• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠক

খালেদা জিয়াকে দ্রুত রাজপথে নামার পরামর্শ


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৪, ২০১৭, ১০:৫৫ এএম
খালেদা জিয়াকে দ্রুত রাজপথে নামার পরামর্শ

ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জনসম্পৃক্ত ইস্যু নিয়ে রাজপথে নামার পরামর্শ দিয়েছেন কয়েকজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী। অফিস সময় এগিয়ে আনা, নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানোসহ দল গুছিয়ে দ্রুত জনগণের মাঝে যাওয়ার আহ্বানও জানান তারা। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের বলেন, জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে শিগগিরই রাজপথে নামার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দলের প্রতি একনিষ্ঠ পাঁচ বুদ্ধিজীবীকে ছয় মাস পর আবার ডাকলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তারা দলের কার্যক্রমে অনেকটা অবহেলিত ও নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ‘অভিমান’ করে দল থেকে দূরে থাকা এই পাঁচজনকে রাজধানীর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চা-চক্রে ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বললেন দলীয়প্রধান। আগের মান-অভিমান ভেঙে দলের ভালোমন্দের সহযোগী হিসেবে পরামর্শ বিনিময় অব্যাহত রাখার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

চা-চক্রে অংশ নেওয়া বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, আশা আছে, পথে বের হন। গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, রোববার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত ১০টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও লেখক মাহফুজ উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসূফ হায়দার। প্রায় একই সময় নিজের বাসভবন ফিরোজা থেকে এখানে এসে পৌঁছান খালেদা জিয়া।  ঘণ্টাব্যাপী আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।

তারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে বিএনপির করণীয় সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে তারা আলোচনা ও মতামত প্রদান করেন। বেগম জিয়াকে সাংগঠনিক তত্পরতা আরও বাড়াতে এবং ঢাকার বাইরে সফরে যেতে অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, আশাহত হওয়ার কিছু নেই। সুদিন ফিরবে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিযোগ, খালেদা জিয়ার মামলাসহ সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের বিষয়ে এক বুদ্ধিজীবী বলেন, তথ্য-প্রমাণসহ তার (প্রধানমন্ত্রীর) অভিযোগের জবাব দেয়া উচিত। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করা যায় কিনা সে ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভেবে দেখার পরামর্শ দেন।

এ সময় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের ব্যাপারে কিছু তথ্যপ্রমাণ তাদের দেখান। ’৯২ সালে ভারত সফরকালে পানি নিয়ে ওই দেশের সরকারের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে এর প্রমাণস্বরূপ সে সময় প্রকাশিত দুই দেশের যৌথ ইশতেহারের কপি তাদের কাছে দেন।

সূত্র জানায়, বিএনপির ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেন তারা। সংগঠন শক্তিশালী করতে দ্রুত পুনর্গঠন কাজ শেষ করার তাগিদ দেন। কথিত সংস্কারপন্থীদের দ্রুত ফিরিয়ে এনে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা প্রয়োজন বলেও মত দেন বিএনপি মনোভাবাপন্ন এ বুদ্ধিজীবীরা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিস সময় আরও এগিয়ে আনা, একজন মহিলা বিশেষ সহকারী নিয়োগ এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়ানো যায় কিনা সে ব্যাপারে ভেবে দেখার পরামর্শ দেন একজন বুদ্ধিজীবী। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন কিনা কৌশলে এমনটাও জানতে চান তারা। জবাবে খালেদা জিয়া তাদের জানিয়ে দেন, মামলা নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন।

এ সময় খালেদা জিয়া বলেন, দল গোছানোর কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। যারা নিষ্ক্রিয়, তাদের সক্রিয় করার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। সবকিছু গুছিয়ে দ্রুতই জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান খালেদা জিয়া।

জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মূলত সেখানে যাওয়া। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, চেয়ারপারসনের মামলাসহ সার্বিক বিষয় চলে আসে। আমরা দ্রুত তাকে জনগণের কাছে যাওয়ার কথা বলেছি। দ্রুতই বের হবেন বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ আমাদের দেখান। ভারত সফরকালে যৌথ ইশতেহার, শেখ হাসিনার আগে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, তথ্য-প্রমাণের পরও প্রধানমন্ত্রী কি করে এসব অভিযোগ করেন তা জানতে চান।

সবকিছু মিলে মানসিকভাবে খালেদা জিয়াকে বেশ ফুরফুরেই মনে হয়েছে বলে জানান জাফরুল্লাহ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!