• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জটিলতা কাটেনি, অনিশ্চয়তায় ৭০ হাজার হজযাত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১২, ২০১৭, ১০:১৬ পিএম
জটিলতা কাটেনি, অনিশ্চয়তায় ৭০ হাজার হজযাত্রী

ঢাকা: হজ এজেন্সীগুলো দুষছেন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও কাজের ধীর গতিকে। অপরদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শক্ত করে বলা হচ্ছে, এর জন্য এজেন্সিগুলো দায়ী। কিন্তু তাদের দোষারোপে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হজযাত্রীদের। এখনও ৭০ হাজার হজযাত্রীর সৌদি আরব যাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শনিবার(১২ আগস্ট) পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের মোট ২৭ টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভিসা জটিলতার কারণে কম যাত্রী নিয়েও কোন কোন ফ্লাইট যাচ্ছে সৌদি আরব। যেসব ফ্লাইট বাতিল হয়েছে তার প্রতিটিতে ৪১৯ জন করে হজযাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি ছিল। সংকট মোকাবিলায় বিমান ও হজ অফিস ফ্লাইট রি-শিডিউল করে বাতিলকৃত ফ্লাইটের কিছু যাত্রীকে পাঠাতে পারলেও ১০ হাজারের বেশী হজযাত্রীর হজযাত্রা এখনো অনিশ্চিত।

সূত্র জানিয়েছে, ই-ভিসা জটিলতা ও নির্ধারিত ফ্লাইট বিপর্যয় এখনো চলছে। ফ্লাইট শুরুর পর গত ২০ দিনে— ৫৮ হাজার ১শ ৮৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌছেছেন। ঢাকা ছাড়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন এখনো ৬৯ হাজার ১০ জন হজযাত্রী। তাদের সবাই যেতে পারবেন কি-না এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ভর করেছে।

কারণ বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট শেষ হচ্ছে আগামী ২৬ আগস্ট।  আর সাউদিয়া এয়ার  ২৮ আগস্ট। এখনো ৩০ হাজার হজগমনেচ্ছুর ভিসা হয়নি। ৫ হাজারের বেশী ভিসা প্রার্থীর আবেদনপত্র জমাই দেয়নি এজেন্সিগুলো।

৫ দিন পরেই এবছরের মতো ভিসার দরোজা বন্ধ হবে। আগামী বৃহস্পতিবারের পর আর কোন ভিসা ইস্যু করবে না সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। এই ১৪ দিনে কিভাবে নানা জটিলতার মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার হজ যাত্রী পরিবহন করবে বিমান ও সাউদিয়া তা নিয়ে এজেন্সিগুলোও শঙ্কায় আছে। কঠিন চাপের মধ্যে পড়েছে বিমান।

বাংলাদেশ বিমানের এমডি ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ জানিয়েছেন, ১৪টি বাড়তি স্লটের জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেও সেভাবে দেয়া হয়নি। ফলে বাড়তি ১৪টি স্লটের সর্বোচ্চ ৭টি শ্লট ব্যবহার করতে পারবে বিমান। তার দাবি হজ ফ্লাইট বাতিলের মূল কারণ হজ এজেন্সিগুলোর অসহযোগিতা। হজ এজেন্সিগুলো সময়মতো বাড়ি ভাড়া না করার কারণে ফ্লাইট বিপর্যয় হয়েছে।

ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানও বলেছেন, একটির পর একটি ফ্লাইট বাতিলের জন্য হজ এজেন্সিগুলো দায়ী। তিনি বলেন, যে ফ্লাইটগুলো বাতিল হয়েছে, অনলি ডিউ টু এজেন্সি। আমাদের কোনো ত্রুটি নাই। মন্ত্রী জানান, এজেন্সিরা টাকা বাঁচানোর জন্য, যাতে দুই দিন পরে গেলে দুই দিনের কম খাওয়া কম লাগবে, এসব কারণে এইসব করছে। সংকট সৃষ্টির জন্য দায়ী হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর একটি সূত্র বলছে, নির্ধারিত সময়ে বিমানের টিকিট না পাওয়ায় ও ই-ভিসা জটিলতার কারণে যাত্রী সংকট শুরু হয়। এজেন্সিগুলোর গাফিলতির জন্যও এমন সংকট তৈরি হয়েছে। সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া না করায় হজযাত্রীরা ভিসা পাচ্ছেন না। আবার ভিসা না হওয়ায় তারা টিকিট করতে পারছেন না। ফলে এজেন্সিগুলো আগে আসন বুকিং দিলেও পরে নিশ্চিত না করায় হজযাত্রী সংকটে ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে বা পিছিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে হাব এর সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম বাহার জানান মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ৯৭ হাজার জনের ভিসা ইস্যু করেছে সৌদি আরব। সামনে ৫ দিনের মধ্যে বাদ বাকিদের ভিসা করাতে হবে। এর মধ্যে যারা ব্যর্থ হবেন তাদের যাওয়া সম্ভব নয়।

হজ ক্যাম্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যে ফ্লাইটগুলো রয়েছে তাতে এত হজযাত্রী পাঠাতে জটিলতা বা জটের সৃষ্টি হবে। আশা করছি আর কোন ফ্লাইট বাতিল হবে না। হজ অফিস জানায়,শুক্রবার বিমান বাংলাদেশের বেলা ১টা ২৫ মিনিটের যে হজ ফ্লাইট (বিজি-৭০৫৭) যেতে পারেনি, তা পিছিয়ে রবিবার ভোর ছয়টায় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে বাংলাদেশ হাজি কল্যাণ পরিষদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন যে, ভিসা জটিলতায় ফ্লাইট বাতিলের কারণে ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের খুঁজে বের করতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!