• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
৮ মনোনয়ন বৈধ

ছুটছেন সাখাওয়াত, ভাবছেন আইভী


জেলা প্রতিনিধি নভেম্বর ২৭, ২০১৬, ১০:২৫ পিএম
ছুটছেন সাখাওয়াত, ভাবছেন আইভী

নারায়ণগঞ্জ: আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর আগেই নিজ নিজ অবস্থান শক্ত করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী কাজ শুরু করেছেন। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান দলীয় নেতাদের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী আপাতত গণমাধ্যম থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে নীরবেই ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

এদিকে, ‘শামীম ওসমান নির্বাচনে সক্রিয় হলে ভালো, নিষ্ক্রিয় থাকলে আরো ভালো’ বলে মন্তব্য করেছেন আইভী। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নাসিক নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কৌশল নির্ধারণী এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে যাচাই বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ আটজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী ৩০০ জন ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতান মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, নাসিক নির্বাচনে আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা। 

সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কোনো কমিটিতেই অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নেই। ২০০৯ সালের অক্টোবরে যখন নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির সম্মেলন চলে তখনই ‘বিদ্রোহী কমিটি’ গঠন করে সেখানে সাধারণ সম্পাদক হন। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলনের আগে সম্মেলন বন্ধ করতে আদালতে রিট করেন এবং সম্মেলনের দিন হামলার অগ্রভাগেও ছিলেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত। সে কারণে স্থানীয় বিএনপির একটি বড় অংশ ও মূল ধারার সঙ্গে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতের পূর্ববিরোধ রয়েছে।

তবে ২০১৪ সালের সাত খুনের পর বাদীপক্ষের আইনজীবী হয়ে তিনি আবারও ঘুরে দাঁড়ান। তা ছাড়া মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় অনেক বিএনপির রাজনীতিক তাকে সহজে মেনে নেননি। সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার, তিনবারের সাবেক এমপি আবুল কালাম ও সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন নির্বাচনে অনীহা প্রকাশ করলে দল অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতকে মনোনয়ন দেন। আর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার সময় তার সঙ্গে জেলার শীর্ষ নেতারা থাকলেও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও মহানগরের নেতাদের দেখা যায়নি। মূলত সে বিরোধ মেটাতেই তিনি গত কয়েক দিন ধরে দলীয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। 

গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) নগর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আলোচিত সভাপতি জাকির খানসহ আরো কয়েকজন নেতার বাড়িতে যান। ওই সময় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত আগের সব ভেদাভেদ ভুলে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। 

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতা জানান, শীর্ষ নেতারা কার্যত ফটোসেশনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে এলেও নির্বাচনের তেমন প্রস্তুতি এখনো কেউই নেয়নি। হয়নি কোনো মিটিং কিংবা শলাপরামর্শ।

অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর এসব বিষয়ে সমাধান হবে। কারণ আমি সবার বাসায় গিয়ে এবং মোবাইলে যোগাযোগ করে একত্রে কাজ করতে বলছি। ব্যক্তি সাখাওয়াতের জন্য নয়, বিএনপির জন্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য এবং গণতন্ত্রের প্রতীক ‘ধানের শীষে’র জন্য। আমি আশা রাখছি, ৫ ডিসেম্বর থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাই মাঠে নামবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর দেখা মিলছে না। তিনি পারিবারিকসহ কিছুটা নীরবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) আইভি সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহ পরাণ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেছেন। 

নাসিক নির্বাচনে বৈধ অস্ত্র জমা চায় ইসি: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ‘ভালো’ নির্বাচন করার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনী এলাকায় বৈধ অস্ত্র জমা দেয়া। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!