• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চূড়ান্তের পথে আ.লীগের নির্বাচনী ইশতেহার


বিশেষ প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮, ০৬:২৭ পিএম
চূড়ান্তের পথে আ.লীগের নির্বাচনী ইশতেহার

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। টানা প্রায় দুই বছর ধরে দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজন ও গবেষকদের গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শে তৈরি হচ্ছে এ ইশতেহার। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের প্রবীণ, অভিজ্ঞ তরুণ ও শীর্ষ কয়েক নেতা জড়িত আছেন এ কাজে।

দলটির সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের মতোই চমক থাকবে এবারের ইশতেহারেও। সব শ্রেণির মানুষের চাহিদা ও মতামত নেওয়া হয়েছে এর জন্য। প্রাধান্য পেয়েছে দলের ২০তম ও সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্র। গত কয়েকবারের সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার কিছুটা আগে ইশতেহার প্রকাশের পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শেখ হাসিনা ইশতেহার জাতির কাছে তুলে ধরবেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৭ দিন ও দশম সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৭ দিন আগে ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছিল। এবার বেশ আগেই তা প্রকাশ করা হবে বলে ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্রীড়াবিদসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব খাতের বিশেষজ্ঞরা ইশতেহারে কী কী থাকতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি তারা বর্তমান অবস্থাও পর্যবেক্ষণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনের জন্য দলের ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা জানান।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রকাশিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের চমক ছিল ‘রূপকল্প-২০২১’। যা ব্যাপক সাড়া ফেলে ও ভোটারদের আকৃষ্ট করে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে ইশতেহারে দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। অনেক প্রতিশ্রুতি এরই মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, অনেকগুলো বাস্তবায়নাধীন। এবারের সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এমনই কোনো চমক দিতে চায় দলটি। দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও এ কথা সাংবাদিকদের কয়েকবার জানিয়েছেন।

দেশের জন্য আগামী ১০০ বছরের একটি আলাদা কর্মপরিকল্পনা এবারের ইশতেহারে থাকছে। ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর দেশ গড়তে সরকারের করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা থাকবে। এ বিষয়ে একটি গাইডলাইনও থাকবে। দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর মতো বিষয়ও ইশতেহারে প্রাধান্য পাচ্ছে।

সূত্র জানায়, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে যে উন্নয়ন হয়, এ বিষয়ে প্রচারণায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি ইশতেহারেও তা স্পষ্ট করা হবে। থাকছে সরকার গত দুইবার ক্ষমতায় থেকে যেসব উন্নয়নের কাজ করেছে সে সবের একটি বর্ণনা। আর্থ-সামাজিক ২০টি খাতে চলমান অগ্রযাত্রার চিত্রও তুলে ধরা হচ্ছে ইশতেহারে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ইশতেহার প্রণয়নের দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, মানুষের চাহিদা ও মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবার।

এবার ইশতেহারে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করার বিষয়ে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কীভাবে প্রযুক্তিমনস্ক ও দেশের সম্পদে পরিণত করা যায়, এসব বিষয়ে দিক-নির্দেশনা যোগ হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ, আইসিটি ও মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ঘোষণা রাখা হচ্ছে। যুব সমাজকে প্রশিক্ষিত করে ও কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তাদের সম্পৃক্ত করার বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এসব বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।

এ ছাড়া তরুণদের কর্মসংস্থান ও নিজের পায়ে দাঁড়াতে বিশেষ ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থার কথাও থাকছে ইশতেহারে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রস্তুত ইশতেহারে দেশের আরো উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে দশটি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠনের সুযোগ পেলে এসব বিষয়ে করণীয় কী হবে, তার বিস্তারিত উল্লেখ থাকছে। ২০৪১ সালকে টার্গেট করে আধুনিক শিক্ষা, কর্মসংস্থান, প্রশাসন ও সেবা খাতের বিকেন্দ্রীকরণও গুরুত্ব পাচ্ছে দলটির ইশতেহারে। গণতন্ত্র, কার্যকর সংসদ ও গণমুখী দক্ষ প্রশাসনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। থাকছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা।

গত দুইবারের ইশতেহারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল জ্বালানি খাত। এবার সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত প্রায় দশ বছরে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। এখন পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!