ছেলের সামনে বিধবাকে রাতভর গণধর্ষণ!

নোয়াখালী: জেলার সেনবাগ উপজেলা ১নং ছাতারপাইয়ায় ইউনিয়নের চিলাদী গ্রামে ছেলের সামনে বিধবা গার্মেন্টস কর্মীকে (৩৬) গণধর্ষণ করেছে ওই এলাকার তিন বখাটে। ওই ঘটনায় ধর্ষিতাকে উদ্ধার এবং ধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুই ধর্ষক ও এক সালিশদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আটকরা হচ্ছে- ধর্ষক রুবেল (২৪) ও নুর নবী (৪৩) এবং প্রধান সালিশদার আবুল কাশেম প্রকাশ মাছ কাশেম (৬০)।

ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ছাতারপাইয়া বাজারে এক সালিশ বৈঠক হয়। এতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রুবেল ও নুরনবীকে হাজির করা হলেও মূলহোতা সেলিমকে রাখা হয় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তার অনুপস্থিতিতে সালিশদার হানিফ ও আবুল কাশেম ওরফে মাছ কাশেম রুবেল ও নুরনবীকে ১০ বার করে কান ধরে ওঠবস করায় এবং দুজনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আর সেলিমের অনুপস্থিতিতে তার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া সালিশে ওই নারীর মোবাইল জামাকাপড় বাবদ তাৎক্ষণিক তিন হাজার টাকা জরিমানা করে সালিশদাররা নির্যাতিতা নারীর হাতে তুলে দেয়। একই সঙ্গে একটি সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয় যাতে এ বিষয়টি নিয়ে বিচার চাইতে না পারে। ওই সালিশের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ ও বিষয়টির সূত্র ধরে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যম কর্মীরা এলাকায় উপস্থিত হলে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পায়।

এঘটনায় ধর্ষিতা নারী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ৯জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩/৪জনের বিরুদ্ধে সেনবাগ থানায় নারী ও শিশু আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ধর্ষিতা নারী বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছেন।

ভিকটিমের এজাহারের  অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহষ্পাতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে ব্যাটারী চালিত অটোরিকসাযোগে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে কর্মরত ওই নারী ছুটি নিয়ে ছোট সন্তানকে দেখতে ১২ বছর বয়সী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সেনবাগের ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের চিলাদী গ্রামে স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে অটোরিকসা চালক সেলিম ও তার অপর দুই সহযোগী ওই নারীর গলায় চুরি ধরে ও ছেলেকে জিম্মি করে অটোরিকসা থেকে নামিয়ে নরপশুরা পালাক্রমে রাতভর ধর্ষণ করে।

এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সেনবাগ থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী জানায়, মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর গ্রেপ্তার আসামিদের নোয়াখালীর বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে গ্রেরণ করা হয়। এছাড়া ধর্ষণ ঘটনার মূলহোতা সেলিমকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম