আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এই যুদ্ধ চলছে, চলবে।
জঙ্গিদের পক্ষ নেয়া মানুষ ও গণমাধ্যমের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, এই বাংলাদেশে জঙ্গিদের জন্য মায়াকান্নকারীদের কোনো ঠাঁই নেই। পছন্দ না হলে তারা যেন সৌদি আরব, সিরিয়া, লিবিয়া ও ইরাকে চলে যান।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি বঙ্গবন্ধ ভবনের সামনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা কাওছার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলছে, চলবে। আমরা কোনো দেশের দয়ায়, কোনো দেশের অনূকম্পা নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করি নি। আমরা যুদ্ধ করে আমাদের মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছি। এখানে মায়াকান্নার কোনো স্থান নেই। হয় বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সঠিকভাবে দায় দায়িত্ব পালন করবেন, না হলে পছন্দ না হলে চলে যান সন্ত্রাসীদের দেশ সৌদি আরবে। যান ইরাকে, সেখানে আইএস এর অনেকে আছে, যান সিরিয়াতে সেখানে শত শত অস্ত্রধারী দিনরাত নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে, সেখানে চলে যান, এই বাংলার মাটিতে আপনাদের স্থান হবে না, এবং কোনোদিনই হবে না।
কিছু গণমাধ্যমের এবং মানুষের সমালোচনা করে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, এই যে আপনার মায়াকান্না, দ্বিচারিতা। একদিকে কান্নাকাটি করবেন, আরেকদিকে উত্যক্ত করবেন এটা কী হয় কোনোদিন? তিনি বলেন, গুলশানের রেস্টুরেন্টে যে ঘটনাটা ঘটলো, সেই ঘটনাটাকে একদম তিলকে তাল বানিয়ে সব জায়গায় প্রচার করা হয়েছে। একদিকে মায়াকান্না, যারা হত্যাকারী যারা টেরোরিস্ট, জঙ্গি, তাদের জন্য আবার মায়াকান্না করছে। একদিকে বলে, কেন রেস্টুরেন্টে হামলা হলো? কেনো, রক্ষা করতে পারলো না? যারা জঙ্গি তাদেরকে চিহ্নিত করে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে, তাদের নিয়েও কান্নাকাটি তাদেরকে বিনাবিচারে হত্যা করে ফেললো, তাদের মানবাধিকার রক্ষা করা হলো না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা আত্মঘাতী বোমা মারে, যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে তাদের আবার মানবাধিকার কী? এদের জন্য মায়াকান্না কেনো? কিছু কিছু পত্রিকা দেখি, যে অস্ত্রধারীরা, জঙ্গি হয়ে মানুষকে হত্যা করেছে তাদের প্রতি মহব্বত বেশি, যারা শিকার হয়েছে তাদের সর্ম্পকে কোনো বিন্দুমাত্র সন্মান নাই।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে কিছু শ্রেণীই আছে, যারা এই বাংলাদেশকে কোনোদিনই স্বীকার করে নাই, ভবিষ্যতেও স্বীকার করবে না। আমরা এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি যুদ্ধ করে, কোনও ইলেকশন দিয়ে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয় নাই। কোনো বিদেশী শক্তির দ্বারা আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করি নাই। আমরা রাণীর বদৌলতে ভারতবর্ষের মতোও স্বাধীনতা পাই নি, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। তাহলে এখানে এই ডুপ্লিসিটি (দ্বিচারিতা) আসে কোনো? একদিকে এই মায়াকান্না, এতো মানুষ জঙ্গি মানুষকে হত্যা করছে আবার তাদের জন্য বিলাপ করতে করতে শেষ। এই যে কিছুসংখ্যক বাঙালির এই চরিত্র, আমি তো মাঝে মাঝে টকশো দেখি, পত্রিকা সবগুলো পড়ি। আমার লজ্জা আসে এই ধরণের আচরণ দেখে। এই ধরণের আচরণ যদি বাঙালির থাকে, তাহলে এ জাতির কোনোদিনই উন্নতির সর্বোাচ্চ শিখরে পৌছাতে পারবে না।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। কোনো সন্ত্রাসী এই বাংলার মাটিতে থাকবে না। শেখ হাসিনা একবার যদি একটা কথা বলেন, একটা প্রতিশ্রুতি দেন, সেই প্রতিশ্রুতি কোনেদিন লংঘন করে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই সন্ত্রাসীরা দেশকে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনার সঠিক পথে আছেন। আপনারাই শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আমরা ইনশাল্লাহ কায়েম করবো।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি
আপনার মতামত লিখুন :