• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন সবচেয়ে বেশি ফজিলতের দিন


ধর্মচিন্তা ডেস্ক আগস্ট ২৪, ২০১৭, ০১:২৯ পিএম
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন সবচেয়ে বেশি ফজিলতের দিন

ঢাকা : আজ পবিত্র জিলহজ মাসের ১ তারিখ। ইসলামী আরবী ক্যালেন্ডারের সর্বশেষ মাস হলো জিলহজ মাস। এ মাসেই হাজিগণ হজ আদায় করেন। এ মাসের ৮ তারিখকে ‘ইয়াওমুত তারবিয়া’ বা পানি পানের দিবস বলা হয়। এ দিবসেই হাজিগণ মক্কা থেকে মিনায় গমন করেন। পরদিন ৯ জিলহজ ইয়াওমু আরাফা বা আরাফাতের দিবস। এ দিবসে সকালে কিংবা এর পূর্বরাতে হাজিগণ মিনা থেকে আরাফাতের মাঠে গমন করেন এবং সারাদিন আরাফাতে অবস্থান করে আল্লাহর জিকির ও দুআয় রত থাকেন। রাতে তারা মুযদালিফায় ফিরে আসেন এবং পরদিন ভোরে ১০ জিলহজ মিনায় জামারাতে কাঁকর নিক্ষেপ, মাথা মুন্ডন, হজের পশু জবাই বা হাদয়ী ও কোরবানি আদায়, তাওয়াফ-সায়ী ইত্যাদি হজের আহকাম পালন করেন। পরবর্তী ২ বা ৩ দিন তারা মিনাতেই অবস্থান করেন।

যারা হজে গমন করেন না, তাদের জন্যও জিলহজ মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসের দশ তারিখে আমরা ঈদ-উল-আজহা বা কোরবানির ঈদ আদায় করি। এছাড়াও এ মাসের প্রথম দশটি দিন মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফজিলতের দিন, যে বিষয়ে আমাদের অনেকেই সচেতন নই। বিভিন্ন সহীহ হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়। সহীহ বুখারী অন্য গ্রন্থে সংকলিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : ‘জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনে নেক আমল করা আল্লাহর নিকট যত বেশি প্রিয় আর কোন দিনের আমল তার নিকট তত প্রিয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর পথে জিহাদও কি এ দশদিনের নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর নিকট প্রিয়তর নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর পথে জিহাদও প্রিয়তর নয়, তবে ওই ব্যক্তি ছাড়া, যে ব্যক্তি নিজের প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে গেল এবং কোন কিছুই আর ফিরে এলো না (সম্পদও শেষ হলো, সেও শহীদ হলো)।’ (বুখারী, আস-সহীহ ১/৩২৯ ; ইবন খুযাইমা,আস-সহীহ ৪/২৭৩)।

অন্য হাদিসে তিনি বলেন : দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি ফজিলতের দিন হলো জিলহজ মাসের প্রথম এ দশ দিন। হাইসামি, মাজমউয যাওয়াইদ ৩/২৫৩ যয়িফ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, এ দশ দিনের সিয়াম এক বৎসরের সিয়ামের তুল্য এবং প্রত্যেক রাতের নামায বা লাইলাতুল কাদ্রের নামাযের তুল্য। (তিরমিযী, আস-সুনান ৩/৩১৩)। অন্য একটি দুর্বল হাদিসে বলা হয়েছে, এ দশ দিনের নেক আমলের ৭০০ গুণ সাওয়াব প্রদান করা হয়। (বাইহাকী, শুআবুল ঈমান ৩/৩৫৬) অন্য একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেছেন, কথিত আছে যে, জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন এক হাজার দিনের সমান এবং বিশেষত আরাফার দিন ১০ হাজার দিনের সমান। (বাইহাকী, শুআবুল ঈমান ৩/৩৫৮)।

এভাবে আমরা দেখছি যে, জিলহজ মাসের এ দশটি দিন মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিনগুলো অবহেলায় নষ্ট করার চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। প্রত্যেক মুমিনের চেষ্টা করা দরকার এ সময় বেশি বেশি নেক আমল করার। সকল প্রকার ইবাদতই নেক আমল। ফরজ ইবাদত তো সঠিক সময়ে সঠিকভাবে করতেই হবে। ফরজের জন্য ফজিলতের সময় খোঁজা মুশকিল। এ জন্য নেক আমল বলতে সাধারণত সকল প্রকারের নফল আমলই বুঝানো হয়। জিকির, দুআ, ইসতিগফার, নফল নামাজ, নফল রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, সালাত, সালাম, দান, পরোপকার, মানুষকে সাহায্য করা, সৃষ্টির সেবা করা, অসুস্থ মানুষকে দেখতে যাওয়া, সত্য সাক্ষ্য দেয়া, মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা সবই নেক আমল। আমাদের সকলেরই উচিত এ দিনগুলোতে এ সকল নেক আমলের মধ্য থেকে যা কিছু সম্ভব বেশি বেশি পালন করা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!