• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রী উত্যক্তকারীদের আটক, পরে ছাত্রলীগের ছিনতাই


ইবি প্রতিনিধি জানুয়ারি ২১, ২০১৮, ০৮:০৪ পিএম
ছাত্রী উত্যক্তকারীদের আটক, পরে ছাত্রলীগের ছিনতাই

ইবি : ক্যাম্পাসে মদ পান করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তিন ছাত্রীকে উত্যক্ত করেছে ইবি ছাত্রলীগের কর্মীরা। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মফিজ লেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগীতায় অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নেওয়ার পথে পুলিশের হাত থেকে আটককৃত দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে ছিনতাই করে নেয় ইবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা আরাফাত।

ক্যাম্পাসের মফিজ লেক এলাকায় রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে ঘুরতে যায় শেখ হাসিনা হলের তিন ছাত্রী। প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীরা লেক এলাকায় বসেছিল। এ সময় নেশাগ্রস্ত তিন যুবক এসে তাদের উত্যক্ত করে। উত্যক্তকারীদের মধ্যে ইমতিয়াজ পলিটিক্যাল সাইন্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এবং ইউসুফ ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অন্যজন মুহাইমিনুল ইসলাম লামন। লামন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা ওয়ালীদ হাসন মুকুরের শ্যালক বলে জানা যায়।

উত্যক্ত হয়ে ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমানকে ফোন করে বলেন, ‘স্যার আমাদের বাঁচান, আমরা মফিজ লেকে’। ছাত্রীদের আর্তনাদে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় প্রক্টরিয়াল বডি। সেখান থেকে আটক করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমতিয়াজ ও ইউসুফকে। উপস্থিতি টের পেয়ে লামন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর টপকে পালোনোর চেষ্টা করে। পরে আনসার এবং পুলিশ সদস্যদের সহযোগীতায় লামনকেও আটক করা হয়।

আটকের পর পুলিশের হাতে আটককৃতদের সোপর্দ করে প্রক্টরিয়াল বডি। প্রতক্ষ্যদর্শীরা বলেন, পুলিশ আটককৃতদের নিয়ে থানার দিকে যাচ্ছিল। পথি মধ্যে খালেদা জিয়া হলের সামনে থেকে গাড়ি থামিয়ে আটককৃত ইমতিয়াজ এবং ইউসুফকে ছিনিয়ে নেয় ইবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা আরাফাত। এ সময় লামন গাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধরে আনা হয়। ইতিপূর্বে মন্দির ভাঙার অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দল থেকে বহিষ্কার করে আরাফাতকে।

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রী আলপনা আপন বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গনে মদ পান করে ছাত্রী উত্যক্ত করার ঘটনা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য এটা চরম লজ্জার বিষয়। নিজ ক্যাম্পাসেই সেফ ফিল না করি তবে কোথায় আমরা সেফ ফিল করব? আমরা মেয়েদের নিরাপত্তা চাই।’

মাদকসেবীদের ছিনতাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী পুলিশের গাড়িতে ছিল। তারা আমাদের দলীয় কর্মী। আমরা তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে রেখেছি।’

ইবি ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের ডিউটিরত অবস্থায় কোনো ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়ে হবে।’ একই সঙ্গে প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ রাখার দাবি জানান তিনি।

প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ছাত্রী ফোন মেয়ে মফিজ লেকে যাই। সেখান থেকে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। মাদক সেবন, ছাত্রী উত্যক্ত এসব ঘটনা ক্যাম্পাস আঙিনায় বরদাস করা হবে না।’

দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। তবে, ক্যাম্পাসে ছাত্রী উত্যক্ত হয়ে থাকলে তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি প্রশাসনের কাছে। আর ছিনতাইকৃত অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

ইবি থানার ওসি বলেন, ‘আমি থানার বাইরে আছি। থানায় গিয়ে বিষয়টি দেখব।’ ছিনতাইয়ের সময় দায়িত্বরত এসআই কমলেশ দাস বলেন, ‘তিনজনকে থানায় আনার সময় ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত তার দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়েছে। অন্যজনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!