• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার আইনি নোটিশের ভবিষ্যৎ কী?


সোনালী বিশেষ ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭, ০২:৫৮ পিএম
খালেদার আইনি নোটিশের ভবিষ্যৎ কী?

ঢাকা : সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষোদগার করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।

সৌদি আরবে ব্যবসা-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিযোগের জের ধরে বিএনপি এখন অনেকটাই হার্ডলাইনে। গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা।

পরদিন অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট দাবি করে দ্রুত প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আইনি নোটিশও দেয় বিএনপি।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবে ব্যবসা থাকার অভিযোগের কোনো সত্যতা প্রমাণ করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। সৌদি আরবের যেসব পত্রিকার নাম বলা হয়েছে, সেগুলোরও কোনো অস্তিত্ব দেখাতে পারেননি।

এ কারণে খালেদা জিয়ার পরামর্শে বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে আইনি পথে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয় আইনি নোটিশ। তবে এই আইনি নোটিশের ভবিষ্যৎ কি তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।

এদিকে, বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, নোটিশে বেঁধে ত্রিশ দিন সময় শেষ হওয়ার অপেক্ষা করবে বিএনপি। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, এ নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা এখনো শুরু হয়নি।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান, সরকার গত কয়েক বছর ধরেই বিএনপিকে দুটি বিষয়ে নেতিবাচকভাবে প্রচার করছে। তা হচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতসহ মৌলবাদী দলগুলোর সম্পর্কের বিষয় তোলা, অন্যটি দলে দুর্নীতির চর্চা হয় বলে দেশে-বিদেশে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তোলার চেষ্টা।

এ ছাড়া সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের কোনো উদ্যোগকেই রাজনৈতিকভাবে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারেনি বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় দলের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবে অর্থ বিনিয়েগোর অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সরকার।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা মনে করি, অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট। এ কারণেই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি। মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, বিদেশি তথ্যগুলোর যে সূত্র দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

কোনো সূত্রই ঠিক নয়। সূত্রই যদি সঠিক না থাকে, তাহলে অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিকভাবে এর মোকাবেলা করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, রাজনৈতিকভাবে ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী এসব অভিযোগ করেছেন। দেশের বাইরে ম্যানুফেকচার করেই এখানে প্রচার করা হচ্ছে। অনলাইনের নাম বলা হয়েছে, আদৌ এমন কোনো বাস্তবতা নেই।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ শুধু বক্তব্য দিয়ে মোকাবেলা করা হলে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এ কারণে বিষয়টিকে আইনি পথে নেওয়া হয়েছে। এবং এক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে সরকারের এই অপচেষ্টাকে উন্মোচন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগটিকে গুরুত্ব না দিলে দলের অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়তো বলে মনে করেন দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা।

তাদের মতে, এখনই এই বিষয়টিতে হার্ডলাইনে না গেলে বিষয়টি সত্য হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত যেতে পারে। জনগণের মাঝে ভুল তথ্য প্রচারিত হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ৭ ডিসেম্বর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সৌদি আরবে যে বিশাল শপিংমল পাওয়া গেল, এটা তো আমরা বলিনি। এই খবর দেওয়ার কোনো আগ্রহ দেখলাম না। সম্পাদকরা বিনা পয়সায় শপিং করার কার্ড পেয়েছেন কিনা, সেই কারণে খবরটি চেপে গেছেন কিনা- এমন প্রশ্নও প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে তোলেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!