• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কট করবে ভারত?


ক্রীড়া ডেস্ক এপ্রিল ২৭, ২০১৭, ০৪:৫৩ পিএম
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কট করবে ভারত?

ঢাকা: গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) আয়ের সিংহভাগ চলে যেত কতিথ ‘তিন মোড়ল’ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের কোষাগারে। অন্যান্য সদস্য দেশের আপত্বিতে সংস্থাটির অর্থবণ্টন ও গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তাতে রাজী নয় ভারত। পরে আইসিসি বিসিসিআইকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে ঝামেলা চুকিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেয়। আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের দেয়া সমঝোতার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভারত। তারা অটল থাকে আগের দাবিতেই। বুধবার (২৬ এপ্রিল) আইসিসির নির্বাহী কমিটির সভায় ভোটাভুটিতে হেরে যায় ভারত। এই পরাজয়ে আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের অংশ নেয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোয়াশা।

দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে একটিতে ভারতীয় বোর্ড হেরেছে ১-৯ ব্যবধানে। এর ফলে আইসিসির নতুন অর্থ বন্টন নীতিমালায় বার্ষিক ৪৫০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৯০ মিলিয়ন ডলার পাবে ভারত। গঠনতন্ত্র ইস্যুতে আইসিসির প্রস্তাবনায় ভোটে ভারত হারে ৮-২ ভোটে। এতে  শ্রীনিবাসনের তৈরি পরিকাঠামোকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নতুন গঠনতন্ত্রের প্রস্তাব পাশ হয়।

এদিকে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের অংশগ্রহণের বিষয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে আইসিসির সভায় ভারতের পরাজয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিরাট কোহালিদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণ নিয়ে। অন্যান্য সব দেশ এই টুর্নামেন্টের জন্য দল ঘোষণা করে দিলেও ভারত তা করেনি। ভোটে  হারের পর এখন কী করা হবে? বুধবার রাতে প্রভাবশালী বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রথমেই বিশেষ সাধারণ সভা ডাকা হচ্ছে। সেখানে আইসিসির সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে। তার আগে দল ঘোষণা করার প্রশ্ন নেই। বোর্ডের মধ্যেও এখন শ্রীনিবাসন বা অন্য কোনও শীর্ষ কর্তার হাতে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। শ্রীনি চান, যুদ্ধং দেহি মনোভাব দেখিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কটের হুমকি দিক। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে যথেষ্ট সমর্থন জোটাতে পারেননি। বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষকদের যে চাপানউতোর চলছে, সেটাকেও আইসিসি-তে বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে অনেকে তুলে ধরছেন।

আইসিসি বৈঠক থেকে বেরিয়ে অন্য কয়েকটি দেশের সদস্যরা অবশ্য জানালেন, ভারতীয় বোর্ডের পক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সম্পূর্ণ বয়কট করা কঠিন হবে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, আইসিসি আয়োজিত সমস্ত টুর্নামেন্টে খেলার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই চুক্তি সই করে ফেলেছে বোর্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সেই চুক্তির অন্তর্গত। এখন খেলব না বললে বড় ধরনের জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে।

ভারতের দল ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য আইসিসি এখনই পাল্টা চাপাচাপিতে যাচ্ছে না। এমনিতেও নিয়ম হচ্ছে, এক মাস আগে দল ঘোষণা করতে হবে। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সেই দল জানাতে হতো। এর পর যদি কোনও পরিবর্তন করতে হয়, সেটা করতে হতো ২৪ মে’র মধ্যে। এখন যা পরিস্থিতি, ভারতকে হয়তো এক বারেই দল ঘোষণা করতে হবে ২৪ মে’র মধ্যে। ভারতীয় বোর্ডের কোনও কোনও সদস্যের মতে, আইপিএল চলার মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত হয়তো নেওয়া হবে না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে এসপার-ওসপার সিদ্ধান্ত যা হওয়ার আইপিএল ফাইনালের পরেই হবে।

কেউ কেউ উত্তেজিত ভাবে রাতেই বলতে থাকেন, ‘‘টিমটাই পাঠানো হবে না। দেখা যাক আইসিসি কী করে।’’ একইসঙ্গে তাঁদের মধ্যে আফশোসও চলছে যে, আধুনিক প্রজন্মে ভারতই শাসনকর্তা ছিল ক্রিকেট প্রশাসনে। জগমোহন ডালমিয়া শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত আইসিসি ভেঙে উপমহাদেশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিশ্বকাপ এনেছিলেন। পরবর্তী কালে শরদ পওয়ার এবং শ্রীনিবাসন আইসিসি প্রধান হয়েছেন। তাদেরই কি না ভোটাভুটিতে উড়িয়ে দেয়া হল। কে বলবে এখনও এক জন ভারতীয় বসে আছেন আইসিসি প্রধানের চেয়ারে। শশাঙ্ক মনোহর। কী বলা হবে একে? ভারতের কাছে ভারত হারল? হবে হয়তো।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!