• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যালেঞ্জ ও সংকট মোকাবেলায় ব্যস্ত বিএনপি


বিশেষ প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৪, ২০১৬, ০২:২৭ পিএম
চ্যালেঞ্জ ও সংকট মোকাবেলায় ব্যস্ত বিএনপি

ঢাকা: রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিকে। গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে কিভাবে এসব ইস্যু মোকাবেলা করা যায় তার কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত দলটির নীতিনির্ধারকরা।

সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেই বৈঠকে সিনিয়র নেতাদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের পরামর্শ দেন দলের চেয়ারপারসন।

এই মুহূর্তে বিএনপির সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার স্থানান্তরে সরকারের চিন্তাকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন ও ইসি পুনর্গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। এ তিনটি চ্যালেঞ্জ ঠিকঠাকভাবে মোকাবেলা করতে পারলে দলটির ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, লুই আই কানের নকশার আলোকে জিয়ার মাজার সরানোর চিন্তা-ভাবনা থেকে সরকারকে সরিয়ে আনতে পারলে নেতাকর্মীদের মনোবল আরও চাঙা হবে। আর নাসিক নির্বাচন হবে বিএনপির জনপ্রিয়তার ‘ব্যারোমিটার’। এই নির্বাচনে জয়ী হতে পারলেও ভবিষ্যৎ জাতীয় নির্বাচন ও রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। 

এছাড়া স্বাধীন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে দেয়া দলের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যর্থতার পরিচয় দিলে সামনের দিনগুলোতে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে তাদের। তাই রাষ্ট্রপতির ইতিবাচক সাড়ার আশায় বুক বেধে আছে দলটি।

দলটির একাধিক শীর্ষ নেতার মতে, ইসি পুনর্গঠনের প্রস্তাব ও নাসিক নির্বাচন নিয়ে সরকার নানামুখী চাপে রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এ চাপ মোকাবেলার দিকে না গিয়ে তারা কৌশল হিসেবে উল্টোপথ ধরেছেন। জিয়ার মাজার সরানোর ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে মাঠে নামানোর কৌশল নেয়া হয়েছে। 

আন্দোলন সংগ্রামে তৃতীয় পক্ষ জ্বালাও-পোড়াও ও নাশকতা করে এর দায়ভার বিএনপির ওপর চাপানো হতে পারে। তাই এই বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বেশ সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সরকার মাজার সরানোর ব্যাপারে অনড় থাকলে এ ইস্যুতে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা না থাকলেও তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে। 

দলের প্রতিষ্ঠাতার মাজার নিয়ে নেতাকর্মীর পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষেরও আবেগ রয়েছে। এই আবেগকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। মাজার সরানোর সরকারের ভাবনা নিয়ে শুরুতেই বিভিন্ন পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধির মতামত নেয়া হবে। সরকার যাতে এমন ভাবনা থেকে সরে আসে সেজন্য তাদের দিয়ে জনমত তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে আইনগত দিকও খতিয়ে দেখা হবে।

সূত্র জানায়, জিয়াউর রহমানের মাজার যাতে না সরানো হয়, সেজন্য সংসদের অভিভাবক স্পিকারের সঙ্গে দেখা করবে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। সরকার যাতে জিয়ার মাজার সরানোর চিন্তা থেকে সরে আসে, সেজন্য তার সহযোগিতা চাওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকেও এ ব্যাপারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হবে। 

স্পিকারের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাতের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে বিএনপির। এরপরও সরকার অনড় থাকলে সার্বিক বিষয়ে দেশবাসীর কাছে দলের অবস্থান তুলে ধরতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন মহলের আহ্বানের পরও সরকার শেষপর্যন্ত মাজার সরালে রাজনৈতিকভাবে কঠোর সিদ্ধান্তের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বড় দুই দলের দূরত্ব আরও বেড়ে যেতে পারে। নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে যে ছাড় দেয়া হচ্ছে, সেখান থেকে সরে যাবে বিএনপি। ভবিষ্যতে সমঝোতার বিষয়ে সরকারকে আর কোনো আহ্বান জানানো নাও হতে পারে। যে যার পথে হাঁটবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, লুই কান যে নকশা করেছে সেটা পাকিস্তানের চিন্তাধারায়। তারা তো কখনও ভাবেনি বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। আমরা স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর কেন পাকিস্তানের সেই চিন্তাধারাকে বাস্তবায়ন করব। আসলে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতেই সরকার নানা ষড়যন্ত্র করছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!