• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে গিয়ে কী লাভ হচ্ছে বিএনপির


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২১, ২০১৮, ১১:১০ এএম
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে গিয়ে কী লাভ হচ্ছে বিএনপির

ঢাকা : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি বেকায়দায় পড়ে যায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির কাছে বার বার ধরাশয়ী এই দলটি সম্প্রতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে।

বিরোধীদল বিএনপির নেতারা বলেছেন, দেশের শিক্ষিত সমাজের মাঝে বিএনপির ভাবমূর্তি বা গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর তাগিদ থেকে ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নামের জোট গঠন করে তারা মাঠে নেমেছেন।

এই নতুন জোটে যোগ দেওয়ার কারণে দলটির নেতা কর্মীদের মধ্যেও হতাশা কেটেছে বলে বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জোটের মাধ্যমে দীর্ঘ সময় পর বিএনপি ২০ দলীয় জোটের বাইরে অন্য দলকে সাথে পেয়েছে।

২০১৪ সালের ৫ইজানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের তখনকার সেই আন্দোলন সহিংস রূপ নিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি বিএনপির ভেতরে যেমন হতাশা তৈরি করেছিল,তেমনি দলটি দেশে ও দেশের বাইরে ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছিল।

বিএনপির অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পর্ক নিয়েও দলটিকে বিভিন্ন সময় সমালোচনর মুখে পড়তে হয়েছে। দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে রয়েছেন। দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানও বিভিন্ন মামলার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না। দলটির নেতাদের অনেকে মনে করেন, দেশের শিক্ষিত সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাদের দলের ইমেজ সঙ্কট কাটাতে নতুন জোট বড় সহায়ক হবে।

জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বিএনপি তো সেটা করতে পরেই। প্রত্যেকে তার ইমেজ বাড়ানো বা ইমেজ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে পরিবেশটা এমন হয়েছে যে, সরকার তার সমস্ত বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। আমার মনে হয়, বিএনপির ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়টা যদি হয়ও, সেটা হবে সরকারের ব্যর্থতা এবং একনায়কতান্ত্রিক আচরণের কারণে।

ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের জোট জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করতে চাইছে। প্রথমেই তারা সিলেটে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সমাবেশের ব্যাপারে এখনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।

নতুন জোট দু'দিন আগে ঢাকায় বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করে তাদের দাবি এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করেছে। এনিয়ে সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীদের অনেকে নতুন জোটের সমালোচনা করেছেন।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, নতুন জোটের মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীরাও দীর্ঘ সময়ের হতাশা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বলে তারা মনে করছেন।

"ভাবমূর্তি বাড়ানোটা আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নয়। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য জোট করেছি। কূটনীতিকদের কাছে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং দাবি তুলে ধরেছি," বলেন তিনি।

২০দলীয় জোটের বাইরে ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে বিএনপি এই ইঙ্গিতও দিচ্ছে যে, তারা এবার নির্বাচনকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিতে চান না। সে কারণেও ভাবমূর্তির সংকট কাটিয়ে ওঠার বিষয়কে দলটি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাসরিন সুলতানা বলছিলেন, নতুন জোটের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনই বিএনপির কৌশল হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশে নির্বাচনের হিসাব নিকাশের প্রেক্ষাপটে জোট গঠনের একটা প্রবণতা দেখা যায়। তো সেই ক্ষেত্রে এটাও বিএনপির একটা নতুন কৌশল।

তবে শেষ পর্যন্ত এই জোটের কারণে কে কতটা লাভবান হবে, সেই হিসাব নিকাশের সময় এখনও অনেক বাকি বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!