• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে ৬ শিক্ষককে বহিষ্কারের দায় অস্বীকার সভাপতির


রাহুল এম ইউসুফ, জাবি ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮, ০৮:৪৮ পিএম
জাবিতে ৬ শিক্ষককে বহিষ্কারের দায় অস্বীকার সভাপতির

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৬ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞাপ্তির মাধ্যমে তাদের বহিষ্কার সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু বহিষ্কারের নির্দেশ জারিকৃত ওই বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের কারো স্বাক্ষর ছিল না।

বিষয়টি নিশ্চিত হতে সংগঠনের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক আবুল হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বহিষ্কার সিদ্ধান্তটা সংগঠনিক।’ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর না থাকার বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি লেখার সময় আমি উপস্থিত না থাকায় আমি স্বাক্ষর করিনি। যেহেতু প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না সেহেতু বহিষ্কারের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।’ তিনি এই প্রতিনিধিকে সংবাদে তার নাম ব্যবহার করতে নিষেধও করেন।
 
বিজ্ঞাপ্তিতে উল্লেখিত বহিষ্কৃত ৬ শিক্ষক হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. নূরুল আলম (সাবেক সভাপতি), নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক  রাশেদা আখতার, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক বশির আহমেদ, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম এবং আইন ও বিচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস।

এর আগে একই কারণে সংগঠন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

তবে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন জানান, ‘সংগঠনের স্বার্থ, ভাবমূতি ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা ও সংগঠনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ওই ৬ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ 

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫ দিন অতিবাহিত হলেও ৬জনের কেউই শোকজের জবাব দেননি। তাই গতকাল রাতে সংগঠনের কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে সংগঠনটির নেতৃত্বে থাকা সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষণা দিয়ে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাখ্যান করেন সংঠগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ। 

তিনি বলেন, যেহেতু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের দায়িত্বে ডেপুটেশনে রয়েছেন তাই নৈতিক ও রীতি অনুযায়ী তারা কোন রাজনৈতিক সংঠনের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তাছাড়া সংগঠনের অনুমতি ছাড়া ‘শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা যাবে না’ সংগঠনের গঠনতন্ত্রে বা শৃঙ্খলা বিধিতে এমন কোন নিয়ম উল্লেখ নেই। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নাম নিয়ে একটি মহল শিক্ষক সমাজের নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার পায়তারা করছে।’ এছাড়া ‘তাদের মতের বাহিরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা যাবে না’ এমন সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের পরিপন্থি বলেও উল্লেখ করেন অধ্যাপক বশির আহমেদ।  

বহিষ্কারের বিষয়ে জানাতে চাইলে সংগঠনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, আমরা সরকারের কাজে সহযোগিতা ও ভিসি অধ্যাপক ফারজানাকে সমর্থন করায় আমাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম ২য় মেয়াদে উপাচার্যের দাযিত্ব পেয়েছেন। আর এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের দাবিতে টানা আন্দোলন করে যাচ্ছে। আর তাদের আন্দোলনে অংশ গ্রহণ না করা ও উপাচার্যকে সহযোগীতা ও সমর্থন দেওয়ায় ওই ৬ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বহিষ্কৃত শিক্ষকরা। 

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!