• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়ার অভিযোগ

চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পদত্যাগের ঘোষণা


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৭, ২০১৮, ০২:০৩ পিএম
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পদত্যাগের ঘোষণা

ঢাকা : ভুয়া ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গত চার বছরে মন্ত্রী থাকার সময় তার বিরুদ্ধে ১০ ব্যক্তিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ সংগঠনের অভিযোগের জবাবে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি। ওই সংগঠনটি সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তোলে, অসংখ্য রাজাকারকে ২ থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে। এ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যও হয়েছে।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। বলেন, আমি মন্ত্রী হওয়ার আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তখন কী ঘটেছে জানি না। তবে আমি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই যাচাই-বাছাই করে তা বাদ দিয়েছি। কেউ বলতে পারবে না আমি বা আমার মন্ত্রণালয়ের কেউ এমন কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ সংগঠনের আহ্বায়ক আবীর আহাদ অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) এক নির্দেশিকায় বলা হয়, ভারতীয় ও লাল মুক্তিবার্তার মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যেকোনো ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেওয়া যাবে।

আত্মঘাতী এ সিদ্ধান্তের ফর্মুলা নির্দেশিকায় জুড়ে দেওয়ার কারণে যাচাই-বাছাই কমিটির বেশিরভাগ সভাপতি, সদস্য ও সুযোগ সন্ধানীরা তা কাজে লাগিয়েছে। তারা পুরো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকে বানিয়ে ফেলে বাণিজ্যিক হাতিয়ার। তাই ওই অপরিণামদর্শী দুর্বল ফর্মুলার সুবাদে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে সারা দেশের লাখ লাখ অমুক্তিযোদ্ধা ও হাজার হাজার রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়া হয়। এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে।

সংগঠনটির অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা বানানোর নামে বাণিজ্যের ভাগ পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারসহ ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও নেতা কিংবা পাতি নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’র আহ্বায়ক আবীর আহাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কোনো অবস্থায় দেড় লাখের বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি  ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেওয়ার দাবিতে দেশব্যাপী সর্বাÍক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির ৭১ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তারা সরকারের কাছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দুটির সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেছেন। আবীর আহাদের কথায়, জামুকা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল ও মুক্তিযোদ্ধা লাল মুক্তিবার্তা, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের গেজেট ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তালিকার সব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে বাদ দিতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!