• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২, ২০১৬, ০৪:৪৭ পিএম
খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাইরে রেখে দলটিকে নির্বাচনে নেয়ার চেষ্টা চলছে। শর্তে রাজী হলে আগামী নির্বাচনে ৬০/৭০ আসনে বিজয়ী হয়ে প্রধান বিরোধীদল হওয়ার সুযোগ পাবে বিএনপি।

বাতাসে ভেসে বেড়ানো এ গুঞ্জনটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ নেতারা বিষয়টিকে আগামীদিনের রাজনীতিতে বড় ধরনের ইস্যু হিসেবে দেখছেন।

পাশাপাশি একটি বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করছেন- তারেক রহমানের ব্যাপারে ছাড় দিলেও খালেদা জিয়ার ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না তারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন জন সদস্যসহ শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাদা আলাদা কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

মুদ্রা পাচার মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না- বিষয়টি মোটামুটি ধরে নিয়েই এগোচ্ছিল বিএনপি।

কিন্তু সম্প্রতি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে বিএনপি নেতারা জানতে পারেন, চলমান কয়েকটি মামলায় খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানবিহীন বিএনপিকে সংসদে বিরোধীদল হিসেবে রাখতে আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের।

সূত্রমতে, ক্ষমতাসীনদের এমন হিসাব-নিকাশ সামনে রেখে নিজেদের অংক মেলাতে বসেন বিএনপি নেতারা। দলের বেশিরভাগ নেতাই মনে করেন, তারেক রহমান বিএনপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারী- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু খালেদা জিয়ার জীবদ্দশায় বা খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের অনুপস্থিতি খুব একটা টের পাবে না বিএনপি।

তাছাড়া অতীতে তারেক রহমানকে ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকার গঠন ও বিরোধীদল হিসেবে সংসদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বিএনপি। সুতরাং আগামীতে তারেক রহমান ছাড়াই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া দলটির জন্য খুব একটা কঠিন হবে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনের একটিতেও অংশ নেননি তারেক রহমান। সে সময় বিএনপি হয় ক্ষমতায় এসেছে, নয়তো বিরোধী দলে গেছে। সুতরাং তারেক রহমানকে নির্বাচনের বাইরে রেখে বিএনপিকে বিপদে ফেলা যাবে না।

সূত্রমতে, তারেক রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়াকেও নির্বাচনের বাইরে রাখার ‘মাস্টারপ্ল্যান’ সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর বিএনপি নেতাদের এক কথা- কোনো অবস্থাতেই এ ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। কোনো মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে অথবা অন্য কোনো অজুহাতে তাকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করা হলে নির্বাচনেই অংশ নেবে না বিএনপি।

ফলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করার শর্তে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বিএনপি। তখন আওয়ামী লীগকে আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে হবে।

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ এ ভুল দ্বিতীয়বার করবে না। নিজেদের ভালোর জন্যই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিকে নির্বাচনে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে তারা। আর তা যদি না হয়, চড়া মূল্য দিতে হবে আওয়ামী লীগকেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ। বিএনপির একজন নেতাকেও পাওয়া যাবে না, যিনি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিলে, আমরা সবাই স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবো।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!