• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাবির ভূগোল বিভাগের শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন


জাবি প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৮, ০৭:৩৬ পিএম
জাবির ভূগোল বিভাগের শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে বিভাগীয় একাডেমিক মিটিং না ডাকার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষকরা। দীর্ঘ ছুটির পর গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সব বিভাগে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা চললেও নিয়মিত একাডেমিক মিটিং না ডাকার প্রতিবাদে কোনো ধরনের ক্লাস পরীক্ষা নিচ্ছেন না ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষকরা।

এদিকে গত ২৬ জুলাই থেকে আদালতের নির্দেশে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক মনজুরুল হাসান। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এখনো কোন ধরনের একাডেমিক মিটিং ডাকেননি।

জানা যায়, বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন যথাসময়ে পরীক্ষা না নেওয়া ও আরও বেশ কিছু অভিযোগে অধ্যাপক মনজুরুল হাসানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল জব্বার হাওলাদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে একটি স্ট্রারাকচারাল কমিটি ও গঠন করা হয়।

কিন্তু তদন্ত চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ৯ (১) এর ধারা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর অধ্যাপক মনজুরুলের বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব সময় আসে। তদন্ত চলামান থাকায় ওই সময় তাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়নি।  

অধ্যাপক মনজুরুল হাসান ‘তাকে কেন সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হবে না’ এই মর্মে ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর  হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বছরের ২২ মে হাইকোটের্র একটি দ্বৈত বেঞ্চ অধ্যাপক মো. মনজুরুল আহসানকে বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে তিনি বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন।

মূলত পূর্বের এই দ্বন্দ্বের কারণে বর্তমান সংকটের সৃষ্টি। কারণ অধ্যাপক মনজুরুল হাসান বিভাগের সভাপতি হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় কোনো শিক্ষকদের সঙ্গে সহযোগীতাপূর্ণ আচরণ করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষকরা। সেই জন্যই তিনি কোনো একাডেমিক মিটিং ডাকছেন না বলে জানান তারা।

তবে বিভাগের সভাপতি মনজুরুল হাসান বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা জিম্বি করে এই ধরনের রাজনীতি অনভিপ্রেত ও অশোভনীয়। বরং এই ধরনের আন্দোলন কোর্টের নিদের্শের লঙ্ঘন।’ একাডেমিক মিটিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মাত্র সভাপতি হয়েছি। সব কিছু বুঝে নিয়ে যৌক্তিক সময়ে একাডেমিক মিটিং ডাকব। কারণ বার্ষিক আর্থিক অডিট রিপোর্ট ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।  কিন্তু এই অজুহাতে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করতে পারে না।’

আন্দোলনকারী একজন শিক্ষক বলেন, বিভাগীয় সভাপতি কোনো ধরনের একাডেমিক মিটিং ডাকছেন না। সামনে ভর্তি পরীক্ষা আমরা একাডেমিক সিলেবাস ঠিক করতে হবে। নতুন কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটি শেষে বিভাগে যোগদান করেছেন তাদের কোর্স ডিস্ট্রিভিউশন হচ্ছে না। তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সহকর্মীসূলভ আচরণই করছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন শিক্ষক বলেন, বিভাগে চলমান জটিলতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তৈরি। তারা মনজুরুল হাসানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করলেও কমিটি কোনো কাজ করেনি। ফলে মামলায় তিনি জিতে যান। এখন কোর্টের নির্দেশে সভাপতি হয়ে বিভাগ নিজের মত চালাতে চাচ্ছেন। এইভাবে তো বিভাগ চলতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরূল আলম জানান, ‘ঘটনা আমি শুনেছি। তাদের আন্দোলনে যেন শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে আমি আগামীকাল উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!