• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
নেপথ্যে শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য

জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ফলাফলে অনিয়ম


শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন, জাবি সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮, ০৬:২৬ পিএম
জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ফলাফলে অনিয়ম

জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ২০১৫-২০১৬  শিক্ষাবর্ষের ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, এই বছরের ১৪ জানুয়ারী স্নাতকোত্তর শ্রেণির নন থিসিস গ্রুপের ফলাফল ও ২৬ আগস্ট থিসিস গ্রুপের ফলাফল প্রকাশিত হয়। যেখানে শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) পর্বের ফলাফলের ব্যাপক ব্যবধান করা হয়েছে। স্নাতক পর্বে প্রথম স্থান অধিকার করা তোফায়েল আহমেদ সিজিপিএ ৩.৮০ ফলাফল করলেও স্নাতকোত্তরে পেয়েছেন সিজিপিএ মাত্র ৩.৪৫।

এছাড়া বাকিদের সিজিপিএ আরও কম। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন শিক্ষক পদে আবেদন  করতে না পারার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফল বিপর্যয় করানো হয়।

একজন শিক্ষার্থী জানান, ‘স্নাতক পর্বে প্রথম স্থান অধিকারী ও শেষ স্থান অধিকারী সমান নাম্বার পেয়েছে স্নাতকোত্তর পর্বে। অথচ প্রথম জনের টিউটেরিয়াল মার্ক ১৪.৫ থাকলেও শেষ জনের টিউটেরিয়াল মার্ক ছিল শূন্য। এভাবে ফল অনিয়মের মাধ্যমে আমাদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।  

শিক্ষার্থীরা প্রকাশিত ফলাফল পুর্নমূল্যায়নের জন্য বিভাগীয় সভাপতি বরাবর আবেদন করলে তিনি তা গ্রহণ না করে ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য কোর্স শিক্ষকদের দায়ী করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে দেখা করে ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষক নিয়োগ,পুনমূল্যায়নের সুযোগ ও নির্ধারিত ৭৫ দিনে ফল প্রকাশের দাবি জানান। সাক্ষাতে উপাচার্য ড.ফারজানা ইসলাম এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়,জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ কে কেন্দ্র করে প্রায়ই ফল অনিয়মের অভিযোগ উঠে। গতবছর নানা অজুহাতে অপেক্ষাকৃত মেধাবী ও থিসিস গ্রুপের ভাইভা ও স্নাতকোত্তর পর্বের ফলাফল আটকিয়ে রেখে নন থিসিস গ্রুপের রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল নন থিসিসের অপেক্ষাকৃত কম ফল করা উম্মে পারভিনকে  শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া ।
 
একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, কৃষকলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার ছেলে মোস্তাকিম বিন মোতাহার (আকাশ) কে অস্থায়ী থেকে স্থায়ী প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু আকাশের থিসিস গ্রুপের সাক্ষৎকারের সময় নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠে বিভাগীয় সভাপতি ড. খালিদ কুদ্দুসের বিরুদ্ধে।

আকাশকে সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় কোনো এক্সটার্নাল রাখা হয় নি এবং সাক্ষাৎকার বোর্ডের অন্যতম সদস্য সহযোগী অধ্যাপক নুসরাত জাহানের অগোচরেই আকাশের সাক্ষাৎকার শেষ করেন অধ্যাপক খালিদ কুদ্দুস। তাছাড়া মোস্তাকিম বিন মোতাহার (আকাশ) স্নাতক পর্বে ১৪তম অবস্থানকারী করলেও স্নাতকত্তোর পর্বে ১ম স্থান অধিকার করে।

অভিযোগ আছে ড.খালিদ কুদ্দুস নিজেকে আওয়ামী লীগ বলে দাবি করেন। কিন্তু তার ভগ্নিপতি  (বোনের জামাই) এ কে এম ওয়াহিদুজুজ্জামান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পুত্রকে সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে সরকারী চাকুরিচ্যুত হন।

এছাড়া তিনি যেসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে শিক্ষক নিয়োগের সময় টাকা নিতে পারবে বা নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেই সকল শিক্ষার্থীদের তিনি রেজাল্ট ভাল করিয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগের এক কর্মচারী নিয়োগের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যামে প্রকাশ হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি ড.খালিদ কুদ্দুস বলেন,‘শিক্ষার্থীরা আমার কাছে একটা আবেদন নিয়ে এসেছিল কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে না থাকার কারণে আমি এই অভিযোগ রাখতে পারিনি।’ পূর্ববর্তী  ফলাফল অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!