• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়ার জামিন আপিল বিভাগে বহাল


আদালত প্রতিবেদক মে ১৬, ২০১৮, ০৯:২২ এএম
খালেদা জিয়ার জামিন আপিল বিভাগে বহাল

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বুধবার (১৬ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

হাইকোর্টের দেয়া খালেদার জামিন বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ৩১ জুলাই মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ বসলে সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা করে আরো শুনানির আবেদন জানান।

তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আগের দিন প্রতিপক্ষের হইচইয়ের কারণে আমার শুনানি পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারিনি। আমাকে আরো শুনানির সুযোগ দেয়া হোক। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।   

অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনের সময় অ্যাটর্নি জেনারেল সেনা সমর্থিত তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলে মীর হেলাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মোহাম্মদ নাসিমের মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিষয়ে আপিল বিভাগের রায়ের বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক অংশ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এই চারটি মামলায় গুরুতর অসুস্থতা, জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা, আইন অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া এবং মেডিকেল বোর্ডের সনদের কারণ বিবেচনায় জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। মোহাম্মদ নাসিমের জীবন সঙ্কটাপন্ন ছিল। তার মাথার বাম পাশ পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। একপর্যায়ে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতেও ছিলেন। তখন মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে তার উন্নত চিকিৎসার কথা বলা হলে জামিন দেন হাইকোর্ট। তারা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। পরে তাদের জামিন আপিলেও বহাল ছিল, সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করেননি।

তিনি বলেন, এ মামলার বিষয়বস্তু অন্যান্য মামলার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। মামলার বিষয়বস্তু হলো বিদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে টাকা এসেছিল। সেই টাকা তুলে অন্য একটি এতিম তহবিলে হস্তান্তর করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের তহবিলের অর্থ ট্রাস্টে হস্তান্তরের অনুমোদন দেন। ফলে রাষ্ট্রের টাকা উধাও হয়ে যায়।  

এই বক্তব্যের পাল্টা জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল হয়তো ভুলে গেছেন মামলাগুলো জরুরি অবস্থার সময়ে করা। তখন হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন, আর তাতে আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ করেছেন এমন একটিও নজির নেই।

এ সময় তিনি ২০১৭ সালের আবদুল ওহাব ও ইসমত আরার মামলার নজির তুলে ধরে বলেন, এ মামলাগুলোতে একমাত্র দুদকই আপিল করেছে। সরকারকে আপিল করতে দেখা যায়নি।  উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আজ বুধবার রায়ের দিন ধার্য করেন।  গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করে ওইদিনই শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে দুদক ও সরকারপক্ষের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।  

গত ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে সরকার ও দুদককে লিভ টু আপিল করতে বলেন আপিল বিভাগ। ওইদিনই খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায়ের পর থেকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর নাজিমউদ্দীন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!