• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জরিমানাও দেবে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি!


টাঙ্গাইাল প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭, ০৭:০০ পিএম
জরিমানাও দেবে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি!

ঢাকা: হতদরিদ্র ভ্যান চালকের মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেম হয় রেজাউল করিমের। গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে রেজাউল করিম মোবাইলে মেয়েটিকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে। সে জানায় সকালে সে চাকরিতে যোগ দিতে ঢাকায় যাবে।

মেয়েটি বের হলে তাকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ধর্ষককে আটক করে। ১৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষণকারীর সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে ও তার পরিবারকে যৌতুক হিসাবে আড়াই লাখ টাকা ধার্য করে রায় দেন।

এমন ঘটনাই ঘটল টাঙ্গাইালের ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের ধুবলিয়া গ্রামে। মেয়েটির পিতা হতদরিদ্র ভ্যান চালক। ধর্ষক একই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে রেজাউল করিমের। 

এ ঘটনায় রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করছেন ওই শিক্ষার্থীর পিতা। তিনি তিন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সালিশ করে ধর্ষণকারীর সঙ্গে তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া ও ধর্ষিতাকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করার মাধ্যমে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন।

এদিকে চেয়ারম্যানগণসহ আসামীপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র পরিবারটি।

মেয়েটির পরিবার জানায়, ১৬ সেপ্টেম্বর গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির ও ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ফলদা ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে গাবসার ইউপি চেয়ারম্যান মনির ও লোকেড়পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ধর্ষণকারীর সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে ও তার পরিবারকে যৌতুক হিসাবে আড়াই লাখ টাকা ধার্য করে রায় দেন।

ধর্ষিতার পরিবার দরিদ্র ও তাদের বিরুদ্ধে উল্টো রায় দেয়ায় তারা সালিশ বর্জন করে। এতে ওই পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরণের হুমকি দিলে রোববার তারা মামলা দায়ের করেন।

প্রভাবশালী মহল এ ঘটনায় জড়িত থাকায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মেয়েটির স্বজনরা। এছাড়া ধর্ষণকারী ও সালিশকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন মেয়েটির বাবা।

এদিকে সালিশ ও জুড়ি বোর্ডের দেয়া রায়ে ক্রটির কথা স্বীকার করে পরিবারটিকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন ফলদা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম তালুকদার।

ভূঞাপুর থানার ওসি একেএম কাউসার চৌধুরী জানিয়েছেন, এ জাতীয় ঘটনায় সালিশি আয়োজন দণ্ডনীয় অপরাধ। অপরাধ প্রমানিত হলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!