• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরির বয়স ৩৫ করার দাবিতে ফের রাজপথে প্রার্থীরা


রাজশাহী প্রতিনিধি নভেম্বর ২৬, ২০১৬, ০৬:৩৫ পিএম
চাকরির বয়স ৩৫ করার দাবিতে  ফের রাজপথে প্রার্থীরা

রাজশাহী: চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবিতে আন্দোলন করছে সাধারণ ছাত্র পরিষদ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনের পক্ষ থেকে শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাজশাহীতে মানববন্ধনও করা হয়েছে। বেলা ১১টায় রাজশাহী জিরো পয়েন্টে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তারা জানান, আগে জন্মনিবন্ধন ব্যাধতামূলক না হওয়ায় ১৪ বছরে এসএসসি পাস করা সম্ভব হত। তখন ডিগ্রি অনার্স কোর্স ছিল ৩ বছর এবং ডিগ্রি (পাস) কোর্স ছিল ২ বছর ফলে ১৮ কিংবা ১৯ বছর বয়সে স্নাতক পাস করা যেত। এ কারণে ১৮ কিংবা ১৯ বছর বয়সে বিসিএসসহ পিএসসির অন্যান্য চাকরিগুলোতেও আবেদন করা যেত।

বর্তমানে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সার্টিফিকেটে বয়স লিপিবদ্ধ থাকার ফলে ১৬ বছরের পূর্বে কোনোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা দেয়া যায় না। ৩ বছরের অনার্স কোর্স ৪ বছর, ২ বছরের ডিগ্রি কোর্স ৩ বছর, ৩ বছরের ডিগ্রি কোর্সের সাথে ২ বছরের মাস্টার্স ছাড়া আবেদন করা যায় না। ৬ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তির বিধান নির্দিষ্ট হওয়ার ফলে ১৬ বছর ৩ মাস বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিতে হয়। নন পিএসসি’র ক্ষেত্রে যে প্রজ্ঞাপন তাতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ১৮ বছর। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে ৪ বছর মেয়াদী অনার্স কিভাবে শেষ হয়? ২ বছর মেয়াদী ডিগ্রিও এখন নেই।

১৬ বছর ২ মাসে এসএসসি ১৮ বছর ৪ মাসে এইচএসসি ও ১৮ বছর ১০ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলে ১৯ বছর বয়সে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করলে ২৩ বছরের পূর্বে কখনো অনার্স শেষ করা সম্ভব নয়। তাহলে বিপিএসসি কোন যুক্তিতে চাকরির আবেদনের শুরুর বয়স ২১ থাকবে? এই অকার্যকর আইন এখনো প্রয়োগ করে ছাত্র সমাজকে চরমভাবে ঠকানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে সরকারি চাকরিতে ৫৫% কোটার মাধ্যমে নিয়োগ হয়। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন কোটা নাই। কোটাধারীরা চাকরিতেও কোটা পায়, আবার বয়সও তাদের শিথিলযোগ্য। উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা, উপজাতি, জুডিশিয়াল ও চিকিৎসক ৩২ (চিকিৎসকদের চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩২ করা হয়েছিল এই বলে যে সাধারণ ছাত্রদের চেয়ে তাদের এক বছর বেশি পড়তে হয়, কিন্তু পরবর্তীতে সাধারণ ছাত্রদেরও অনার্সের কোর্স এক বছর বৃদ্ধি করে ৪ বছর করা হয়) বছর পর্যন্ত চাকরিতে আবেদন করতে পারে। নার্সদের ক্ষেত্রে ৩৬ এবং বিভাগীয় প্রার্থীরা ৪০ বছর পর্যন্ত চাকরিতে আবেদন করতে পারে।

উন্নত বিশ্বে তাদের জনগণকে জনশক্তিতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে বয়সের সীমা রেখাকে প্রাধান্য দেয়নি। অনেক দেশে অবসরের সীমা থাকলেও প্রবেশের কোন সীমা নেই। যেমন- ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৪০ অন্যান্য প্রদেশে ৩৮-৪০, শ্রীলংকাতে ৪৫, ইন্দোনেশিয়াতে ৪৫, ইতালিতে ৩৫, ফ্রান্স এ ৪০, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯, কানাডাতে ৫৯, সুইডেনে ৪৭, কাতারে ৩৫, নরওয়েতে ৩৫, এঙ্গোলাতে ৪৫, তাইওয়ানে ৩৫ বছর পর্যন্ত রয়েছে। আর আমাদের দেশে ৩০ এর সীমা রেখা দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছে চাকরি প্রার্থিদের।

নবম জাতীয় সংসদের বহু সংসদ সদস্য এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকগণও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। দশম জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ বহু এমপি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে জতীয় সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন এবং প্রায় প্রতিটি অধিবেশনেই এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ জাতীয় একটি বিষয় সংসদে এতবার উঠার পরও কেন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না তা বড় বিস্ময়কর।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের রাজশাহী বিভাগের সভাপতি শাহ্জামান রতন, সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক রেদওয়ানুল হকসহ প্রায় এক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী।

চাকরির বয়সসীমা ৩৫ দাবিতে ফের আন্দোলন

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!