• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুরুষের চেয়ে নারীর অবদান বেশি’


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ২৭, ২০১৬, ০৫:২৭ পিএম
‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুরুষের চেয়ে নারীর অবদান বেশি’

দেশের ১ কোটি ২০ লাখ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী। তারা কৃষিকাজ, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষসহ কৃষিসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত। আর তাই গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুরুষের চেয়ে নারীর অবদান বেশি। 

২০০৫-০৬ এর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, গ্রামীণ অর্থনতিতে নারীর অবদান ৫৩ শতাংশ; আর পুরুষের অবদান ৪৭ শতাংশ। তবু রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি নেই নারী কৃষকদের।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও নারী মৈত্রী যৌথ উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

‘কৃষিতে নারীর অবদানের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান, ভূমিতে নারীর সমঅধিকার এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৫-০৬ এর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ২০ লাখ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী; কৃষিকাজ, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষিসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত তারা।

এতে আরও জানানো হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বাড়তি শ্রমশক্তি যুক্ত হয়েছে। 

এর প্রায় ৫০ লাখই নারী শ্রমিক। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে ১ কোটি ৩৯ লাখ কৃষকের মাঝে কার্ড বিতরণ করা হলেও নারী কৃষকদের ভাগ্যে তা জোটেনি।

বিএনপিএস-এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষিতে নারীর অবদানকে অবৈতনিক পারিবারিক শ্রম হিসেবে গণ্য করা হয়। যদিও নারীরা খামার ও পরিবারের উৎপাদনের জন্য দ্বিমুখী চাপ সহ্য করেন।

বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহিন আকতার। 

এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ফেলো ড.এম. আসাদুজ্জামান, বিআইডিএসের সাবেক জ্যেষ্ঠ (গবেষণা) ফেলো ড. প্রতিমা পাল-মজুমদার, অক্সফামের জ্যেষ্ঠ নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা মেহবুবা ইয়াসমীন।

ড.এম. আসাদুজ্জামান বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর অবদান ৫৩ শতাংশ। এর বিপরীতে পুরুষের অবদান ৪৭ শতাংশ। এরপরও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন নেই। 

কৃষি উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত বিভিন্ন কাজের ৬৮ শতাংশ নারী শ্রমশক্তি জড়িত হলেও নারী কৃষিশ্রমিকের প্রতি মজুরিবৈষম্য এখনও অব্যাহত। ভূমিতেও নারীর সমঅধিকার নেই। বাজারে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রেও নারীদের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।

রোকেয়া কবীর বলেন, বিদ্যমান সমাজকাঠামো, প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কৃষিতে নারীর অবদানকে অবহেলা করার সাধারণ প্রবণতা থেকেই কৃষিতে নারীর অবদান স্বীকৃতি পাচ্ছে না।

নারী কৃষকদের স্বীকৃতিসহ তাদের রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা ব্যবস্থার আওতায় আনা; পারিবারিক কৃষি কার্ড প্রবর্তন; সর্বজনীন উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন; প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করাসহ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা নারীর কাছে পৌঁছে দেয়া; বাজারে নারীর প্রবেশগম্যতা বাড়াতে বাজারের নির্দিষ্ট স্থান আলাদাভাবে নারী কৃষকদের জন্য সংরক্ষিত রাখার দাবি জানানো হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!