• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
বাণিজ্য মেলা ২০১৮

জনগণের সঙ্গে রক্তের বাঁধন গড়তে চায় পুলিশ


শেখ আবু তালেব, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০১৮, ০৮:০৬ পিএম
জনগণের সঙ্গে রক্তের বাঁধন গড়তে চায় পুলিশ

ঢাকা: ‘রক্তে মোরা বাঁধন গড়ি, রক্ত দিবো জীবন ভরি’ এই শ্লোগানকে তুলে ধরে বাণিজ্য মেলায় রক্ত সংগ্রহ করছে পুলিশের ব্লাড ব্যাংক। পুলিশের এ জনবান্ধব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মেলায় আসা দর্শনার্থীদের অনেকেই স্বেচ্ছায় রক্তদান করছে। রক্তদাতারা বলছেন, পুলিশ জনগণকে সেবা দেয়। তাদের এই মহতি কাজে আমরাও অংশিদার হলাম।

স্বেচ্ছায় রক্তদান করছেন দাতারা

১ জানুয়ারি থেকে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। তৃতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেই জমজমাট হয়েছে বাণিজ্য মেলা। দর্শনার্থীও বেড়েছে আশানুরূপ। মেলায় ভিআপি গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই মেলা পরিচালনা অফিসের পশ্বিম দিকে দৃষ্টি নন্দন স্টল দিয়েছে পুলিশের রক্ত সংগ্রহ ক্যাম্প।

মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসায়ী করছেন পুলিশ সদস্যরা। অনেক দর্শনার্থীই রক্ত না দিলেও একবার ঢুঁ মারছেন ক্যাম্পে। দিচ্ছেন রক্ত সম্পর্কিত হাজারো প্রশ্নের উত্তর। ক্যাম্পে দায়িত্বরতরাও তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জীবনে প্রথমবার রক্তদান করলেন পোশাক কর্মী মাহফুজুর রহমান

গাজীপুর থেকে মেলায় বেড়াতে এসেছিলেন তৈরি পোশাক কর্মী মাহফুজুর রহমান(২২)। তরুণ এ কর্মীকে এ প্রতিবেদক কৌতুহলী প্রশ্ন করেন, পুলিশ সম্পর্কেতো বাজে ধারণাই বেশি আমাদের সমাজে। তাদের ক্যাম্পে কেনো রক্ত দিলেন। সহাস্যে ওই তরুণ জানালেন, আমরা চাই পুলিশ আমাদের বন্ধু হয়ে থাকুক। পুলিশের সকল ভালো উদ্যোগকে সহযোগিতা করতে চাই।

জীবনে প্রথমবারের মতো রক্তদানের অনুভূতি জানিয়ে মাহফুজুর বলেন, খুবই ভালো লেগেছে রক্তদান করে। আমার রক্ত আরেক ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করবে, তাকে বাঁচিয়ে তুলতে সাহায্য করবে, ভাবতেই গা শিউরে উঠছে এখন। পুলিশের এই ব্লাড ব্যাংক জনগণের সঙ্গে পুলিশকে আরও সম্পৃক্ত করবে বলে আমি মনে করি।

রক্তদাতাকে ডোনার কার্ড বুঝিয়ে দিচ্ছেন মেলায় পুলিশ ব্লাড ব্যাংক ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই এ কে এম সিদ্দিকুল ইসলাম

 রক্ত সংগ্রহ করতে মেলায় দয়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ব্লাড ব্যাংক ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই এ কে এম সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করার জন্য এই রক্তদান ক্যাম্পের আয়োজন। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সাড়াও পাচ্ছি ভালো। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ হচ্ছে। উৎসাহীরা এসে খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার আমাদের ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দেয়ার কথা জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, রক্ত দেয়ার মাধ্যমে রক্তদাতা যেমন একজনের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করছেন, একইসঙ্গে পুলিশের সঙ্গেও জনগণের নিবিড় যোগাযোগ হচ্ছে, পরিচয় হচ্ছে। রক্তাদাতার দেয়া রক্ত আমাদের নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করে জীবনঘাতি পাঁচটি রোগ আছে কি-না সে রিপোর্ট তাদেরকে দিচ্ছি।

কেউ চাইলে এ রিপোর্ট সরাসরি এসে নিতে পারবেন। আমরা মোবাইল, ইমেইলের মাধ্যমেও তাদের রিপোর্ট জানিয়ে দিচ্ছি বলে জানান সিদ্দিকুল।

রক্তদানে উৎসাহ যোগাতে ব্যস্ত কর্মীরা

ক্যাম্পে রক্তদাতা আরও কয়েকজন জানান, মেলায় রক্তদান করলে সৌজন্য উপহার হিসেবে পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের লোগো, একটি করে ক্যাপ ও টিশার্ট দেয়া হচ্ছে প্রত্যেককে। দেয়া হচ্ছে ডোনার কার্ড। যা দেখিয়ে প্রয়োজনে রক্ত নেয়া যাবে নিজের জন্য। পুলিশের লোগো থাকা এসব উপহারকে ভীষণ গুরত্ব দিচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে যেকোনো সময়ে গিয়ে রক্তদান করা যায়। পরবর্তীতে তার প্রয়োজনে সংগ্রহও করতে পারবেন।

মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলেছেন, এমন উদ্যোগ পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ককে আরও গভির করবে। অপরাধ ও আইন বিষয়ের বাইরেও একটি সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

সোনালীনিউজ/তালেব

Wordbridge School
Link copied!