• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জলাবদ্ধতায় নাকাল কয়েক লাখ মানুষ


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মে ২৫, ২০১৮, ০৫:২১ পিএম
জলাবদ্ধতায় নাকাল কয়েক লাখ মানুষ

নারায়ণগঞ্জ : টানা বৃষ্টিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের ভেতরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা ও এর আশপাশ এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও শিল্প কারখানা। দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। সড়কের কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমরসমান পানি।

গত মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বোরো ধান চাষের জন্য ১৯৬৫ সালে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় ডিএনডি বাঁধ। ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডিএনডি বাঁধের ভেতর ৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০ লাখ লোকের বসবাস। আশির দশকের পর থেকে লোকজন ডিএনডি বাঁধের ভেতর জমি কিনে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, ইটভাঁটা, ছোটবড় শিল্প কারখানা গড়ে তোলে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় বাঁধের অভ্যন্তরের খাল দখল ও ভরাট করে দোকানপাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে ওঠে। এতে কয়েক বছর ধরে সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা।  

এ অবস্থায় গত বছরের ৯ আগস্ট একনেকের সভায় ডিএনডি সেচ প্রকল্প এলাকায় নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ডিএনডি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (ফেজ-২)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ডিসেম্বর থেকে।

ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল মাশফিক আলম ভূইয়া জানান, ডিএনডি এলাকার পানি নিষ্কাশনের খালগুলো ম্যাপে থাকলেও বাস্তবে অনেক খাল দখল হয়ে গেছে। কোথাও বাড়ি, কোথাও কলকারখানা আবার কোথাও পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা উচ্ছেদ করতে গেলে কিছু লোক কাগজপত্র নিয়ে আসছে। যদি আমাদের কাছে এ ধরনের কেস না আসে তাহলে আমাদের কাজের গতি আরো তিন গুণ বেড়ে যাবে।

বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে ডিএনডির অনেক স্থানেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হয়তো এ বছর সম্পূর্ণ কিছু করতে পারব না। তবে আমরা চাচ্ছি খালের নেটওয়ার্কগুলো খুলে দিতে, যাতে করে পানি পাম্প হাউজ পর্যন্ত যেতে পারে। আমাদের প্রকল্প চলাকালে জনগণকে হয়তো কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তবে প্রকল্প শেষ হলে এসব সমস্যা আর থাকবে না।  

ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকার গৃহবধূ মুন্নি জানান, বৃষ্টির কারণে এলাকার সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় রিকশাও ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। পিঠালীপুল এলাকার আলাউদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘আমাদের পানির মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। ঘরের ভেতরে মাচা বেঁধেও রক্ষা হচ্ছে না। এভাবে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।’  

চাঁদমারী এলাকার হোসাইন মুহাম্মদ বলেন, ‘ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে শুনেছি। কিন্তু এবারো আমাদের পানিতে ভাসতে হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনার সব পানি একত্রে মিশে গেছে। বাথরুমগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। রান্নাঘরের গ্যাসের চুলাও পানির নিচে। রান্না করা যাচ্ছে না।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!