• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনার উন্নয়ন নিয়ে নতুন আশা


খুলনা প্রতিনিধি মে ২৩, ২০১৮, ০৩:১৩ পিএম
খুলনার উন্নয়ন নিয়ে নতুন  আশা

খুলনা : সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে উন্নয়নবঞ্চিত নগরবাসীর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। বিজয়ী মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর এই আশার মাত্রা আরো বেড়েছে।  ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তালুকদার আবদুল খালেক খুলনার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি গত শনিবার রাজধানী ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা খুলনাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, খুলনাকে অর্থনৈতিক জোনে পরিণত করা এবং তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই প্রতিশ্রুতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে নগরবাসী। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে খুলনার কাক্সিক্ষত উন্নয়নে ইতিবাচক দিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠন করলে উন্নয়নের গতি আরো বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণে সহায়তা করবে।  

সাংবাদিক শেখ আবু হাসান বলেন, খালেকের মেয়র হওয়া খুলনার সার্বিক উন্নয়নে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের গত ১০ বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে বলেন, তালুকদার খালেকের সময়ে শুরু হওয়া উন্নয়ন মনিরুজ্জামান মনির সময়ে এসে ঝিমিয়ে পড়ে। সরকারি দলের মেয়র না থাকায় কাক্সিক্ষত সেবা বা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয় নগরবাসী।  

২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন তালুকদার আবদুল খালেক। তার সময়ে ৯৭৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। যা তার মেয়াদকালে পুরোটা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কিছু কাজ চলমান থাকে। বর্তমান মেয়র মনি ওইসব প্রকল্পের কিছু শেষ করেন। বাকিটা এখনো চলমান। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত মেয়র মনি মাত্র ১১৩ কোটি টাকার কাজ অনুমোদন করেছেন। যার একটি শেষ করেছেন, বাকি তিনটি চলমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালুকদার আবদুল খালেকের সময়ে (২০০৮-২০১৩) এডিপি থেকে বরাদ্দ আসে ৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার। মেয়র মনিরুজ্জামান মনির সময়ে (২০১৩-২০১৮ সালের মার্চ মাস) মাত্র ৫৩ কোটি টাকার কাজ বরাদ্দ হয়। যা আগের তুলনায় ২৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা কম। তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র থাকাকালীন ৪৩৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার সরকারি ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন করাতে সক্ষম হন। কিন্তু মেয়র মনি তার সময়ে একটিও সরকারি প্রকল্প অনুমোদন করাতে পারেননি। বিদেশি ব্যাংক ও দাতা সংস্থার কাছ থেকে তালুকদার আবদুল খালেক দায়িত্ব পালনকালে ৪৬৫ কোটি টাকার চারটি প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়ার পর বাস্তবায়ন কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু মেয়র মনি তার সময়ে মাত্র ৫০ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্পের অনুদান আনতে সক্ষম হন।  

তালুকদার আবদুল খালেকের সময়ে সরকারি অর্থায়নে ১২টি প্রকল্পের মধ্যে ছিল শহরের ভৌত অবকাঠামো, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ কাজে ৪৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের সুবিধাদি, অবকাঠামোগত মেরামত ও পুনর্বাসনে ছিল ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও মেরামত বাবদ ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ৭০ কিলোমিটার ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুতে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। শলুয়া বাজার ও ডুমুরিয়ায় স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল্ড নির্মাণে ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। নগর ভবন, জোনাল অফিস সম্প্রসারণ, ওয়ার্ড অফিস ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ বাবদ ১২ কোটি ১ লাখ টাকা। শহরের সড়ক বাতি (এলইডি বাল্ব) প্রতিস্থাপনে ৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। রাস্তা, ফুটপাথ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে ৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই ৮টি প্রকল্প দায়িত্ব পালনকালেই খালেক বাস্তবায়ন করেছেন। বাকি ৪টি প্রকল্প চলমান ছিল।

সেগুলো হচ্ছে- লিনিয়ার পার্ক নির্মাণে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, শহীদ হাদিস পার্ক ও তৎসংলগ্ন পুকুর সংস্কার ও উন্নয়নে ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট যানবাহন, যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট বাবদ ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। শহরের রাস্তা ও অবকাঠামো সুবিধা উন্নয়ন বাবদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ১৯৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। মেয়র মনি সরকারি বরাদ্দের কোনো প্রকল্প অনুমোদন করাতে সক্ষম হননি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!