• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গিদের হাতে প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস!


সোনালী বিশেষ জুলাই ২৫, ২০১৭, ০২:০৫ পিএম
জঙ্গিদের হাতে প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস!

ঢাকা : প্রযুক্তির রাজ্যে পুরো বিশ্ব এখন একটি গ্রাম। এর পরও থেমে নেই প্রযুক্তির জাদু। এ জাদুতেই প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনে যোগ হচ্ছে তাক লাগানো নিত্যনতুন পণ্য। আসছে নতুন নতুন সব ডিভাইস।

এসব ডিভাইস শুধু মানুষের কল্যাণেই ব্যবহার করা হচ্ছে না, বরং সাধারণ মানুষের আগেই পৌঁছে যাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, ইতোমধ্যে জঙ্গিদের অনেকে উচ্চমানের নাইট ভিশন বায়নোকুলারসহ অত্যাধুনিক অনেক ডিভাইস ব্যবহার করছে।

এসব ডিভাইসের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা তৎপরতা নজরদারি; জঙ্গিদের কর্মকান্ডের জন্য হুমকি হতে পারে এমন ব্যক্তিদের চলাফেরা; প্রয়োজনে টার্গেট যানবাহন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করছে জঙ্গিরা। ইতোমধ্যে নব্য জেএমবির আইটি বিভাগে একটি বিশেষ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে, যাদের হাতে অত্যাধুনিক ডিভাইস তুলে দেওয়ার জন্য ঢালা হয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থ।

এদিকে জঙ্গিরা যেন প্রযুক্তির অত্যাধুনিক সুবিধাদি তাদের কর্মকান্ডে প্রয়োগ করতে না পারে, সে জন্য তৎপর রয়েছেন গোয়েন্দারাও। জঙ্গি দমনে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এসব তথ্য।

গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢাকার আশুলিয়ার এক বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে পালাতে চেয়েছিল আব্দুর রহমান ওরফে সারোয়ার জাহান। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি, চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে র‌্যাবের দেওয়া তথ্যমতে, এই সারোয়ার জাহানই ছিল তৎকালে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা।

র‌্যাব সূত্র জানায়, সারোয়ার জাহানের জঙ্গি আস্তানা থেকে রাতের অন্ধকারে দেখা যায় (নাইট ভিশন) এমন বায়নোকুলার উদ্ধার করা হয়েছিল। এ সময় আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত নথিপত্র ঘেঁটে আরও জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি এড়াতে নানা রকম সতর্কতা অবলম্বন করছিল জঙ্গিরা; তারা প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলত খুবই সতর্কভাবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বায়নোকুলারের মাধ্যমে নজরদারি রাখা। নব্য জেএমবির আইটি বিভাগের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার আগে থেকেই নব্য জেএমবির সদস্যরা এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। নাইট ভিশন বায়নোকুলার দিয়ে চারপাশে নজরদারি রাখা এবং প্রয়োজন হলে আস্তানা ছেড়ে সটকে পড়ার বিষয়টি মাথায় রাখছে জঙ্গিরা।

যদিও গোয়েন্দারা এই কৌশল ইতোমধ্যে রপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এই বায়নোকুলার দিয়ে জঙ্গিরা যেন দূর থেকে গোয়েন্দাদের গতিবিধি মনিটরিং করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সারোয়ার জাহানের আস্তানা থেকে যে নাইট ভিশন বায়নোকুলার উদ্ধার করা হয়েছিল তা ছিল অনেক উন্নতমানের। সারোয়ার জাহান নব্য জেএমবিকে উচ্চপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করতে মোটা অংকের অর্থ ঢেলেছিল। তার অর্থায়নে মাঠ পর্যায়ের (অপারেশনাল) জঙ্গি এবং তাদের সামরিক শাখার সদস্যরা বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করা শুরু করে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক রাকিবুল হাসান রিগ্যান, শোলাকিয়া হামলার পর আটক ও পরে নিহত হওয়ার আগে জিজ্ঞাসাবাদে শফিউল ইসলাম ডন বায়নোকুলার ব্যবহারের কথা স্বীকার করে।

একইসঙ্গে নব্য জেএমবির কিলিং মাস্টার রাজীব গান্ধী এবং সম্প্রতি গ্রেপ্তার শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি সোহেল মাহফুজও নাইট ভিশন ডিভাইস ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের জেরায়।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!