• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিম্বাবুয়ের স্বপ্ন গুড়িয়ে ঐতিহাসিক জয় শ্রীলঙ্কার


ক্রীড়া ডেস্ক জুলাই ১৮, ২০১৭, ০৪:৫৪ পিএম
জিম্বাবুয়ের স্বপ্ন গুড়িয়ে ঐতিহাসিক জয় শ্রীলঙ্কার

ঢাকা: ক্ষয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা জিতবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর সেটি নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। তার উপর স্বাগতিকদের সামনে ৩৮৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। এই পাহাড় টপকাতে দরকার রেকর্ড। অবশেষে সেটিই করে দেখাল লঙ্কান সিংহরা। ঐতিহাসিক জয়ে অভিষেক হল অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালের। তবে এমন গৌরব মাখা জয়ে বিতর্ক হয়ে থাকল তৃতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিনের ভূমিকা!

৩৮৮ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে নেমে সোমবার চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে জড়ো করেছে ১৭০ রান। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) শেষ দিনে জিততে হলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ২১৮ রান। হাতে ৭ উইকেট। এত রান তাড়া করে কোনো দিন জিততে পারেনি শ্রীলঙ্কা। কলম্বো টেস্টে লঙ্কানদের প্রতিপক্ষ শুধু জিম্বাবুয়ে ছিল না; সেই সাথে আরেক প্রতিপক্ষ ছিল ইতিহাস আর রেকর্ড।

শেষ দিনে ৩ উইকেটে ১৭০ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন কুশল মেন্ডিস ও ম্যাথুজ। দলীয় ১৭৮ রানের মাথায় মেন্ডিসকে ক্যাচ আউটের শিকার বানিয়ে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন ক্রেমার। এরপর দলীয় ২০৩ রানের মাথায় ক্রেমারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ম্যাথুজ ফিরে গেলে জিম্বাবুয়ের জয় সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। শেষ ইনিংসে ক্ষণে ক্ষণে বদলায় ম্যাচের রঙ। কুশল মেন্ডিস এবং নিরোশান দিকভেলার গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আসেলা গুনারত্নে এবং কুশল পেরেরার লড়াকু ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।

এটি শ্রীলঙ্কার টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের নতুন রেকর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে ১৪০ বছরের ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে মাত্র চারটি। এর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৭ রান তাড়া করার রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের দখলে। ২০১৫ সালে পাল্লেকেলে টেস্টে ৩৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেট হারিয়েই ৩৮২ রানে পৌঁছে যায় মিসবাহ-উল-হকের দল। অন্যদিকে নিজেদের ইতিহাসে এর আগে সর্বোচ্চ ৩৫২ রান তাড়া করে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। এদিন সেই কীর্তিকে ছাপিয়ে গেল চান্দিমালের দল।

সবমিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার দিক থেকে শ্রীলঙ্কা পাঁচ নম্বরে ওঠে এলো। ২০০৩ সালে অ্যান্টিগুয়া টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটিই সবার ওপরে রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ৪১৪, ভারত ৪০৬, অস্ট্রেলিয়া ৪০৪ রান তাড়া করে জিতেছিল। শ্রীলঙ্কার নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর জয়ের দিনে ছোট্ট একটি রেকর্ড গড়েছে কলম্বো টেস্ট। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম চারটি ইনিংসই ৩০০ থেকে ৪০০'র মধ্যে ছিল।

শ্রীলঙ্কার ইতিহাস-গড়া জয়ের নায়ক গুনারত্নে এবং দিকভেলা। পার্শ্বনায়কের ভূমিকা পালন করেন কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা এবং দিমুথ করুনারত্নে। লঙ্কানদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দিকভেলা ৮১ এবং গুনারত্নে ৮০* রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। স্বাগতিকের রোমাঞ্চকর জয়ে ভূমিকা রাখতে করুনারত্নে ৪৯, মেন্ডিস ৬৬ এবং পেরেরা ২৯ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দেন। যদিও ৩৭ রানে অপরাজিত থাকা ডিকভেলা সিকান্দার রাজার বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন । রিপ্লেতে দেখা যায়, দাগের ওপরে ছিল ডিকভেলার পা। দাগের ভেতরে আনতে পারেননি। স্টাম্পিংয়ে ‘অন দ্য লাইন মানে’ পরিষ্কার আউট। কিন্তু ভারতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিন সবুজ বাতি জ্বালিয়ে দেন অবিশ্বাস্যভাবে।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের করা ৩৫৬ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৪৬ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ১০ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ৩৭৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে জিম্বাবুয়ে। ফলে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার সামনে ৩৮৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড়ায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!