মুগ্ধ হন। এরই মধ্যে ওয়ালটনের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমান নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ নেয়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করেছেন তিনি। আলী মোবারক জানান, ওয়ালটনের ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজগুলো লেবাননের আবহাওয়া উপযোগী। দামও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। ওয়ালটন ব্র্যান্ডের নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ লেবাননের বাজারে অতি অল্প সময়েই শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদী।

লেবানন ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার কয়েকজন ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্টিকারযুক্ত ওয়ালটন কারখানায় তৈরি কম্প্রেসার আমদানির ব্যাপারেও ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। কেউ কেউ আবার ওয়ালটন থেকে কম্প্রেসারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন। সবদিক বিবেচনায় এবারের ক্যান্টন ফেয়ারে আগত চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেতাদের মাঝে ওয়ালটন পণ্য ভালো সাড়া ফেলেছে বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।  
উল্লেখ্য, বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারার হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নিয়েছে ওয়ালটন। প্রদর্শিত হচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ফ্যান, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট,  ইন্ডাকশন কুকার, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারি, বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তিতে তৈরি কম্প্রেসর ও এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ সহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস।

ওয়ালটন সূত্রমতে, মেলা শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই প্রচুর সংখ্যক বিদেশি আমদানিকারক, ক্রেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা আসছেন ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। এদের মধ্যে মেলার উদ্বোধনী দিনেই চীনের বাণিজ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী ফ্যাং আইকিংসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ওয়ালটনের ব্যাপক প্রশংসা করেন। যেকোনো ধরনের উদ্ভাবনী পণ্যের জন্য চীনের বাজার সবসময় উম্মুক্ত রয়েছে, এ কথা জানিয়ে ওয়ালটনকে তিনি চীনের বাজার ও ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গবেষণা ও সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের পরামর্শ দেন।  

এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার ড. আলিম মার্কোস, সাইপ্রাসের ফাতরিন কাভাজ, নিউজিল্যান্ডের জেফ অ্যালেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রদীপ লাল জানই, জ্যামস টি পল, ড. তালাত হাফ্ফার ও আহমেদ, লেবাননের ফুয়াদ কোবেসি, ভিয়েতনামের ডিন, ফিনল্যান্ডের জার্নো ভাইনিয়ন পা, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেনিস উইলকিনসন, ইয়েমেনের মোহাম্মেদ, কানাডার র‌্যামি ফারেস, ইতালির ডেভিড পিগোজি, ভারতের সতীশ, ফিজির হ্যমফেরী চাংগ, ইউক্রেনের সার্জে বুলগাকোভ, ইরাকের আল রওশীদ, সুদানের আবদুল আজিজসহ আরো অনেকে। তারা নিজ নিজ দেশে ওয়ালটনের পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, ক্রেতারা প্রধানত দেখছেন কার পণ্যের মান কত ভালো, সেটা কত কম দামে কেনা যাচ্ছে। এই বিষয়টিই আশা জাগাচ্ছে ওয়ালটনকে। কারণ পণ্যের মাথাপিছু উৎপাদন মূল্যে অনেকটাই এগিয়ে আছে ওয়ালটন। মান নিয়েও ক্রেতারা সন্তুষ্ট।

ক্যান্টন ফেয়ারে বিদেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করতে ওয়ালটন ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- মেলার তিনটি গুরুত্বপূর্নস্থানে ওয়ালটনের জায়ান্ট বিলবোর্ড স্থাপন। বড় পর্দায় প্রদর্শিত হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য তৈরির উপর নির্মিত বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র এবং বিজ্ঞাপন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!