• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
জাবির শিক্ষক রাজনীতি

ক্লাস না পেয়ে প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা


জাবি প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮, ০৮:০৩ পিএম
ক্লাস না পেয়ে প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস-পরীক্ষা না পেয়ে প্রতিদিন বিভাগে এসে করিডোর থেকে ফিরে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ছুটির পর গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সব বিভাগে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা চললেও ভূগোল বিভাগে কোন ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।

জানা যায়, বিভাগীয় একাডেমিক মিটিং না ডাকার প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করছেন বিভাগের শিক্ষকরা। গত ২৬ জুলাই আদালতের নির্দেশে বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক মনজুরুল হাসান। কিন্তু তিনি বিভাগে আজ পর্যন্ত কোনো একাডেমিক মিটিং ডাকেননি এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করছেন না এই অভিযোগে বেশির ভাগ শিক্ষক কোনো ক্লাস পরীক্ষা নিচ্ছেন না। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগের মাস্টার্সের (৪২ ব্যাচ) লিখিত পরীক্ষা শেষ হলেও ঈদুল আযহার ছুটির পর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ব্যবহারিক পরীক্ষার এখনো কোন রুটিন দেয় নি পরীক্ষা কমিটি। একই সংকটে পড়ে কোনো ধরনের ক্লাস পায়নি সদ্য মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তবে গত চারদিনে  ৪৪ ব্যাচের (চতুর্থ বর্ষ) একটি  ক্লাস নিয়েছেন সভাপতিপন্থী বলে পরিচিত অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি একই সঙ্গে রিমোর্ট সেনসিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক। বিভাগের ৪৫ ব্যাচ (তৃতীয় বর্ষ) শিক্ষার্থীদেরও কোনো ক্লাস হয়নি।

শিক্ষকরা তাদের বলেছেন, ‘আমারে দাবি মেনে নেওয়া হলে আমরা আবার তোমাদের ক্লাস নেব।’  তবে কোনো শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ করে প্রতিবেদককে কিছু জানাতে রাজি হননি। এদিকে ৪৬ ব্যাচের (দ্বিতীয় বর্ষ) একটি মাত্র ক্লাস নিয়েছেন প্রেষণে বিশ্ববিদ্যালয়েল ট্রেজারার অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক। নাম প্রকাশ না করে প্রথম বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বিভাগে এসে ফিরে যাচ্ছি কিন্তু কোন ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে তাও বলতে পারছি না।’

আন্দোলনকারী একজন শিক্ষক বলেন, ‘বিভাগীয় সভাপতি কোনো ধরনের একাডেমিক মিটিং ডাকছেন না। সামনে ভর্তি পরীক্ষা আমরা একাডেমিক সিলেবাস ঠিক করতে হবে। নতুন কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটি শেষে বিভাগে যোগদান করেছেন তাদের কোর্স ডিস্ট্রিভিউশন হচ্ছে না। তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সহকর্মীসূলভ আচরণই করছেন না।’

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনজুরুল হাসান বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা জিম্মি করে এই ধরনের রাজনীতি অনভিপ্রেত ও অশোভনীয়। বরং এই ধরনের আন্দোলন কোর্টের নিদের্শের লঙ্ঘন।’ একাডেমিক মিটিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মাত্র সভাপতি হয়েছি। সব কিছু বুঝে নিয়ে যৌক্তিক সময়ে একাডেমিক মিটিং ডাকব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরূল আলম জানান, ‘ঘটনা আমি শুনেছি। আন্দোলনে যেন শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে আমি উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলতেছি।

উল্লেখ্য, একাডেমিক মিটিং না ডাকার প্রতিবাদে এই বর্জন কর্মসূচি হলেও মূলত বিভাগের সান্ধ্যাকালীন কোর্সের একটি ফাইলে সভাপতি অধ্যাপক মনজুরুল হাসান স্বাক্ষর না করায় চলমান সংকটের সূত্রপাত বলে জানা গেছে। অন্যদিকে শিক্ষকদের একটি বড় অংশের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক মনজুরুল হাসান বিভাগের দীর্ঘ ৬ বছর বিভাগের তিনি কোনো ক্লাস পাননি তাছাড়া তাঁর সভাপতি পদও আটকে ছিল।

পরে তিনি হাইকোর্টে রিট করে বিভাগের সভাপতির চেয়ারে বসেন। ফলে তিনি সভাপতি হওয়ার শিক্ষকদের সঙ্গে সহযোগীতাপূর্ণ আচরণ করছেন না এমন অভিযোগ করছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বের কারণে ভুগতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!