• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াতে শীর্ষ তিন নেতার পদ নিয়ে লুকোচুরি


সোনালী বিশেষ সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭, ০২:৫১ পিএম
জামায়াতে শীর্ষ তিন নেতার পদ নিয়ে লুকোচুরি

ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মাওলানা আবদুস সুবহান ও এটিএম আজহারুল ইসলামের পদ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে ক্রমাগত।

গত নভেম্বরে গঠিত নতুন কমিটিতে পদ রাখা হলেও চলতি বছরের মে মাসে তাদের দলীয় অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দলের নেতারা তাদের পদ নিয়ে নানান মতামত ব্যক্ত করেন। যদিও জামায়াতের দলীয় বিবৃতিতে তাদের কোনও পদ উল্লেখ করা হয়নি।

তবে সবশেষ ১৯ আগস্ট দলটির অফিসিয়াল বিবৃতিতে কারাগারে আটক তিন নেতার পদবি যুক্ত করে তাদেরকে মুক্তি দেয়ার দাবি তোলা হয়। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই ‘নায়েবে আমীর’ মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুস সুবহান, ‘নায়েবে আমীর’ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং ‘সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল’ এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানান। জামায়াত নেতার এ বিবৃতির পরই তিন নেতার সাংগঠনিক পদ নিয়ে আবারো আলোচনা ওঠে দলে।

গত কয়েকদিনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী শাখার দুই জন ও সিলেটের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তবে ঢাকার দুই নেতার মধ্যে আছে দুই মত। এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলেন, মাওলানা সুবহান, মাওলানা সাঈদী ও এটিএম আজহার তিনজনই দলে ছিলেন। তাদের কখনও বাদ দেয়া হয়নি। তারা সবসময়ই দলের অংশ। তাদের বাদ দেয়ার কোনো ঘটনা জানি না।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা দক্ষিণের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি জানতাম তারা দলীয় পদে নেই। তবে এখন কি হয়েছে তা জানি না। এর আগে দেশের একটি অনলাইন পত্রিকাকে হাবিবুর রহমান মাওলানা সাঈদীর প্রসঙ্গে বলেছিলেন, উনি তো জেলে আছেন, কিভাবে মনোনীত হবেন? এটিএম আজহার সাহেবও দলে নেই। ঢাকার ও বিভিন্ন জেলার নেতারা সাঈদী, সুবহান ও আজহারের দলীয় পদ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলেও রহস্যের জাল কিছুটা উন্মোচন করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় আরেক নেতা। দলটির সহযোগী একটি সংগঠনের শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম হচ্ছে কেউ যদি কারাগারে যায়। তাহলে তিনি আর দায়িত্বে থাকেন না। এটা স্বাভাবিক নিয়ম। জামায়াতের এই নেতা আরো বলেন, রাজনৈতিক দাবি-দাওয়া থাকলে তো পদবিতে থেকেই তা করতে হয়। (হেসে উঠে বললেন) না হলে এসবের কোনো মূল্য থাকে না। এটা টেকনিক্যাল বিষয়। কোনও পরিষ্কার জবাব থাকবে না।

গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ২০১৭-১৯ মেয়াদের জন্য ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটিতে (কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ) নায়েবে আমীর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার সঙ্গে আগের কমিটির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং মাওলানা আবদুস সুবহান নতুন কমিটিতেও ছিলেন।

নতুন হিসেবে চট্টগ্রাম জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা শামসুল ইসলাম, খুলনা মহানগরীর আমীর মিয়া গোলাম পরওয়ার ও রাজশাহীর অধ্যাপক আতাউর রহমান মনোনীত হয়েছিলেন কমিটিতে। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে দলটির আগামী দিনের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ নিয়ে শীর্ষনেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই আতাউর রহমানকে নায়েবে আমীরের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে বহাল আছে তার সদস্যপদ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য হিসেবেও আছেন তিনি। এ ঘটনাও জামায়াত প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।

গত নভেম্বরে গঠিত নতুন কমিটিতে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদে নতুন পাঁচ জন নিযুক্ত হন। তারা হচ্ছেন- দলীয় প্রধান নির্বাচন পরিচালক এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, ঢাকা মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা হামিদুর রহমান আযাদ ও অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদে পুরনোদের মধ্যে আছেন এটিএম আজহারুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!