• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চলচ্চিত্রকে ‘বিদায়’ অমিতাভ রেজার!


ফেসবুক থেকে ডেস্ক অক্টোবর ২৫, ২০১৬, ০৫:২০ পিএম
চলচ্চিত্রকে ‘বিদায়’ অমিতাভ রেজার!

এই মুহুর্তে দেশের বিনোদন জগতের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ‘আয়নাবাজি’। দেশসেরা বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র এটি।  

‘আয়নাবাজি’ নিয়ে প্রচুর আলোচনা চারদিকে। আছে সমালোচনাও। এ অবস্থায় এসব অভিযোগ আর সমালোচনার জবাবে নিজ ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দিয়েছেন নির্মাতা।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সেই পোস্টে চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা ‘আপাতত’ চলচ্চিত্রকে বিদায় জানিয়েছেন।

অমিতাভ রেজার এই ঘোষণায় ফেসবুকে তোলপাড় চলছে। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য পড়ছে প্রতিক্ষণে।

তার সেই ফেসবুক পোস্টটি সোনালীনিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো....

‘আজ আপনাদের সামনে খুব ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। ‘আয়নাবাজি’ আমার আর আমার প্রযোজকের প্রথম সিনেমা। সুতরাং সকল ভুল ত্রুটি সীমাবদ্ধতাসহ আমি গত চার বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে সিনেমাটা বানিয়েছি, যার এক বিন্দু ছাড় দেই নাই কোনো কিছুতে। 

সিনেমা একটা collaborative art. আমি একা কিছুই করতে পারতাম না। অনেক মানুষের পরিশ্রম এখানে আছে। এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে যখন আমার উপর ভরসা করে কেউ লগ্নি করেছে।

সিনেমা মুক্তির আগে ‘আয়নাবাজি’ কেউ স্পনসর করতে এগিয়ে আসে নাই। আমার আপত্তি ছিল কোনো নিবেদিত ‘আয়নাবাজি’ হতে দিবে না। মাত্র ২০ হলে আমাদের সিনেমা নিয়েছিল, যা আয়নাবাজির লগ্নি আসার অসম্ভব কিছু। 

তারপর ভরসা করে আমরা মুক্তি দেই। কোনো প্রিমিয়ার শো ছাড়া সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছে। টিকেট কেটে সিনেমা দেখাই ছিল আমার ক্যম্পেইনের উদ্দেশ্য। আমি, চঞ্চল ভাইসহ সবাই টিকেট কেটে সিনেমা দেখেছি।

আমাদের ডিজিটাল পার্টনার হলো শুধু রবি। রবি কাছে সিনেমার রাইট বেঁচার প্রশ্নই আসে না। শুধু রবি টিভিতে অর্থাৎ মোবাইল ডিভাইস ছাড়া এটা আর কোথাও দেখা যাবে না। তাও তিনদিনের জন্য, কেউ সাবস্ক্রাইব করলে আমরা revenue share পাবো আর কিছু না।

Netflix বা vod platform Er moto ETA ekta test for future vod platform. শর্ত ছিল আমাদের full piracy protection থাকবে। যা আমাদের new filmmaker-এর জন্য জরুরী। কিন্তু বাংলাদেশের সাইবার ক্রিমিনালরা অনেক মেধাবী। tin ta leak file matro ছড়িয়ে দিল।

ভুল সিদ্ধান্ত অবশ্যই ছিল আমাদের, কিন্তু গত দুই দিন যাবত ‘লোভী’, ‘প্রতারক’ বলে আমাদের মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন যখন তখন খবর পাই Seattle sound Asian film festival e আয়নাবাজি best narrative film Er award পেয়েছে। এটাই আয়নাবাজি প্রথম পুরস্কার কিন্তু আমি পুরষ্কার পেয়েছি, এ দেশের মানুষের কাছে যখন ২০ হল থেকে ৭৪টা হলে নিয়েছেন।

আমাদের ভুলের কারণে কষ্ট পেলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। যে যত গুজব ছড়াক আমি বলছি, আয়নাবাজির একমাত্র পাওয়া আপনাদের ভালবাসা আর কিছুই আমি পাবো না। সবাই ভাল থাকুন। বাংলা সিনেমা দেখুন। যদি আপনাদের আর সহযোগিতা কোনদিন পাই সেই দিন পরের সিনেমার ঘোষণা দিব। তার আগ পর্যন্ত আমি বিদায় নিচ্ছি আপনাদের কাছ থেকে...... love’

অমিতাভ রেজার মর্মস্পর্শী এই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করছেন দেশের নাট্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত কলা-কুশলীরা।

নির্মাতা আশফাক নিপুণ লিখেছেন, ‘কিসের বিদায়? পাগল নাকি? এই টাকার লোভী অপবাদ তো দেখি ‘তোমার মেয়ে এই রকম কাপড় পরছে এখন পোলাপাইন তো গায়ে হাত দিবই’ টাইপ কথাবার্তা। এই সবে ভারাক্রান্ত হওয়ার সময় নাই ভাই। আমরা এমন এক যুগে জন্মাইছি যেখানে সিনেমা হলে যাওয়ার রাস্তাটা পাকা করতে করতে এক জীবন চলে যাবে। সেখানে রাস্তায় গাছ নাই কেন? নালা ছিল খেয়াল করবেন না? টাইপ উদ্ভট তর্কে থেমে গেলে চলবে না। যে কোনও ভুলই নতুন শিক্ষা। আজকে এই ভুল আয়নাবাজির উপর দিয়ে গেছে, না হলে অন্য কারো উপর দিয়ে যাইত। তাই বলে থেমে থাকা যাবে না ‘

অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা লিখেছেন, ‘কে না কে কি বলল সেটাতে দুঃখে জর্জরিত...আর এতোগুলা মানুষের ভালোবাসা সেটা??? সমালোচনা খুব ভালো....কিন্তু নুইসেনসে নিবো কেন। রকেট সায়েনটিস্ট হওয়া লাগে না এটা বুঝার জন্য যে, আয়নাবাজি নিয়ে লিগেলি নানা রকম money making endeavours-এ যাওয়া যায়... তুমি এশা ইউসুফ তো করোনি... তোমার মনে হয় হাতে অনেক ফ্রি টাইম...আলতু ফালতু কথার উত্তর দিচ্ছো, রিঅ্যাক্ট করছো.....Btw, Congratulations on your award :) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম...তাই বেঁচে গেলে...lol. Take care..you and your entire team.

মানস চৌধুরী লিখেছেন, ‘অমিতাভ, বাংলাদেশে কোনো কালচারাল প্রডাক্ট থেকে লগ্নি তুলতে পারার কোনো সিধা ও সৎ রাস্তা দুর্লভ। সেটা সম্পূর্ণ আরেক প্রসঙ্গ। কিন্তু আপনি ও আপনারা একটা দুর্দান্ত কাজ করেছেন। সকল অর্থে। দুর্দান্ত কাজ করার পর ক্লান্তি থাকতে পারে, খানিকটা অবসাদও হয়তো; কিন্তু ওই দৃঢ়তার ভঙ্গিটাতে থাকুন। উটকা কথায় বিষন্ন হয়েন না।’

সাঈদ জুবেরী নামে একজন লিখেছেন, ‘ভুল বুঝবেন না প্লিজ। আপনার এই পোস্ট পড়ে বুঝলাম "রবি"র ভুলে বা গাফিলতিতে আয়নাবাজি পাইরেসি হইসে। অকে, যদি এই পর্যন্ত ঠিক থাকে তো- আপনার রবিকে চাদমারি করা উচিত। আপনার সিনেমা বাঁচাইতে কেন পাবলিকের উপর মোরাল চাপ তৈরি করা!!! পাবলিক ফ্রীতে শুইয়া বইসা দেখবো। আর পাবলিক দেখলেই তো আপনার ভালো লাগার কথা। অন্যদিকে স্পন্সরেরও প্রচার...। রবি, আয়নাবাজির পাইরেসির ক্ষতিপুরণ দিক আর হল মালিক ও তাগো সিন্ডিকেট গোয়া মারা খাক।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!