• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জল-পাথরের স্বর্গ বিছানাকান্দি


ইতিহাস ঐহিত্য ডেস্ক জানুয়ারি ১৩, ২০১৭, ০৬:১৭ পিএম
জল-পাথরের স্বর্গ বিছানাকান্দি

ঢাকা: প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এখানে। সৌন্দর্যের আবেশে যেন বুজে আসে দুচোখ। স্বচ্ছ পানিরধারা। নীল আকাশ নিচে থরে থরে সাজানো পাথর। দূরে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড়ের হাতছানি। এসব কিছুই ছবির মতো সাজানো অপরূপ বিছানাকান্দিতে। তাই একে বলা হয় সিলেটের স্বর্গ।

সীমান্তের ওপার থেকে বয়ে আসা স্বচ্ছ পানিরধারা আর পাথরের মায়াজালে যেখানে পর্যটকরা হারিয়ে যায় নিমিষেই। স্বচ্ছ স্রোতধারায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারা যায় অন্য এক রাজ্য। যেখানে মেঘ, পাহাড় আর পানিরধারার মিতালী পর্যটকদের আপন করে নেয় গভীর মমতায়।

তিলোত্তমা রাজধানী কিংবা ইটপাথরের নগরে হাঁপিয়ে ওঠা সীমাহনি ব্যস্ততা থেকে একটুখানি অবসর নিতেই দলে দলে পর্যটকরা ছুটে যায় বিছানাকান্দি। 

শুকনা মৌসুমে

যাত্রার আনন্দ
সদলবলে সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারেন। ঢাকা থেকে বাসযোগে যেতে পারেন সিলেটে। এরপর হোটেলে বিশ্রাম শেষে মূল গন্তব্যের পথে। সিলেট শহরের বিমানবন্দর রোড ধরে বিছানাকান্দির পথ। দু'পাশে সবুজ চা বাগান। অবারিত সবুজ পেছনে ফেলে যেতে পারেন গন্তব্যের দিকে। এই পথ ধরে যেতে যেতে মনে হতে পারে পুরো পৃথিবীটাই যেন সবুজের রাজ্য। এছাড়াও আঁকা বাঁকা পাহাড়ি উঁচুনিচু পথটাও বেশ শিহরিত করে তুলবে। জলপাথরের ভূমি বিছনাকান্দিতে পৌছে দেখবেন দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত শুধু পাথর আর পাহাড়।

অনাবিল আনন্দে জলপাথরের বিছানায় শুয়ে বসে ছবি তোলা, গোসল আর হৈ-হুল্লোড়ে সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলার অবস্থা হবে। বিছানাকান্দির পর্ব শেষে পরদিন যেতে পারেন পাংথুমাই ঝরণা। পাহাড় থেকে নেমে আসা অঝোর ধারায় নেমে আসা পানির শব্দে অনাবিল এক পরিবেশ। ঝরণার পানিতে স্নান করা, ছবি তোলা তো আছেই।

এরপর আপনার গন্তব্য হতে পারে রাতারগুলের পথে। পানি আর উদ্ভিদে ঘেরা বাংলার আমাজন বন। রোদ আর পানির খেলা চারপাশে। এখানকার সবুজের আহাজারি দেখতে নৌকা নিয়ে ভাসতে পারেন। ভাসতে ভাসতে যেতে যেতে পারেন ঠিকানাহীন পথে। 

আকাশের নীল জলে

যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সিলেটে ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। সিলেট শহর হতে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি গ্রাম। সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেখানে প্রতি সিএনজিতে চারজন করে নেয়া হয় হাদার বাজার পর্যন্ত। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। তবে শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজি নিলে সহজে এবং কম খরচে বিছানাকান্দি যাওয়া যায়। বাজারের পাশেই খেয়াঘাট। ঘাট থেকে নৌকা রিজার্ভ করে যাওয়া যায় বিছানাকান্দি। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার নজির কমবেশি চোখে পড়বে। তাই আগে থেকেই এখানকার ভাড়া জেনে নিয়ে যেতে পারেন। 
নৌকায় যেতে যেতে দেখতে পাবেন দু'পাশে সবুজ গ্রামের প্রতিচ্ছবি। এর সঙ্গে দূরে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো মিলেমিশে যেন একাকার। মেঘ-পাহাড়ের মিতালী দেখে অবাক হবেন যে কেউই। মনে হতে পারে কল্পনার মানসপটে আঁকা ছবি। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ২০ মিনিট।

রাতারগুল

কোথায় থাকবেন
পর্যটনকে ঘিরে সিলেট শহরে গড়ে উঠেছে অনেক উন্নতমানের হোটেল। বিছানাকান্দিতে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায় সিলেট শহর থেকে। তাই সিলেট শহরেই থাকতে পারেন। এখানকার অভিজাত হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। নিরাপত্তাও ভালো আছে হোটেলগুলোতে। দরগা গেটে আরও কয়েকটি ভালো হোটেল রয়েছে। এছাড়া নলজুড়ি উপজেলা সরকারি ডাকবাংলোতেও রাত কাটাতে পারেন। এ জন্য পূর্ব অনুমতি থাকতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রুমপ্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা। আর সাধারণের জন্য ১৫০০ টাকা।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!