• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগের সম্মেলন : শেষ সময়ে আলোচনায় যারা


নাজমুল হুদা মে ১০, ২০১৮, ১০:৪২ পিএম
ছাত্রলীগের সম্মেলন : শেষ সময়ে আলোচনায় যারা

ঢাকা : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ১১ ও ১২ মে। এ সম্মেলনের পর সংগঠনটির দায়িত্বভার পড়বে নতুন নেতৃত্বের উপর। ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা সংগঠনের গঠনতন্ত্রে থাকলেও শোনা যাচ্ছে সিলেকশনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব বাছাই করা হবে। তবে যেভাবেই নেতা নির্বাচন করা হোক না কেন ছাত্রলীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং ক্লিন ইমেজ সম্পন্ন কেউ নেতৃত্বে আসবেন। তাদের আরো প্রত্যাশা চাঁদাবাজ, বিবাহিত, মাদক সেবন এবং বিভিন্ন কেলেঙ্কারীতে অভিযুক্ত কেউ যাতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে না আসে।

ছাত্রলীগের আগের কয়েকটি কমিটিতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হতো বলে নানা গুঞ্জন রয়েছে। এক্ষেত্রে সংগঠনটির ভিতরে-বাহিরে পদবঞ্চিতদের মধ্যে বিরাজ করতো চাপা ক্ষোভ। এবারও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর সক্রিয় হয়ে উঠে সিন্ডিকেটটি। আর পদ প্রত্যাশীরা দৌঁড়-ঝাপ শুরু করে দেন সিন্ডিকেটের গুরুদের কাছে। তবে গত ২ মে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইয়ের চেষ্টা করা হবে। আর এতে সফল না হলে ভোটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে’ বলে জানান। 

এছাড়া আওয়ামীলীগের সাধারণ ওবায়দুল কাদের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে নানা সময় বলে আসছেন, ‘ছাত্রলীগের এবারের নেতৃত্ব হবে সিন্ডিকেটমুক্ত। কারো পকেট কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগ চলবে না’। দলটির দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার এমন বক্তব্যের পর সাধারণ কর্মীরা প্রত্যাশা করছেন এবার সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বেরিয়ে আসবে ছাত্রলীগ।

২৯তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ‘সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক’ পদের জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রিও সম্পন্ন করেছে ছাত্রলীগ। দু’টি পদের জন্য ৩২৫ টি ফরম বিক্রি হয়েছে বলেও জানা যায়। এর মধ্যে সভাপতি পদের জন্য ১২৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ২০০ জন ফরম তুলেছেন।

এর আগে গত ২৯শে এপ্রিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পর সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলন শেষ হলেও এখনও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি একই দিন ঘোষিত হতে পারে। আর তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব রয়েছে এমন অনেক পদপ্রত্যাশী নেতাই আশা করছেন যেকোন একটি কমিটিতে নিজেদের স্থান করে নিতে।

আলোচনায় যারা : সম্মেলনের পর কারা কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে আসছেন তা নিয়ে শেষ পর্যায়ে চলছে নানা আলোচনা এবং চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ। কেউ কেউ বলছেন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতার পাশাপাশি আঞ্চলিকতার বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এক্ষেত্রে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, বরিশাল এবং ফরিদপুর অঞ্চল রয়েছে আলোচনার কেন্দ্রে।

এছাড়া উত্তরাঞ্চল, ময়মনসিংহ, খুলনা এবং সিলেট থেকেও এবার নেতৃত্ব আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যে এলাকা থেকেই নেতা নির্বাচন করা হোক না কেন ব্যক্তির অতীত, পারিবারিক ইতিহাস সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র।

চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আলোচনায় যারা- কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আদিত্য নন্দী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিদার মোঃ নিজামুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, স্কুল ছাত্রবিষয়ক উপ-সম্পাদক সৈয়দ আরাফাত,  স্কুল ছাত্রবিষয়ক উপ-সম্পাদক খাজা খায়ের সুজন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখার সাবেক সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, স্যার এ এফ রহমান হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার ও কেন্দ্রীয় পাঠাগার বিষয়ক উপ-সম্পাদক সোহেল উদ্দিন।

বরিশাল অঞ্চল থেকে আলোচনায় যারা- কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, সহ-সম্পাদক খাদেমুল বাশার জয়, প্রচার বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাইফুর রহমান সাঈফ।

ফরিদপুর অঞ্চল থেকে যারা আলোচনায়- কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজন, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসাইন, সমাজসে্বা বিষয়ক সম্পাদক রানা হামিদ, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান।

উত্তরবঙ্গ থেকে আলোচনায় যারা- কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল হাসান, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক হোসাইন সাদ্দাম, সহ-সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, উপ-কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, দীপু চন্দ্র রায় (সমাজসেবা সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ), মামুন বিন সাত্তার (সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ)।

সিলেট অঞ্চল থেকে- কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা সম্পাদক আনিসুল ইসলাম জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধার জিয়াউর রহমান হলের সাবেক সভাপতি ইউসুফ উদ্দিন খান আলোচনায় রয়েছেন।  

এছাড়া ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় পরিবাশ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম হাবিবুল্লাহ বিপ্লব, জগন্নাথ হলের সাবেক সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং খুলনা অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাগর হোসেন সোহাগ আলোচনায় রয়েছেন।

এছাড়া এবার কয়েকজন নারী নেত্রীও আলোচনায় রয়েছেন। এদের মধ্যে- কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি চৈতালী হালদার চৈতী, অর্থ বিষয়ক উপ-সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক শেখ মারুফা নাবিলা এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক ইশাত কাসফিয়া ইরা অন্যতম।   

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!