• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জলদস্যু ‘খোকা বাহিনী’র আত্মসমর্পণ


বরিশাল প্রতিনিধি নভেম্বর ২৮, ২০১৬, ০২:১২ পিএম
জলদস্যু ‘খোকা বাহিনী’র আত্মসমর্পণ

জলদস্যু মজনু বাহিনী, ইলিয়াস বাহিনী ও মাস্টার বাহিনীর পর এবার অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ সুন্দরবনে ‘খোকা বাহিনী’ নামে আরও এক দস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকালে বরিশাল র‌্যাব-৮ সদরদপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন এই বাহিনীর ১২ জন সদস্য। তারা ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজারেরও বেশি গোলাবারুদ জমা দেন।

আত্মসমর্পণকারীদেরকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরা যেন সমাজের সম্পদ হতে পারেন, সে জন্য তাদেরকে সাহায্য করা হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন আয়বর্ধক কাজে নিয়োজিত করার পাশাপাশি বিদেশে শ্রমিক হিসেবে পাঠানোর উদ্যোগও নেওয়া হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নির্দেশনা দিয়েছেন।’

এখনও যেসব দস্যু বাহিনী ডাকাতি, অপহরণ, লুটপাট চালাচ্ছেন তাদেরকে হুঁশিয়ারিও দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘এখনও সময় আছে, আপনারা আত্মসমর্পণ করুন। আপনাদের হাতে যেসব অস্ত্র আছে, এগুলো দিয়ে আমাদের সঙ্গে টিকতে পারবেন না। এসব গাদা বন্দুক দিয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আপনারা কিছুই করতে পারবেন না।’

জলদস্যু ও বনদস্যুদেরকে বাইরে থেকে যারা সাহায্য সহযোগিতা করছেন, তাদের পরিণতিও বনদস্যুদের মতো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই এদেরকে কেউ বাইরে থেকে অর্থ দেন, অস্ত্র দেন, সহায়তা দেন। যারা সহযোগিতা করেন, যারা মদদ দেন, যারা অস্ত্রও দেন, তাদেরকেও চিহ্নিত করছি, তাদেরকেও উৎখাত করবো।

মন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনকে আমরা বিনষ্ট হতে দেবো না, সুন্দরবনেই পরিচিতি হবে বাংলাদেশ। সুন্দরবনকে জনদস্যু, বনদস্যুদের অভয়ারণ্য হতে দেবো না আমরা।’যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তারা যদি কেউ মানুষ হত্যা না করে থাকেন, যদি সুনির্দিষ্ট মামলা না থাকে, তাহলে সরকার তাদের মামলা নিষ্পত্তিতে সহযোগিতা করবে জানান মন্ত্রী।

আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের পুনর্বাসনের জন্য প্রকল্প হাতে র‌্যাব মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘যারা ফিরে এসেছেন, তাদেরকে অভয় দিতে চাই, আইনি প্রক্রিয়ায় যথাযোগ্য পুনর্বাসন করবো।’

এই অনুষ্ঠানের আগে সুন্দরবন থেকে দস্যুরা র‌্যাবের হেফাজতে যাওয়ার সময় দস্যুবাহিনীর প্রধান খোকাবাবু বলেন, ‘বর্তমান সরকার যে সুযোগ-সুবিধা দিছে, আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাই।’

এর আগে গত ৩১ মে ২০১৬ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ দস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’র প্রধানসহ ১০ সদস্য তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। এরপর ১৫ জুলাই শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন সুন্দরবনের দস্যুদল ‘মজনু বাহিনী’ ও ‘ইলিয়াস বাহিনী’র ১১ সদস্য। এরপর ২০ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করে সুন্দরবনকেন্দ্রিক জলদস্যু দল ‘সাগর বাহিনী’।

এ নিয়ে চলতি বছর সুন্দরবনের মোট সাতটি দস্যু বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করলো। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দস্যু জীবন ছেড়েছেন ৬০ জন। অস্ত্র জমা পড়েছে ১৩৯টি। গুলি জমা পড়েছে নয় হাজারেরও বেশি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!