• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত ছেড়ে বৃহত্তর ঐক্য করবে না বিএনপি


বিশেষ প্রতিবেদক অক্টোবর ৩, ২০১৮, ০৭:১৩ পিএম
জামায়াত ছেড়ে বৃহত্তর ঐক্য করবে না বিএনপি

ঢাকা : ড. কামাল হোসেন ও অধ্যাপক বদরুদ্দৌজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হলেও পরবর্তি কর্মসূচির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা বলছেন ড. কামাল হোসেন বিদেশে থেকে না ফেরা পর্যন্ত কোন সিদ্বান্ত নেয়া হবে না।

বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে জমায়েত হয় গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট ছাড়াও বিএনপি ও তাদের শরীক দলগুলো। সমাবেশে সরকারের নানান কর্মকান্ডের সমালোচনা করে কয়েকটি দাবি তুলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়।

তবে আলটিমেটাম শেষ হলেও এখন কী কর্মসূচি দেয়া হবে সে বিষয়ে কেউই কিছু জানেন না। এ বিষয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘এটা ছিলো ড. কামাল হোসেনের পার্টি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং তারা কীভাবে সংগঠিত করেছে আমি জানি না।’

নাগরিক ঐক্য এর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যৌথভাবে আগামী কর্মসূচি দেয়ার ব্যাপারে ঘোষণাটা দিয়েছিলো কিন্তু এটা ওনারা ওনাদের মত করে বলেছেন। এখন এটার জবাব ওনারা দিতে পারবেন, আমি পারবো না।’

গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও তার দলটির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বড়–য়া দু’জনই বাইরে আছেন। দলের আরেক নেতা জানান, এই দুই নেতা ফিরলেই আলোচনা করে সিদ্বান্ত নেয়া হবে।

গণফোরাম এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিউল্লাহ বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন ওনার শারীরিক চিকিৎসার জন্য গেছেন, উনি অবিলম্বে চলে আসবেন। আসলে আমরা আলাপ করে একটা মতৈক্যে পৌঁছবো। হয়তো একসঙ্গে, নয়তোবা আলাদা আলাদা করে বসবো। এই জন্য আমরা একটা লিয়াজোঁ কমিটি করবো।’

এদিকে, আগামী ৭ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় তাদের একটি মানববন্ধন কর্মসূচি রয়েছে। সে কর্মসূচি গণফোরামের না ঐক্য প্রক্রিয়ার তাও স্পষ্ট করা হয়নি।

জামায়াত ছেড়ে বৃহত্তর ঐক্য করবে না বিএনপি : নেতৃত্ব ও জামায়াত প্রশ্নে ছাড় দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য করবে না বিএনপি। যারা এই দুই বিষয়ে শর্ত আরোপ করছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির নেতারা। তবে ঐক্য না হলেও যুগপৎ আন্দোলনের কথা ভাবছে দলটি।

বৃহত্তর ঐক্যের জন্য ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে ১৫০ আসন এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গ ছাড়ার শর্ত ছিল যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম নেতাদের। এতে শুরুতেই হোঁচট খেলো ঐক্য প্রক্রিয়া। বিএনপি বলছে, শর্ত মেনে কারও সঙ্গে ঐক্য করবে না তারা।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডানে বামে কে কি কথা বলল তা আমরা শুনতে চাই না। জন-আকাঙ্খায় কারা থাকবে আর কারা থাকবেনা সে বিষয়ে যার যার সিদ্ধান্ত সে নেবে।’ আর বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, ‘যে আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা এত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি, এত মূল্য যে আমাদের দিতে হয়েছে! তাই আন্দোলনের পথে আমরা কি করবো- না করবো সেটা কারও নির্দেশে করবো না।’

গত রবিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকেও এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, বিএনপি এই অবস্থানে অনড় থাকলে বৃহত্তর ঐক্য সম্ভব নয় বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘কোনভাবেই শয়তানের সঙ্গে ঐক্য করতে আমরা রাজি নই। জাতীয় ঐক্যের নামে এ ঐক্য প্রক্রিয়াটা গড়ে উঠেছিল বা অনেকখানি এগিয়েছিলো। এটি মানুষের ব্যাপক আস্থাও অর্জন করতে পেরেছিল। আমি মনে করি এটা বিএনপির নেতারা বুঝেছেন। আজকে যদি তারা বলেন যে, সেটাও দরকার নেই, রাজপথে আমরা যুদ্ধ করবো। যদি শয়তানও আসে আসুক। শয়তানে আসক্ত এ লড়াইয়ে জেতা যাবে না।

ঐক্য না হলে কোন পথে হাঁটবে বিএনপি? এমন প্রশ্নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এটা একটা যুগপৎ আন্দোলন। কাজেই যে যার প্লাটফর্ম থেকে একই কর্মসূচি ঘোষণা করবে। একই লক্ষ্য অর্জন করার জন্য কাজ করবে। একটি রাজনৈতিক দল অন্য একটি রাজনৈতিক দলকে এ কথা বলতে পারে না যে, অমুকের সঙ্গে আপনি থাকতে পারবেন না।’

ঐক্যের জন্য বিএনপির ছাড় দেয়ার মানসিকতাকে কেউ দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবে বলেও জানান দলটির নেতারা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!