• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জরিমানার টাকা পাচ্ছে না বাংলাদেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৭, ২০১৬, ০১:৫১ পিএম
জরিমানার টাকা পাচ্ছে না বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ আটকাতে ব্যর্থতার দায়ে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংককে করা জরিমানার ২ কোটি ১০ লাখ ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক পাবে না। তবে এ জরিমানার কারণে অন্য দিক থেকে লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। চুরির ঘটনায় আরসিবিসির দায় প্রমাণিত হওয়ায় এখন পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক চুরি হওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবে।

আরসিবিসিকে জরিমানার খবর জানার পর অনেকের ধারণা এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত পাবে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জরিমানার অর্থ জমা হবে দেশটির সরকারি হিসাবে। চুরির অর্থ উদ্ধারের সঙ্গে একে মেলানো হবে না। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের স্টপ পেমেন্ট পাওয়ার পরও ব্যাংকিং রীতিনীতি ভঙ্গ করে অর্থ পরিশোধ করায় এ জরিমানা করেছে সেদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপিনাস (বিএসপি)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান বলেন, স্বাভাবিক নিয়মে এক দেশের জরিমানার অর্থ অন্য দেশকে দেওয়া হয় না। এ ধরনের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ জরিমানার ফলে দু'টি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে। প্রথমত, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের পুরোটাই আরসিবিসিতে গেছে। দ্বিতীয়ত, পরিশোধ করার ক্ষেত্রে আরসিবিসি যথাযথ নিয়ম পরিপালন করেনি। এতে করে পুরো অর্থ ফেরত পেতে দেশটির কাছে বাংলাদেশের দাবি জোরালো হবে।

ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গোমেজ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া অর্থ পরিশোধে এতদিন নিজেদের দায় অস্বীকার করে আসছিল আরসিবিসি। সিনেটের শুনানিতেও আরসিবিসি বলেছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো 'স্টপ পেমেন্ট অর্ডার' যথাযথ না থাকায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকই দায়ী। তবে বিএসপির জরিমানার ফলে এখন আরসিবিসির দায় প্রমাণিত হয়েছে। দেশটির দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে বাংলাদেশকে অর্থ ফেরত দেওয়ার পক্ষে আবার কথা উঠেছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টও পুরো অর্থ ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি জানান, পুরো অর্থ উদ্ধারে শিগগিরই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে মামলা করে, নাকি অন্য কোনো পন্থায় অর্থ উদ্ধার হবে সেটি এখন পর্যালোচনা চলছে। পুরো বিষয়ে এরই মধ্যে ফিলিপাইনে অবস্থানরত বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসিসহ অন্য প্রতিনিধিরা দেশটির আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ভুয়া পেমেন্ট অর্ডারের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর হয় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্টে। বাকি ২ কোটি ডলার শ্রীলংকায় নেওয়া হলেও নামের বানান ভুলের কারণে শেষ পর্যন্ত তা ছাড় হয়নি। এখন ফিলিপাইন থেকে অর্থ ফেরত পাওয়ার জোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নানা তৎপরতায় ইতিমধ্যে দেশটির ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং দেড় কোটি ডলার ফেরত দিয়েছেন। এ অর্থ শিগগিরই ফেরত আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!