• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চলে গেলেন তিন শতাব্দী দেখা এমা মোরানো


আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ১৬, ২০১৭, ০১:১৭ পিএম
চলে গেলেন তিন শতাব্দী দেখা এমা মোরানো

ঢাকা : বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি এমা মোরানো মারা গেছেন। শনিবার (১৫ এপ্রিল) ইতালির উত্তরাঞ্চলের শহর ভারবানিয়ার নিজ বাসায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষটি ১১৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান। খবর বিবিসির।

এম্মা মোরানো ১৮৯৯ সালের ২৯ নভেম্বর ইতালির পিয়েডমন্ট অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনিই ছিলেন ১৮শ’ শতাব্দীর সর্বশেষ মানুষ। এমা তিনটি শতাব্দীর পরিবর্তন নিজ চোখে দেখে গেছেন। গত বছরের ২৯ নভেম্বর এমা ঘটা করে নিজের ১১৭তম জন্মদিন পালন করেন। ওই অনুষ্ঠানে নিজের দীর্ঘায়ু লাভে দিনে তিনটি করে ডিম খেতেন বলে জানান।

এর মধ্যে এক সঙ্গে সকালে দুটি কাঁচা ডিম খেতেন। রাতে মুরগীর মাংস খেতেন। এছাড়া আর তেমন কিছু খেতেন না মোরানো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অ্যানিমিয়া ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়েট থেকে একটি ডিম কমিয়ে দেন এমা। এই ডায়েটই তিনি ৯০ বছর অব্যাহ রাখেন। সঙ্গে কিছু ফলমূল, সবজি ও বিস্কিট খাওয়া শুরু করেন। এমারা আট ভাই-বোন ছিলেন। তার আগেই সবার মৃত্যু হয়েছে। নিজের একমাত্র সন্তানও মারা গেছেন।

এমা দুটি বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন। এছাড়া তিনি ইতালির ৯০টি সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছেন। অবশ্য এমা উত্তরাধিকার সূত্রে দীর্ঘায়ু পেয়েছেন। তার মা ৯১ বছর বয়সে মারা যান। আর তার বোনেরাও সবাই শত বছরের কাছাকাছি পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।

এমা মোরানো তার এই দীর্ঘায়ুর পেছনে জীবনের একটি সিদ্ধান্তকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন। ১৯৩৮ সালে বিয়ের পর তাদের ছেলে সন্তান হয়। ছয় মাস বয়সী সন্তান মারা যাবার পর স্বামীর সঙ্গে এক বছরের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে তিনি একাই ছিলেন।

এমার ভাষ্যে, তার এই দাম্পত্য জীবন সুখকর ছিল না। কারণ তিনি একটি ছেলেকে ভালোবাসতেন, যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মারা যায়। এরপর থেকে বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন তিনি।

১১২ বছর বয়সে লা স্ট্যাম্পা পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমা মোরানো বিয়ের বিষয়ে বলেন, অনেকটা বাধ্য হয়ে স্বামীকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কারণ তার স্বামী তাকে বিয়ের আগে বলেছিলেন- ‘আমাকে বিয়ে না করলে তোমাকে মেরে ফেলব।’ ২৬ বছর বয়সে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৩৮ সালে তার স্বামী তাকে ছেড়ে গেলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়াছাড়ি হয়নি। তার স্বামী মারা যান ১৯৭৮ সালে।

এমা মোরানো ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন নিজের শহরের এক কারখানায়। পরে বোর্ডিং স্কুলে রাঁধুনির কাজ নেন এবং সেখানেই ৭৫ বছর বয়সে অবসরে যান। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কেউ আমার ওপর ছড়ি ঘোরাক, তা আমি কখনও মেনে নিতে চাইনি।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জেরন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, এমা মোরানোর মৃত্যুর পর জ্যামাইকার ভায়োলেট ব্রাউন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষ। তার জন্ম হয়েছিল ১৯০০ সালের ১০ মার্চ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!