• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গি হামলা : ধরাছোঁয়ার বাইরে মূল হোতারা


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ৯, ২০১৬, ০১:৪২ পিএম
জঙ্গি হামলা : ধরাছোঁয়ার বাইরে মূল হোতারা

দেশে যে হারে জঙ্গি বা উগ্রপন্থি হামলা বেড়েছে সে তুলনায় গ্রেফতারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আবার যা-ও গ্রেফতার হচ্ছে তার প্রায় সবই সন্দেহভাজন হিসেবে। জঙ্গি হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

পুলিশ সদর দফতরের তথ্যমতে, গত ১৮ মাসে দেশে উগ্রপন্থিদের ৪৭টি হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। আর সেসব হামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় ১৪৪ জনকে। যদিও আটক হওয়া আসামির মধ্যে অধিকাংশই সন্দেহভাজন। 

জঙ্গি হামলায় জড়িত মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। কিছু ঘটনায় অপারেশনে অংশ নেয়া জঙ্গিরা গ্রেফতার হলেও তাদের নেপথ্যে কারা রয়েছেন তাও অজানা থেকে যাচ্ছে। কারা উগ্রপন্থিদের মদদ ও অর্থ দিচ্ছেন তার মূলে পৌছাতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। তাই একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এমনকি উগ্রপন্থিদের মধ্যে ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলার প্রবণতাও বাড়ছে। পুুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন উগ্রপন্থি নিহত হলে পরবর্তী সময়ে তার পাল্টা ‘অপারেশন’ দেখা যায়। তবে চট্টগ্রামে এসপিপত্নী নিহত হওয়ার পর থেকে উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে রয়েছে পুলিশ।

যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে জঙ্গিরা হামলা করছে, তারা গ্রেফতার না হওয়ায় এসব নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্ত হামলার পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির মদদ রয়েছে। এর পেছনে কেউ কেউ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর জড়িত থাকার কথাও বলছেন। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ষড়যন্ত্রের কথাও বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা এর আগে প্রকাশ্যে মানুষ পুড়িয়েছে, এখন কৌশল পাল্টে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। এসব ঘটনার নেপথ্যে বিএনপি- জামায়াত রয়েছে।

আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তো একাধিকবার বলেছেন, গুপ্তহত্যার পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র যুক্ত। জেএমবি, এবিটি, জামায়াত-শিবির আলাদা কিছু নয়। যারা জেএমবি-এবিটি; তারাই জামায়াত-শিবির।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, উগ্রপন্থিদের দমনে দুইভাবে কাজ চলছে। মাঠ পর্যায়ে যারা অপারেশনে অংশ নিচ্ছেন তাদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি অর্থ ও মদদদাতাদের খোঁজা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু ঘটনায় এমন কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে যারা এক সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলায় জড়িতদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তাদের একটি অংশ এক সময় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িত এবিটি ও জেএমবির সঙ্গে এরই মধ্যে জামায়াত-শিবিরের কিছু নেতাকর্মীর যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এমনকি কেউ কেউ আগে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও এখন পুরোপুরি উগ্রপন্থিদের দলে ভিড়েছেন। গাবতলীতে পুলিশ চেকপোস্টে এএসআই ইব্রাহিম হত্যায় জড়িত এনামুল একসময় বগুড়ায় শিবিরের নেতা ছিলেন। পল্লবীতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত তারেক হোসেন মিলু ওরফে ওসমান জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শিবির নেতা ছিলেন। এর আগে ডিবির সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত আবদুল্লাহ গাজীপুরের শিবির কর্মী। এ ছাড়া বর্তমানে যারা জেএমবির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের অনেকে কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে অপারেশনে অংশ নিচ্ছেন। বগুড়ায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত তরিকুল ২০০৫ সালে জেএমবির হামলার পর আটক হন। এরপর কারাগার থেকে বেরিয়ে আবার উগ্রপন্থিদের দলে ভেড়েন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!